Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লোমহর্ষক বর্ণনা ঘাতক সফিকের

বিশ্বনাথে দুই তরুণী হত্যাকাণ্ড

বিশ্বনাথ (সিলেট) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

সিলেটের বিশ্বনাথে অজ্ঞাতনামা দুই তরুণী হত্যার লোম হর্ষক বর্ণনা দিয়েছে ঘাতক সফিক। তার বাড়ি উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত ওয়াব উল্লার ছেলে। ২০১৭ সালের ২২ এপ্রিল রামপাশা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের পাঁকা রাস্তা থেকে অজ্ঞাতনামা এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের বুকের উপরে ব্যানেটি ব্যাগের ভেতর দু’টি ছবি পায় পুলিশ। এই ছবির সূত্র ধরে পুলিশ ইমরান ও লুৎফুর রহমান নামক দু’জনকে গ্রেফতার করে। এমরান ছিল সফিকের সম্পর্কে চাচাতো ভাই। এমরানের পরিবারের সাথে সফিকের জমি নিয়েও বিরোধ ছিল।

এ ঘটনার প্রায় ১৭ মাস পর গত ১০ সেপ্টেম্বর একই রাস্তা থেকে আরো এক অজ্ঞাতনামা তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ দু’টি ঘটনায় পূরো উপজেলায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ঘাতক সফিক রুমি আক্তার নামের এই মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে টাঙ্গাইলের কুমুদিনি হাসপাতাল থেকে তার বাড়িতে এনে ধর্ষণের পর হত্যা করে। পরে লাশটি তার ঘরের পেছনের রাস্তায় ফেলে তার কর্মস্থল টাঙ্গাইলের নাছির গ্লাস ফ্যাক্টরীতে চলে যায়। টাঙ্গাইলে গিয়ে তার কথিত স্ত্রী সোনালী আক্তার হিরাকে দিয়ে বিশ্বনাথ থানার ওসিকে ফোন করে এই এলাকার কয়েকজন যুবক হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত বলে জানায়। মোবাইলের কথা বার্তায় পুলিশের সন্দেহ হলে পুলিশ টাঙ্গাইল গিয়ে সফিক ও তার স্ত্রী সহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে বিশ্বনাথ থানায় নিয়ে আসে। তারপর সফিক রুমি আক্তারকে ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করে বলে স্বীকারোক্তি দেয়।

গ্রামের সহজ সরল যুবক সফিকের এমন ঘটনায় এলাকার লোকজন শঙ্কিত হয়ে পড়েন। সফিকের এমন ঘটনা প্রথমে কেউ বিশ্বাস করতে না পারলেও এখন সফিক এলাকার এক আতংক। তারপর পুলিশের প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদে সফিক প্রথম হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত মেয়েটির পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে সিলেট রেলষ্টেশন এলাকায় ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটি হোটেলে অভিযান চালালে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত কয়েকজন তরুণী দৌড়ে পালাতে থাকে। এ সময় এই তরুণীকে পেয়ে অর্থের প্রলোভন দিয়ে সফিক তার বাড়িতে নিয়ে আসে।

কিন্তু ধর্ষণের পর মেয়েটির কথামত ৩ হাজার টাকা না দিয়ে সফিক ও তার সহযোগী তাকে হত্যা করে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়। সফিকের খারাপ স্বভাবের কারণে তার এক চাচাতো ভাই মারপিট করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ দুটি হত্যাকাণ্ডে এমরান নামক তার চাচাতো ভাইকে ফাসানোর চেষ্টা করে। প্রথম হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ এমরানকে গ্রেফতার করে নির্যাতন চালায় এবং দীর্ঘদিন হাজতবাস করে জামিনে মুক্তি পায়। রুমি হত্যাকাণ্ডেরও এমরানকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে ঘাতক সফিক। নিজে দুটি মেয়েকে হত্যা করে অবশেষে স্ত্রীকে দিয়ে থানায় ফোন করে নিজে ফেঁসে গেল সফিক। কথায় আছে খুনের স্বাক্ষী বনে দেয়। অতি চালাকের গলায় দড়ি। পুলিশের ভাষ্যমতে সফিক ৮ টি বিবাহ করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যাকাণ্ড


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ