রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
পর্যটন কেন্দ্রের পাশাপাশি শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শণ সমৃদ্ধ নারায়ণগঞ্জ- ৩ আসনটি। এ আসন সোনারগাঁও উপজেলার পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এখানে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৮ শ ৪৩ জন ভোটার রয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জ-৩ সোনারগাঁও আসনে স্থানীয় আ.লীগের ৬ জন নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও সাধারণ জনগণ সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামকেই আওয়ামী লীগের তৃণমুলের নেতা হিসেবে চিনেন। তাদের মধ্যে প্রত্যেকে নিজেদের মতো করে মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রে লবিং চালালেও সকলেই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন বলে জানান।
মনোনয়ন প্রত্যাশী আব্দুল্লাহ আল কায়সার ইনকিলাবকে জানান, আগামী নির্বাচনে মনোনয়নের বিষয়ে কেন্দ্র বিভাগীয় টিম গঠন করার পাশাপাশি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বিষয়ে একাধিক গোয়ান্দা রিপোর্ট নেত্রীর কাছে জমা আছে।
তাছাড়া, বিএনপির পরপর তিনবারের এমপিকে প্রায় ৮২ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে আমাদের নেত্রীর নির্দেশে সকলকে নিয়ে কাজ করেছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আর শেখ হাসিনার নির্দেশ যথাযথ পালন করেছি। আমি আশাকরি সকল কিছু বিবেচনায় আমিই একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাব এবং দলীয় প্রধানের হাতে নৌকা উপহার দিতে পারব।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশে গত নির্বাচনে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে কেন্দ্র। আবার কেন্দ্রের কথায় তা প্রত্যাহার করি। বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় জাতীয় পার্টির লিয়াকত হোসেন খোকা নির্বাচিত হোন। আমি নিজেকেই যোগ্য মনে করি। তাছাড়া কেন্দ্র যদি কায়সারকে মনোনয়ন দেয় তাহলেও তার প্রতি আমার সমর্থন থাকবে। কিন্তু, আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যকোন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিলে সোনারগাঁও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তা কখনও মেনে নেবে না।
আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী মাহফুজুর রহমান কালাম বলেন, আমি তৃণমুল থেকে রাজনীতি করি। প্রথমে সোনারগাঁও ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পরবর্তীতে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এবং বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে উপজেলাব্যাপী আমার একটি পরিচিতি রয়েছে। তাছাড়া, বিভিন্ন সময় দলীয় নানা কর্মসূচীতে অবদানের কথা, দলের দুঃসময়ে হামলা-মামলার কথা কেন্দ্রীয় ভাবে সবাই জানে। আমি নেত্রীর সকল নির্দেশ পালন করছি। মনোনয়নের ব্যাপারে দল যে সিদ্ধান্ত নেবে আমিও সে সিদ্ধান্তের বাইরে যাবনা। তবে, আমি আশাবাদি দল আমাকেই মূল্যায়ন করবে।
এদিকে, বিএনপি’র চার বারের নির্বাচিত এমপি ও সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, দল যদি নির্বাচনে অংশ গ্রহন করে আমি মনোনয়ন পাব এবং বিজয়ী হব।
অপরদিকে, উপজেলা বিএনপির হাল ধরে রাখা বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান বলেন, স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা রয়েছে। যে মামলায় প্রায় ২হাজার নেতাকর্মী আসামী। তাছাড়া, আমাদের নেত্রী জেলে থাকায় কেন্দ্রীয় কোন সিদ্ধান্ত এখনো পাইনি। দল যদি নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে আমি শতভাগ আশাবাদি দল আমাকে নয়, আমার কাজের মূল্যায়ন করে আমাকেই মনোনয়ন দিবেন।
এদিকে, ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগিতে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনটিতে জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা কিছুদিন আগেও তিনি পূণরায় মাহজোট থেকে মনোনয়ন পেতে শতভাগ নিশ্চিত থাকলেও বর্তমানে কেন্দ্রীয় জাতীয় মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক অনন্যা হুসাইন মৌসুমী জোরেসোরে মাঠে নামায় বেকায়দায় পড়েছেন। তবে, হাল ছাড়েননি বর্তমান এমপি। বলেছেন, কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত নেবে সেভাবেই নির্বাচন করবেন তিনি।
সোনারগাঁও আওয়ামী লীগের অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির নেতা এএইচএম মাসুদ দুলাল, স্বাচিবের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আবু জাফর বিরু ও ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলামের নামও শোনা যাচ্ছে।
অপরদিকে, বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইমতিয়াজ বকুল, যুব উন্নয়নের সাবেক মহাপরিচালক অলিউর রহমান আপেল, উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি খন্দকার আবুজাফর উল্লেখযোগ্য।
তবে, গত নির্বাচনে এ আসনটি ভাগাভাগি হওয়ায় স্থানীয় ভোটাররা ভোট প্রদানে বঞ্চিত হলেও আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমেই তাদের অভিভাবক নির্বাচিত করার তীব্র আকাঙ্খা রয়েছে তৃণমুলের। স্থানীয় নানা শ্রেণী পেশার ব্যক্তি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সাথে আলাপ করে এমনটাই জানাগেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।