নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : বিশ্বকাপের মাঝপথে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল আল আমিনকে, অপরাধটা তার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের। টিম রুলস ভঙ্গ করে ম্যানেজারের অনুমতি না নিয়ে গভীর রাতে হোটেলে ফিরেই করেছেন অপরাধ। ওই অপরাধে ব্রিসবেন থেকে মেলবোর্ন হয়ে হোটেল ল্যাংহামের পেছন পথ দিয়ে মাথা নিচু করে বিশ্বকাপকে জানিয়েছেন গুডবাই। এক বছর আগের ওই ঘটনায় ব্যাড বয় ইমেজ তৈরি, সেই অপবাদে দলে ফেরাটাই তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। হোমে টানা ৩টি সিরিজের সব ক’টিতে ছিলেন দলের বাইরে। তাসকিন, রুবেলের ইনজুরিতে সেই যে ফিরলেন দলে, সেখান থেকে আর ছন্দপতন নয়। ডেথ ওভারের বোলিংয়ে নিজের কারিশমা জানিয়ে দিয়েছেন বিপিএল থ্রি-তে। বিপিএলের সর্বশেষ আসরে প্রথম হ্যাটট্রিক ম্যানও বরিশাল বুলস’র এই পেসার। সিলেট সুপার স্টারর্সের রবি বোপারা, নূরুল হাসান সোহান, মুশফিকুরকে উপর্যুপরি তিন বলে শিকার, সেই ম্যাচেই টুয়েন্টি-২০ ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ উইকেট (৫/৩৬)! আলোচনায় উঠে আসা আল আমিনের সেটাই ছিল টার্নিং পয়েন্ট বিপিএলই। ১৭ উইকেট শিকারে বাংলাদেশ পেসারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট। সেই থেকে বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে অন্যতম ধারাবাহিক ঝিনাইদহের এই ছেলেটি।
দলে আলোচনায় মুস্তাফিজ, তাসকিন সেখানে গতি দিয়ে ছড়াচ্ছেন আলো, মাশরাফি সীমাবদ্ধতা মেনে স্পট বোলিংকে নিয়েছেন বেছে। তবে টি-২০-তে এই ত্রয়ীকে ছাড়িয়ে দলের সেরা সফল বোলার আল আমিন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওয়ানডে, টেস্টের আগে অভিষেক টি-২০-তে। ২০১৩’র নভেম্বরে অভিষেকে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ছড়িয়েছেন আলো (২/৩১)। সেই থেকে ধারাবাহিক আল আমিন। টি-২০ ক্যারিয়ারে ১৫ ম্যাচে ২৪ উইকেট, ভাবুন তো! বোলিংয়ে উইকেটের মুখ দেখেননি মাত্র ১টি ম্যাচে, অন্য একটি ম্যাচে পাননি বোলিং। টি-২০ বিশ্বকাপের এক আসরে বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে সর্বাধিক ১০টি শিকার তাকে আলোচনায় এনেছে ২০১৪ সালে। সে বছরই ত্রুটিপূর্ণ বোলিং অ্যাকশনের দায়ে খ-কালীন নিষিদ্ধ হয়েছিলেন, চেন্নাইয়ের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা দিয়ে ফিরেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।
এশিয়া কাপে তো রীতিমতো হিরো এই পেস বোলার। ৪ ম্যাচে শিকার সংখ্যা তার ইতোমধ্যে ১০টিÑএশিয়া কাপের চলমান আসরে এখন পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের আমজাদ জাভেদের শিকার ১২টি, নাভিদ সেখানে ১১টি। তবে তাদের এইসব শিকার বাছাইপর্বে প্রাপ্ত বোনাস তিনটি ম্যাচে। আইসিসির পূর্ণ সদস্য ৪ দেশের বোলারদের মধ্যে উইকেট শিকারে সবার ওপরে কিন্তু আল আমিন। উইকেটহীন কাটেনি তার একটি ম্যাচ। তার চেয়ে বড় কথা, সংযুক্ত আরব আমিরাত ছাড়া অন্য তিন ম্যাচের তিনটিতেই নামতা গুনে তিনটি করে উইকেট করেছেন শিকার। ভারতের বিপক্ষে ৩/৩৭, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩/৩৪, পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩/২৫! প্রতিদিনই নূতন বলে এক এন্ড থেকে দিয়েছেন চাপ তাসকিন, অন্য এন্ডে শিকার পাচ্ছেন সেখানে আল আমিন। গতকালও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
মুস্তাফিজুর নেই, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে ডান পাঁজরে চোট এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে ফেলেছে এই বাঁ-হাতি কাটার মাস্টারকে। চেনা কম্বিনেশন ভেঙে যাওয়ার পরও ভাঙেনি আল আমিনের মনোবল। নিজের প্রথম বলেই খুররম মনজুরকে কট বিহাইন্ডে পরিণত করে ট্রেড মার্ক মার্কা সেই যে হাসি, সে হাসি চওড়া হয়েছে শেষ স্পেলে। প্রথম স্পেলে সারজিলের ফ্লিক শটে খেয়েছিলেন ছক্কা, ওই স্পেলটি তার ১-০-৭-১। পরের স্পেলে ৪টি ডট (১-০-২-০)। ১৪ থেকে ১৭Ñএই ৪ ওভারে মাশরাফি, আরাফাত সানি, সাকিব খেয়েছেন মার, সেখান থেকে পাকিস্তানের রানের লাগাম টেনে ধরার যে দায়িত্বটা অর্পিত হয়েছিল, তা পালন করতে সাধ্যমত চেস্টা করেছেন। ডেথ বলে ভয়ংকর বলে ১৮ তম এবং ২০তম ওভারটা তার জন্য বরাদ্দ করেছেন মাশরাফি, এই বরাদ্দটা স্থায়ী হয়ে গেছে। গতকালও অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন এই ২ ওভাবে আফ্রিদি এবং আনোয়ার আলীকে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচে বাধ্য করে। এমন দিনে ২৪ বলের মধ্যে ১২টিতেই ডট, খেয়েছেন ২টি চার। প্রশংসিত বোলিংই বটে। তবে আল আমিনের দিনে পাকিস্তানকে ১৩০-এর নিচে বেধে ফেলার কৃতিত্ব কিন্তু তাসকিনের। ৪-১-১৪-১! টি-২০-তে স্বপ্নের বোলিংই বটে। জানেন, ১২ বলের প্রথম স্পেলে ১১টিই তার ডট! ২৪ বলে ডট বলের সংখ্যা সেখানে ১৬টি! ১৯তম ওভারে খেয়েছেন মার, খরচা ওই ওভারে ১২, তা না হলে তো বিস্ময় আরো যেত ছাড়িয়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।