Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

স্বামীর টাকা আদায়ে অপহরণ নাটক!

গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও পৌর শহরে সৌদি প্রবাসী স্বামীর কাছ থেকে টাকা আদায় করতে সন্তানসহ নিজেকে অপহরণের নাটক সাজিয়েছেন স্ত্রী। গফরগাঁও থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে এসব বিষয় প্রকাশ পেয়েছে।

জানাগেছে, গফরগাঁও উপজেলার যশরা ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদি প্রবাসী মোঃ বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা খাতুন (৪২) তাঁর আড়াই বছর বয়সী ছেলে মোঃ আলীকে সঙ্গে নিয়ে গত মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাড়ি থেকে বের হন। সন্ধা সাড়ে ৬টার দিকে তাসলিমা তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল থেকে মেয়ে ঝুমা আক্তারকে ফোন করে জানান, গফরগাঁও মধ্যবাজারস্থ অগ্রণী ব্যাংক শাখা থেকে টাকা তুলে বাড়ির উদ্দেশে গোহাটা অটোস্ট্যান্ডে যান তিনি। রোস্তম আলী গোলন্দাজ উচ্চ বিদ্যালয় মার্কেটসংলগ্ন মামুন মিয়ার দোকানের সামনে আসামাত্র একটি নোহা মাইক্রো তাদের সামনে দাঁড়ায়। পরে মাইক্রো থেকে অজ্ঞাত এক পুরুষ ও এক নারী তাসলিমা আক্তার ও তার সন্তানের নাকে ওষুধ মিশ্রিত রুমাল চেপে অজ্ঞান করে গাড়িতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। অপহরণকারীরা ছেলেসহ তাকে সেখানে আটকে রেখে মারধর করছে এবং ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

ওই ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে তাসলিমার মেয়ে ঝুমা আক্তার গফরগাঁও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অভিযোগটি আমলে নিয়ে তাসলিমা আক্তারের মোবাইল নম্বর ট্যাগ করাসহ উদ্ধারের চেষ্টা চালান। কিন্তু পরদিন বুধবার দুপুরে তাসলিমা আক্তারকে গফরগাঁও মধ্য বাজারে ভারসাম্যহীন অবস্থায় পাওয়ার পর তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে তাসলিমার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পৌর শহরের চর ষোলহাসিয়া কড়ইতলা এলাকায় খালাতো ভাই আবুল হাসেমের বাড়ি থেকে তাঁর সন্তানকে উদ্ধার করা হয়।
থানা হেফাজতে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাসলিমা আক্তার জানান, সৌদি প্রবাসী স্বামী বাচ্চু মিয়া বিদেশ থেকে তাসলিমার নামে সাত-আট লাখ টাকা পাঠিয়েছেন। তাসলিমা টাকাগুলো খরচ করে ফেলেছেন। বাচ্চু মিয়া বিষয়টি জানতে পেরে ‹দেশে এলে সব টাকার হিসাব দিতে হবে› বলে তাসলিমাকে চাপ দিচ্ছিলেন। এতে দিশাহারা হয়ে স্বামীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করতে তাসলিমা অপহরণ ও ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণের নাটক সাজিয়েছেন।

গফরগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল আহাদ খান বলেন, জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন বিপিএম স্যারের নির্দেশে অভিযোগটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অপহৃতদের উদ্ধারের চেষ্টা করেছি। তাসলিমা আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন প্রবাসী স্বামীর চাপে দিশেহারা হয়ে অপহরণের এই নাটক সাজিয়েছেন তিনি। ভিকটিমদ্বয়কে ময়মনসিংহ আদালতে পাঠাতে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে ওসি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অপহরণ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ