Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

গণসংযোগ আর মনোনয়ন পেতে প্রার্থীরা মরিয়া

লক্ষীপুর-২ : রায়পুর ও সদরে বইছে নির্বাচনী হাওয়া

লক্ষীপুর থেকে মো. কাউছার ও হারুনুর রশীদ | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

জেলার রায়পুর উপজেলা ও সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত লক্ষীপুর-২ আসন। এ আসনটিতে প্রায় প্রতিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী জয়ী হয়ে আসছে। বিএনপি ও জামায়াত অধ্যুষিত এ এলাকায় ১৯৯৬ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিজয়ী হলে তার ছেড়ে দেয়া আসনে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদকে মনোনয়ন দেয়া হয়। পরে আ.লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় উপ-নির্বাচনে আ.লীগ বিজয়ী হয়। এ ছাড়া প্রতিটি নির্বাচনে জোট প্রার্থী বিজয় অর্জন করে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে লক্ষীপুর-২ রায়পুর আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা কৌশলে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি জোট অধ্যুষিত জেলার চারটি সংসদীয় আসনে বর্তমান সংসদ সদস্যরা ছাড়াও সম্ভাব্য প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হন ১৪ দল মনোনীত জাতীয় পার্টির (এরশাদ) বর্তমান জেলা সভাপতি মোহাম্মদ নোমান।
আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা হবে আ.লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সাথে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের মধ্যে। এ ছাড়া এ আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য তেমন কোনো উন্নয়ন করতে না পারায় ১৪ দলীয় জোটকে এ আসন ধরে রাখতে হলে আগামী নির্বাচনে ভালো ইমেজ সম্পন্ন প্রার্থী দিতে হবে। তবে আ.লীগ নেতারা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের কারণে সাময়িকভাবে মো. নোমানকে মেনে নিলেও এখন তারা চান এবার নিজেদের দল থেকেই জননেত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দেবেন এবং নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করে নেত্রীকে এই আসন উপহার দেবেন তারা।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন- জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন, কেন্দ্রীয় আ.লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি হারুনুর রশিদ, কেন্দ্রীয় স্বাচিবের সহ-সভাপতি, বিএমএর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা আ.লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. এহসানুল কবির জগলুল, লক্ষীপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহউদ্দিন টিপু, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী খোকন, কুয়েত প্রবাসী আ.লীগের নেতা বিশিষ্ট শিল্পপতি শহিদ ইসলাম পাপুল, আ.লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের নির্বাহী সদস্য সামছুল ইসলাম পাটওয়ারী, রায়পুরের তৃণমূল ও গণমানুষের নেতা, পৌর আ.লীগের আহ্বায়ক কাজী জামশেদ কবির বাক্কী বিল্লাহ।
বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ভূঁইয়া, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. কর্নেল (অব.) আবদুল মজিদ ও হারুনুর রশিদ (ভিপি) এলাকায় তৎপর রয়েছেন। জাতীয় পার্টি (এরশাদ) থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মোহাম্মদ নোমান। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডির) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক ও লক্ষীপুর জেলা বহুমুখী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক আলহাজ এম এ ইউসুফ। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রিন্স মজিবুর রহমান।
জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, জেলার সবচেয়ে বড় এলাকা ও বেশি ভোটার নিয়ে গঠিত এ আসনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে এমন ব্যক্তি হতে হবে যিনি মাঠে ময়দানে সব সময় থাকেন। নেতাকর্মীরা যাকে সুখে-দুঃখে কাছে পান, যারা মাঠে ময়দানের সমস্যা বোঝেন। এ ছাড়া এ আসনটি রায়পুর উপজেলা ছাড়াও লক্ষীপুর সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে যিনিই ভবিষ্যতে এমপি হবেন তাকে উন্নয়ন বরাদ্দ সেভাবে দ্বিগুণ আদায় করার মতো চিন্তা ও যোগ্যতা থাকতে হবে। আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিলে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে দল অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলেও আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাব। লক্ষীপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহউদ্দিন টিপু বলেন, নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখে আমি পাশে ছিলাম এখনো আছি, ভবিষ্যতেও থাকব। এ আসনে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হলে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে এ আসনটি নেত্রীকে উপহার দিতে পারব বলে আমার বিশ্বাস।
জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, এ এলাকা সন্ত্রাসের ঘাঁটি ছিল। বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এ এলাকাকে সন্ত্রাসমুক্ত করা হয়। জোট সরকারের সময় প্রতিটি এলাকার বাড়ি, রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট, মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করা হয়েছে। যদি ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে যায় তাহলে ভোটাররা অন্য কাউকে ভোট দেয়ার চিন্তা করবে না। আমি মনোনয়পেলে আবারো এ আসনটি দেশনেত্রীকে উপহার দিতে পারব। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. কর্নেল (অব.) আবদুল মজিদ বলেন, এ আসনটি বিএনপির ঘাঁটি এখানে দল যাকে মনোনয়ন দেবে সে জয়লাব করবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কি নেবে না তাও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপার। দল আমাকে মনোনয় দিলে জয়ের ব্যাপারে আমি শতবাগ নিশ্চিত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ