রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন তিন উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-৪ আসন। এ আসনে ২৩ ইউনিয়ন রয়েছে। তারমধ্যে ১০টি ইউনিয়নই চরাঞ্চলে। যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই নাজুক। প্রায় সাড়ে তিন লাখ ভোটারের কাছে পৌঁছতে অনেক পরিশ্রম হচ্ছে প্রার্থীদের। এই আসনটি বিগত দিনে বরাবর আ.লীগের দখলে ছিল। গত নির্বাচনে ফরিদপুরের চারটি আসনের মধ্যে এই একটি মাত্র আসনে নির্বাচন হয়েছিল। এখানে আ.লীগকে হারিয়েছে অন্য আ.লীগ নেতার ছেলে। সেই থেকে এ আসনে আ.লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। বর্তমানে তা আবার তিন ভাগের পথে। সম্প্রতি ভাঙ্গা উপজেলা আ.লীগের সভাপতিও প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। পরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করে জেলা আ.লীগ। আ.লীগের বিভক্ততে এবার শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বিএনপি। বিএনপির একক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তিনি হলেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি ও ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপি সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম। আ.লীগের মাঠে রয়েছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ। তবে শেখ হাসিনার আত্মীয় ও বর্তমান এমপি নিক্সন চৌধুরীও আ.লীগ বলে দাবি করেন। এলাকার ভোটারদের সাথে কথা হলে তারা জানান, এ আসনে মূল ভোটযুদ্ধ হবে ত্রিমুখী। বিএনপির একক প্রার্থী হওয়ায় এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূল নেতা খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম, আ.লীগের কাজী জাফরউল্লাহ ও বর্তমান এমপি মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাপক গণসংযোগ করছেন আ.লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ। তিনিই দলের মনোনয়ন পেতে পারেন বলে মনে করছেন ভোটাররা। তিনি নিয়মিত এলাকায় আসছেন গণসংযোগ করছেন। গত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হন মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী। তিনি শেখ হাসিনার আত্মীয় বলে নৌকার মনোনয়ন পেতে পারেন।
কাজী জাফরউল্লাহ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নিক্সন চৌধুরী আ.লীগের একই ঘরানার লোক। সে ক্ষেত্রে আ.লীগের ভোট দু’ভাগ হচ্ছে অন্যদিকে কাজী জাফরউল্লাহ ছোট ভাই কাজী হেদায়েতউল্লাহ সাকলানও প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ফজলে সোবাহন শামীম বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে জোরে মাঠে নেমেছে সকল বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের একক প্রার্থী। এ ছাড়া খন্দকার সেলিম এলাকায় স্বচ্ছ ইমেজের মানুষ হিসেবে পরিচিত। তৃণমূল থেকেই মাঠ তৈরি করছেন তিনি।
এই আসনে প্রচার-প্রচারণায়ও এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল নেতা ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি শিল্পপতি আলহাজ খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম। তিনি বিএনপির একক প্রার্থী হওয়ায় তিন উপজেলার সকল বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা তার সাথে রয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি এলাকার ছেলে তার বাড়ি ভাঙ্গা উপজেলা সদরে। তার এলাকায়ও ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। গত নির্বাচনেও তার প্রস্তুতি ছিল। বিএনপির নির্বাচনে না যাওয়ায় তার নির্বাচন করা হয়নি। পরে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন করে তার প্রমাণ দিয়েছে। এক উপজেলা হতে তিনি প্রায় ৩০ হাজার ভোট পেয়েছে। তিনি এবার বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থী সব নেতাকর্মীরা তার সাথে রয়েছে। তিনি এক উপজেলা নির্বাচন করে বিএনপির পক্ষে যত ভোট পেয়েছে বিগত দিনে এ আসনে কোনো বিএনপির মনোনিত প্রার্থীও এত ভোট পায়নি। তিনি যেভাবে মাঠ তৈরি করছেন তার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।
এলাকার বিএনপির নেতারা মনে করেন তিন উপজেলায় বিএনপিরও বেশ ভোট রয়েছেন। গত নির্বাচনে তারা না থাকায় তাদের সব ভোট স্বতন্ত্র প্রার্থী পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে। এবার তারা নির্বাচন করলে তাদের ভোট বিএনপির মনোনিত প্রার্থী পাবেন।
মিষ্টভাষী সাদালাপি নেতা হলেন খন্দকার সেলিম, তিনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি দীর্ঘদিন মানুষের পাশে থেকে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকায় তিনি সমাজিক কর্মকান্ড করেন দলমতের ঊর্র্ধ্বে উঠে। তিনি মসজিদ গড়েন-মন্দিরে অর্থ দেন। এলাকার যে কোনো প্রান্তে কারো ঘরবাড়ি আগুনে পুড়লে সেখানে হাজির হন সেলিম। বসতবাড়ি নির্মাণে সহায়তা করেন। নির্বাচনী এলাকার মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে লেগে আছে তার হাতের ছোঁয়া। এলাকার বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ান তিনি আপনজনের মতো। ইতোমধ্যেই নির্বাচনী এলাকায় কর্মীবান্ধব নেতার খ্যাতি পেয়েছেন তিনি। তিনি নিয়মিত এলাকায় আসছেন, গণসংযোগ করছেন। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছেন।
দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী। খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম বলেন, দেশে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আর সাধারণ ভোটারা ভোট দিতে পারলে সারা দেশে বিএনপির প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। দেশের জনগণ ভোট দিতে পারলে ভোটের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাবে। তিনি আরো বলেন, তিনটি উপজেলায় যে পরিমাণে বিএনপির নেতাকর্মী রয়েছে, তারা সবাই আমার সাথে রয়েছে। দলীয় মনোনয়ন পেলে আমাকে জনগণ তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে। এ ব্যাপারে জনগণের প্রতি আমার শতভাগ আস্থা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।