নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
একই সময়ে শুরু হলো দুটি ম্যাচ। তবে একটি যায়গায় দুবাই আর আবু ধাবি মিশে গেলো এক বিন্দুতে, বাংলাদেশের ফাইনাল স্বপ্ন।
এশিয়া কাপের ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে গতপরশু শেখ আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানকে শুধু হারালেই হতে না, দুবাইয়ে চির প্রতিদ্ব›দ্বীতার ম্যাচে ভারতের কাছে হারতে হতো পাকিস্তানকে। রোহিত-ধাওয়ানের ব্যাটিং তাণ্ডবে ভারতের কাছ থেকে সেই সুসংবাদটা বেশ আগেই পৌঁছেছে আবু ধাবিতে। কিন্তু নিজেদের কাজটুকু সারতো অপেক্ষা করতে হলো এক স্নায়ুক্ষয়ী যুদ্ধের, শেষ বলে এসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় নিশ্চিত করলো মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। টিকে থাকলো ফাইনালের স্বপ্ন।
শেষ সময়ে গিয়ে ম্যাচ হাতছাড়া করা, শেষ ওভার কিংবা শেষ বলে গিয়ে ভরাডুবির ঘটনা বাংলাদেশের অহরহ। এমনকি ফাইনাল ম্যাচেও শেষ ওভারে হারের যন্ত্রণায় পুড়তে হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। এবার বাংলাদেশের বোলাররা প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের দিতে পেরেছেন সেই অভিজ্ঞতা। আর এতেই সবচেয়ে খুশি ম্যাচ সেরা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আফগানদের চেপে রেখে একটা সময় পর্যন্ত ম্যাচের লাগাম নিজেদের কাছে নিয়ে গিয়েছিল টাইগার বোলাররা। তবে হাসমতুল্লাহ শহিদি, আসগার আফগান আর মোহাম্মদ নবীর বলে ঘুরে দাঁড়িয়ে জেতার কাছে চলে গিয়েছিল আফগানিস্তানও।
এমন জয়কে তাই তৃপ্তির বলেছেন মাহমুদউল্লাহ। স্বস্তিরও। কারণ এখান থেকেই হয়তো শুরু হতে পারে নতুন গল্প। ম্যাচ শেষে উচ্ছ¡সিত মাহমুদউল্লাহ অতীতে ব্যাটসম্যানদের না পারার ক্ষতে বোলারদের সাফল্যের প্রলেপ দিতে চাইলেন, ‘ম্যাচ জেতার অনুভূতি কখনো প্রকাশ করা যায় না। বাংলাদেশের পক্ষে যে কোন ফরম্যাটেই ম্যাচ জেতার অনুভূতি অসাধারণ। ভালো লাগাটাই স্বাভাবিক।’
শেষ ওভারে আফগানদের জেতার সমীকরণ ছিল বেশ সহজ। ৬ বল দরকার ছিল ৮ রান। হাতে ৪ উইকেট থাকায় ম্যাচ হেলেছিল আফগানদের দিকেই। তবে মুস্তাফিজুর রহমানের ম্যাজিকাল ওভারে সব ওলটপালট। বাংলাদেশের বোলিংয়ের সেরা অস্ত্র নিজের আসল খেল যেন জমিয়ে রেখেছিলেন শেষ ওভারের জন্য। তার ওই ওভার থেকে এসেছে মাত্র ৪ রান, যার দুই রানই লেগ বাই। অর্থাৎ মুস্তাফিজ রান দিয়েছেন মাত্র দুটি, ফেলেছেন মূল্যবান উইকেট। যার রেশে দল পায় ৩ রানের রোমাঞ্চকর জয়।
মুস্তাফিজের এমন বোলিংয়ের ব্যাট হাতে ৭৪ রানের ঝলমলে ইনিংসে তৈরি করে দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, বল করতে এসেও এনে দিয়েছেন ব্রেক থ্রু, নিয়েছেন দারুণ ক্যাচ। হয়েছেন ম্যাচ সেরাও। তবে নিজের অবদানের চেয়েও মুস্তাফিজের ওই ওভার এগিয়ে রাখছেন মাহমুদউল্লাহ, ‘আমি বলবো মুস্তাফিজের শেষ ওভারটা (টার্নিং পয়েন্ট)। যদিও আমাদের জুটিটা (মাহমুদউল্লাহ-ইমরুলের ১২৮ রানের জুটি) গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। তারপরও ৬ বলে ৮ রান ডিফেন্ড করাটা এতোটা সহজ নয়। যা করে দেখিয়েছে মুস্তাফিজ।’
৮৭ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল বাংলাদেশ। এই ভীষণ চাপের মধ্যে ইমরুল কায়েসকে সঙ্গে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ১২৮ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়ার পথে ফিফটি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। তার ৮১ বলে ৭৪ আর ইমরুলের ৮৯ বলে ৭২* রানের ইনিংস দুটি বাংলাদেশের আড়াই শ ছুঁই ছুঁই স্কোরের ‘নিউক্লিয়াস’। ইমরুলের এই হার না মানা ইনিংসটিও মুগ্ধ করেছে অলরাউন্ডারকে, ‘অনিশ্চয়তার মাঝে সে দলে এসেছে। সেখান থেকে নির্ভার ব্যাটিং করাই সবসময় সম্ভব হয়ে ওঠে না। ইমরুল যা করেছে তার অসাধারণ।’
খুব বেশি আগের কথা নয়। এইতো কদিন আগেই শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে জয়ের পথে থেকে হেরেছে বাংলাদেশ। এমন গল্প তো টাইগার ক্রিকেটের সূচনা থেকেই শুরু। সেই ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের হাতের মুঠোয় থাকা ট্রফি কেড়ে নিয়েছেন মুরালিধরনের মতো ব্যাটসম্যান। তাই আফগানদের বিপক্ষে জয়ের আগ পর্যন্ত বিশ্বাস ছিল না টাইগারদের। ম্যাচ জিতবেন এমন ভাবনাটা কখন আসে মাহমুদউল্লাহর মাথায়? এমন প্রশ্নে তার উত্তর, ‘সম্ভবত, শেষ বলটির পরই। কারণ ব্যবধান ছিল খুবই কম। ওরা খুব ভালো খেলছিল, ভালো জুটি গড়েছিল, স্নায়ুকেও বশে রেখেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত আমরাই জিতেছি। মুস্তাফিজ দারুণ বোলিং করেছে। সব বোলারই ভালো করেছে, ম্যাশ, সাকিব, মিরাজ সবাই। মুস্তাফিজকে তবু আলাদা কৃতিত্ব দিতে হবে। ক্র্যাম্প নিয়েও সে দারুণ করেছে।’
দুই সংস্করণ মিলিয়ে টানা চার ম্যাচ হারের পর আফগানদের বিপক্ষে জিতল তারা। বাংলাদেশের কাছে এই হারে এশিয়া কাপের ফাইনালে যাওয়ার আশা শেষ হয়ে গেছে আফগনদের। মাশরাফিদের জয়ের দিনে পাকিস্তানকে হারানো ভারতেরও নিশ্চিত হয়ে গেছে ফাইনাল। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের আগামীকালের সুপার ফোরের শেষ ম্যাচটি এখন কার্যত ‘সেমি-ফাইনাল’। জয়ী দল খেলবে আগামী শুক্রবারের ফাইনালে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।