নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কেটেছে সাকিবের অসহায় চারটি দিন। চোটে মাঝপথেই শেষ হয়েছে এশিয়া কাপ মিশন, আঙুলের অস্ত্রপচারের পর শুভ্র সাদা বিদানায় শুয়ে কেবিনের টিভিতে সাক্ষী হয়েছেন দলের আরেকটি স্বপ্নভঙ্গের বেদনার। ভেবেছেন, ইশ্, যদি ফাইনালটা খেলতে পারতাম! আঙুলের চোট এবং চোটগ্রস্ত জায়গায় সংক্রমণ সাকিবকে সেই সুযোগটা দেয়নি। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের মনটা ভার সেই থেকে। ভগ্ন হৃদয় নিয়ে যখন প্রহর গুণছেন বাড়ি ফেরার ঠিক সেই সময়ই এলো দুটি দুঃসংবাদ। প্রথমত, ছোট্ট এই চোটে প্রায় তিন মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে। শুধু চোটের কাছে নয়, সাকিব হেরেছেন আরও একটি জায়গায়। আইসিসি ওয়ানডে অলরাউন্ডারের র্যাঙ্কিংয়ে সাকিব হার মেনেছেন রশিদ খানের কাছে।
গতকাল আইসিসি প্রকাশিত অলরাউন্ডারদের নতুন র্যাঙ্কিংয়ে ৩৫৩ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানে রশিদ। ছয় ধাপ উত্তরণ ঘটেছে তাঁর। আফগানিস্তানের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসির ওয়ানডে অলরাউন্ডারদের র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান দখল করলেন রশিদ। ৩৪১ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে এক ধাপ নিচে নেমেছেন সাকিব। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে শীর্ষ অলরাউন্ডারের জায়গা হারালেও টেস্টে শীর্ষস্থানীয় অলরাউন্ডারের আসনটা সাকিব এখনো ধরে রেখেছেন।
দুবাই থেকে ঢাকায় ফেরার পর সাকিবের আঙুলের ব্যাথা বাড়ে। বেশ ফুলেও যায়। তাই জরুরিভিত্তিতে ডাক্তার দেখান। তার হাতের অবস্থা দেখে ডাক্তার সঙ্গে সঙ্গেই সার্জারি করার সিদ্ধান্ত নেন। সার্জারি করে আঙুলের ভেতরে জমে থাকা পুঁজ বের করেন। পুঁজ বের করার পর সাকিব ভালো বোধ করছেন। অবশ্য তাকে আরো একটি সার্জারি করাতে হবে। সেই সার্জারি করার জন্য কমপক্ষে তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। এরপর সেরে উঠতে লাগবে আরো ৮ সপ্তাহ। সব মিলিয়ে পরবর্তী তিন মাস সাকিব আল হাসান আর প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক ক্রিকেট খেলতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন সাকিব, ‘পুঁজ বের করার পর আমি ভালো বোধ করছি। কিন্তু ইনফেকশন পুরোপুরি না সারলে পরবর্তী সার্জারিটা করা যাবে না। সেক্ষেত্রে আমাকে আরো ২ থেকে ৩ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। সার্জারির পর সেরে উঠতে আরো আট সপ্তাহ সময় লাগবে। সব মিলিয়ে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে আমি আর খেলতে পারছি না।’
পুঁজ বের করার পর তিনি ভালো বোধ করেন। এরপর ৭২ ঘণ্টা তাকে পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখা হয়। গতকালই তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় ফিরেছেন।
সাকিবের আঙুলে যে সংক্রমণ হয়েছে সেটা বাংলাদেশ দলের ফিজিও তিহান চন্দ্রমোহন বুঝতে পারেননি। কিন্তু সাকিব বিষয়টি টের পেয়েছিলেন আরো ১৪-১৫ দিন আগেই। আরো কিছুদিন দেরি হলে সাকিবের বড় ধরনের সমস্যা হতে পারত। এমনকী এই হাত দিয়ে খেলা তো দূরের কথা কোনো কাজই করতে পারতেন না। অবশ্য এটার জন্য সাকিব ফিজিওকে পুরোপুরি দোষারোপ করতে রাজি নন, ‘আমার আাঙুলের এমন অবস্থা গেল ১৪-১৫ দিন ধরে। এখানে (হাসপাতালে) আসার পর ডাক্তার আমার আঙুল দেখেই অবস্থাটা বুঝে ফেলেছেন। কিন্তু আমাদের ফিজিও কিন্তু সেটা বুঝতে পারেননি। এটা সত্য যে ফিজিও সমস্যার গভীরতাটা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। যেহেতু এখানে একটা ভুল হয়েছে সেহেতু কিছুটা দায় তার উপরও পড়ে। কিন্তু আমি তাকে পুরোপুরি দোষারোপ করব না। আসলে কেউ জানত না যে এটা সংক্রমিত হবে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে ফেরার পর সাকিব এশিয়া কাপ না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু ফিজিও তাকে যখন বললেন যে এই হাত নিয়ে খেললে খুব একটা সমস্যা হবে না। তখনই সাকিব এশিয়া কাপ খেলার সিদ্ধান্ত নেন, ‘বিসিবি সভাপতি আমাকে বলেছেন যে তুমি এশিয়া কাপ খেলতে যাবে নাকি সার্জারি করাবে সেটা তোমার ব্যাপার। সিদ্ধান্ত তোমাকেই নিতে হবে। তখন আমি ফিজিওকে জিজ্ঞাসা করি যে এই হাত নিয়ে খেললে কতোটা সমস্যা হতে পারে? তিনি আমাকে বলেছেন খুব বেশি খারাপ কিছু হবে না। তখন সিদ্ধান্ত নিই যে যেহেতু এশিয়া কাপটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আমি ব্যাথা নিয়েই ৪-৫টা ম্যাচ খেলব।’
চলতি বছরের জানুয়ারিতে আঙুলের ইনজুরিতে পড়েন সাকিব। ইনজুরির কারণে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলেননি। এরপর বিসিবি সভাপতির অনুরোধে সাকিব নিদাহাস ট্রফিতে খেলেন। তখনও সাকিব আঙুলের ইনজুরি থেকে পুরোপুরি সেরে ওঠেননি। এরপর আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজও খেলেন। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে ফিরে আঙুলের সার্জারি করাতে চেয়েছিলেন। সেটা না করেই এশিয়া কাপ খেলতে যান। কিন্তু সুপার ফোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলার পর তার ব্যাথা বাড়ে ও আঙুল ফুলে যায়। এরপর তিনি দেশে ফিরে আসেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।