পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1719385556](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর গ্রিন লাইফ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সাবিরা রহমান লিপি হত্যাকাণ্ডের এক বছর পার হলে তদন্ত অন্ধকারে। কে খুনি, খুনের নেপথ্যের কারণ কী এখনও কোনো সুরাহা হয়নি। নানা প্রশ্নের ঘুরপাকে স্বামীকেই সন্দেহের তালিকায় শীর্ষে রেখেছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা। গত বছরের ৩১ মে কলাবাগানের প্রথম লেনের একটি ভবনে ভাড়া করা ফ্ল্যাট থেকে চিকিৎসক সাবিরার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় তার ভাই রেজাউল হক বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত থানা পুলিশ থেকে এর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), পরে ডিবি থেকে ন্যস্ত হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাতে।
তদন্ত সূত্র জানায়, ডা. সাবিরা হত্যায় ‘পারিবারিক দ্বন্দ্ব, আলাদা বাসা ভাড়া নেয়া, স্বামীর আগের দুই বিয়ের তথ্য গোপন এবং খুনের রাতে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কথা কাটাকাটি’সহ বেশকিছু তথ্য পেয়েছে পিবিআই। এছাড়া নিহত স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর লেখা তিন পৃষ্ঠার অভিযোগের ডায়েরিও উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে পারিবারিক কলহ ও দ্বন্দ্বের বিভিন্ন তথ্য পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। এসব তথ্যের ভিত্তিতে স্বামী এ কে এম সামছুদ্দিন আজাদকে (৬৫) হত্যায় জড়িত থাকার জোর সন্দেহ তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের। সর্বশেষ গত ২৬ এপ্রিল আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ওইদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই‘র পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। এজন্য ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শুভ্রা চক্রবর্তী আগামী ৭ জুন প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন। এ নিয়ে মামলাটিতে ৯ দফা প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেয়েছেন তদন্তকারী সংস্থা।
এ বিষয়ে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা জুয়েল মিঞা বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা বিষয়টি তদারকি করছেন। ইতোমধ্যেই আমরা তার স্বামীকে আটক করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। অনেক তথ্যও পাওয়া গেছে। কী কারণে ডা. সাবিরা খুন হয়েছেন, তার কারণ এখনো জানা যায়নি। আশা করছি, খুব শিগগিরই চাঞ্চল্যকর এ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারব।
মামলার বাদী রেজাউল হাসান মজুমদার বলেন, সাবিরার স্বামীকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পিবিআই। তবে তার স্বামীকে আমরা সন্দেহ করিনি। পিবিআই বিভিন্ন কারণে তাকে রিমান্ডে নিয়েছে। পিবিআই সবকিছু দেখভাল করছে। সাবিরার মা ও ছেলে বিচারের আশায় রয়েছে। আমরা সবাই বিচারের অপেক্ষায় আছি।
অন্যদিকে সাবিরার স্বামী এ কে এম সামছুদ্দিন আজাদের আইনজীবী ইনসান আলী বলেন, আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। ঘটনার সঙ্গে জড়িত এমন কোনো তথ্য-উপাত্ত পাইনি। তারপরও পুলিশ তাকে আটক করে রিমান্ডে নিয়েছে। তাকে আটক রাখা হয়েছে। আমরা একাধিকবার তার জামিন চেয়েও পাইনি। আশা করছি, তিনি ন্যায়বিচার পাবেন।
তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চিকিৎসক সাবিরা হত্যার ঘটনায় এর আগে অন্তত দুই ডজন পরিচিত বন্ধু, স্বজন, আত্মীয় ও বাসাটির বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তবে আমলযোগ্য কোনো তথ্য মেলেনি। মামলার বাদী রেজাউল হক ‘সাবলেট থাকা তরুণী হত্যায় জড়িত থাকতে পারেন’ বলে সন্দেহ পোষণ করলেও তাকেসহ হেফাজতে নেয়া সবাইকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চিকিৎসক সাবিরা যে হত্যাকাণ্ডের শিকার তা শতভাগ নিশ্চিত। আগে হত্যা, পরে আগুন দিয়ে আলামত নষ্টের অপচেষ্টাও স্পষ্ট। কিন্তু কে খুনি, কেনই বা খুন হতে হলো সাবিরাকে— এর উত্তর এখনও মেলেনি। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩০ মে রাজধানীর কলাবাগান প্রথম লেনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটের শোবার ঘর থেকে চিকিৎসক কাজী সাবিরা রহমান ওরফে লিপির রক্তাক্ত ও দগ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গলা কাটা, পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও পোড়া ছিল। ঘটনার একদিন পর ১ জুন কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা হয়। এরপর গত ১৯ এপ্রিল ডা. সাবিরার স্বামী এ কে এম সামছুদ্দিন আজাদকে শান্তিনগর এলাকা থেকে আটক করে পিবিআই। তার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ২৪ এপ্রিল তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।