মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নেপালকে সম্প্রতি চীন নতুন যেসব ট্রানজিট রুট দিয়েছে সেগুলো আর্থিকভাবে কতটা লাভজনক তা এখন নেপালের রাজধানীর অনেকের কাছে গৌণ বিষয়। নেপালকে চারটি সমুদ্রবন্দর ও তিনটি স্থল বন্দরে প্রবেশের সুযোগ দেয়ার ফলে তৃতীয় দেশের সাথে বাণিজ্য করার ক্ষেত্রে নেপালের এখন ভারতের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে না। এসব বন্দর থেকে মালামাল আনা নেয়ার ক্ষেত্রে নেপালি যানবাহনকে চীনের ওপর দিয়ে চলাচলের অনুমতিও দিয়েছে চীন। এটি নেপালের জন্য বিরাট বড় একটি ঘটনা।
এখানেই শেষ নয়। কাঠমান্ডু ও তিব্বতের সীমান্তনগরী কেরাঙের মধ্যে রেলযোগাযোগ প্রতিষ্ঠায় কারিগরি বিষয়টি বিবেচনা করতেও চীন রাজি হয়েছে। চীন ইতোমধ্যেই জানিয়েছে, তারা ২০২০ সালের মধ্যে লাসা জিগাতসে রেলওয়েকে কেরাঙ পর্যন্ত সম্প্রসারিত করবে। এদিকে ভারতও ভারতীয় রেলওয়েকে কাঠমান্ডু পর্যন্ত সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি বলেছেন, ভারত ও চীনের মধ্যে প্রাণবন্ত অর্থনৈতিক সেতু হিসেবে আত্মপ্রকাশের পরিকল্পনা করছে নেপাল। অবশ্য এখানে যা বলা হয়নি তা হলো, ভারতের ওপর পুরোপুরি অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা অবসানের পরিকল্পনা করছে দেশটি।
এ ধরনের নির্ভরশীলতা যে কতটা বেদনাদায়ক তা ২০১৫-১৬ সময়কালে দেখেছে নেপাল। ওই সময় নেপালগামী পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল ভারত। বাণিজ্যের জন্য ভারতের ওপর নেপালের নির্ভরশীলতা ৯০ ভাগ। ফলে ওই পাঁচ মাসে নেপালের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছিল। ওষুধ ও নিত্যপণ্য পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ভূবেষ্টিত নেপালকে নির্লজ্জভাবে ব্ল্যাকমেইল করেছিল ভারত।
সম্প্রতি নেপাল-ভারত সম্পর্কে আরো কিছু টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পুরনো ইন্দো-নেপাল চুক্তি পরিবর্তন করার জন্য ইমিনেন্ট পারসন্স গ্রুপসের প্রতিবেদন গ্রহণ করতে অনিচ্ছুক ছিলেন। এতে কাঠমান্ডুতে গুঞ্জন শুরু হয় যে ভারত এখনো ১৯৫০ সালের শান্তি ও মৈত্রী চুক্তি সংশোধন করতে রাজি নয়।
এ প্রেক্ষাপটে পুনেতে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সামরিক মহড়া থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয় নেপাল। যে সংস্থাটি গঠিত হয়েছে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য, সেটি সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের বিষয়টি নেপাল মেনে নিতে প্রস্তুত ছিল না। ভারতের আয়োজিত সামরিক মহড়া থেকে নেপাল নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলেও চীনের সাথে যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। এটি ভারতকে খুশি করেনি। তবে মোদি-শি ওহান শীর্ষবৈঠকের পর নেপালে চীন-ভারত প্রতিযোগিতার বদলে সহযোগিতার ইঙ্গিতও দেখা গেছে। নেপালে ত্রিদেশীয় সহযোগিতার ধারণাকে অনেক আগে থেকেই সমর্থন করছেন শি। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী ওলি মনে করেন, চীন ও ভারতের সাথে কানেকটিভিটি প্রকল্পগুলো পরিপূরক।
চীনের সাথে নেপাল বর্ধিত কানেকটিভিটি ও সহযোগিতার ফলে নয়া দিল্লি উদ্বিগ্ন হবে। ফলে কাঠমান্ডুর প্রতি কঠোর হতে পারে ভারত। এ কারণে ভারত ও চীন উভয়ের সাথে আরো সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য ওলিকে অনেক বেশি কুশলী হতে হবে। অর্থনৈতিক সেতুবন্ধটি কার্যকর হয় কিনা তা দেখার বিষয়। আর তিনি ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা থেকে কল্যাণ লাভ করতে পারেন কিনা সেটিও দেখতে হবে। সূত্রঃ সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।