রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মানিকগঞ্জে গতবারের চেয়ে পাটের চাষ ও ফলন কম হলেও ভাল দাম পেয়ে মুখে হাসি ফুটেছে জেলার পাট চাষিদের মুখে।
জেলার ৭টি উপজেলার হাট গুলোতে এখন নতুন পাটের সমারহ। কৃষকরা নতুন পাট বিক্রি করে বাড়তি দাম পেয়ে কৃষকদের মধ্যে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। আবার পাট কাঠির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এলাকায়। বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৬ হাজার টাকার পাট কাঠি বিক্রি করে অতিরিক্ত অর্থ আয় হচ্ছে।
মানিকগঞ্জ জেলার ৭টি উপজেলায়ই এক সময় সোনালি আশ খ্যাত পাটের ব্যাপক আবাদ হতো। হাজার হাজার মন পাট জেলার বৃহত্তম ঘিওর, সাটুরিয়া, বরংগাইল, তরাসহ প্রত্যন্ত গ্রামের হাট গুলোতেও কেনা বেচা হতো। মানিকগঞ্জের পাটের মান ভাল হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় এর চাহিদা ছিল অনেক। মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলার হাটবাজার ও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ী ও আড়ৎদাররা পাট কিনে ট্রাকে বা বড় বড় নৌকায় করে নারায়নগঞ্জ, খুলনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ি সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাট বিক্রি করতো। এ অঞ্চলের জলবায়ু পাট চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী আর ব্যাপক নদী, নালা, খাল, বিলের পানিতে পাট জাগ দেয়া, পাটের আশ এবং রং ভাল হওয়ায় তুলনামুলক পাটের চাহিদা ভালো।
কয়েক বছর আগে পাট চাষে সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির ফলে উৎপাদিত খরচ এর চেয়ে দাম কম পাওয়ায় সাধারন কৃষকেরা পাটের চাষ কমিয়ে দিচ্ছিল। সরকার সার, চাল, চিনি,সিমেন্ট, ফসলের বীজ সহ বিভিন্ন পন্য বাজারজাত করনের জন্য পাটের তৈরি ব্যাগ ব্যবহারের ওপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করায় পাটের চাহিদা বাড়ছে।
মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় গত বছরের তুলনায় এ বছর পাটের আবাদ কম হয়েছে। গত বছর মানিকগঞ্জে দেশী পাট ৭শ’ ১৭ হেক্টর এবং তোষা ৪ হাজার ৪শ হেক্টর মেস্তা ২৭ হেক্টর মোট ৫ হাজার ১শ’ ৭১ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়। আর এ বছর দেশী ৫শ’ ৫৬ হেক্টর এবং তোষা ২ হাজার ৯শ ৫৬ হেক্টর এবং মেস্তা ১৬ হেক্টর, মোট ৩ হাজার ৫শ’ ২৮ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়।
জেলার সাটুরিয়ায় নওগা গ্রামের কৃষক আ: রশিদ জানায়, এ বার ৫০ শতাংশ জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম। জমির পাট কেটে বিক্রি করেছি। প্রতি মন পাটের দাম পেয়েছি ২২শ টাকা করে। পাটের ফলন কম ও পানি সংকটে পাট কেটে জাগ দেওয়াতে কিছুটা সংকট হলেও পাটের দাম বেশি হওয়াতে লাভবান হয়েছি। আবার পাটের খড়ি (কাঠি) আলাদা ১২ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। প্রতিবার যদি পাটের এ রকম ভাল দাম পাওয়া যায় তবে পাট চাষে এলাকার কৃষকদের আগ্রহ আরো বাড়বে।
মানিকগঞ্জের কৃষ্ণপুর গ্রামের পাট চাষি আজাহার জানায়, এবার ৪ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টিপাত হওয়ায় জমিতে জো আসার সাথেই বীজ রোপণ করেছিলাম। নিড়ানী, পরিচর্জা, আগাছা দমন, সার, বীজ, কীটনাশক, পাট কাটা, ধুয়া সহ প্রতি বিঘা পাটে খরচ হয়েছে প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় পাটের আবাদ হয়েছে ৬ থেকে ৭ মন। পাটের বাজার মূল্য ভাল থাকায় বিঘা প্রতি প্রায় ৭/৮ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।
সাটুরিয়ার পাটের ব্যবসায়ী (বেপারী) উত্তম সাহা জানায়, পাটের দাম বর্তমান বাজারে বেশি। পাট প্রকার ভেদে ১৮শ টাকা থেকে ২২শ টাকা মন করে ক্রয় করছি। তবে আমরা যেখানে পাট বিক্রি করবো সে জায়গায় পাট পাঠাতে মনে আরো ১৫০ টাকা খরচ হবে। আর এখন ভাল দাম না পেলে পাট কিনে মজুদ করে রেখে কয়েক মাস পরে বিক্রি করবো।
মানিকগঞ্জের পাট ব্যবসায়ী মো: শরিফুল ইসলাম জানায়, বর্তমান বাজারে প্রতিমন দেশী পাট ১ হাজার ৮শ থেকে ২ হাজার ২শ টাকা এবং তোষা পাট ২ হাজার ২শ’ থেকে ২ হাজার ৪শ’ টাকা করে বিক্রয় হচ্ছে। বিভিন্ন মিলে পাটের চাহিদা থাকায় চাষীদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।