Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুষ্টিয়া সীমান্ত দিয়ে আসছে মাদক

কুষ্টিয়া থেকে এস এম আলী আহসান পান্না | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর চলমান অভিযানে কুষ্টিয়ায় এখনো বড় কোনো মাদক ব্যবসায়ী ধরা পড়েনি। মাদকবিরোধী অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে পাঁচজন নিহত হলেও তা এখন থমকে গেছে। প্রায় ডজন খানেক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হওয়ার পর মূল হোতারা চলে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। অনেকেই প্রশাসনের সাথে আঁতাত করে গাঁ ঢাকা দিয়েছে। এ ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ করেছেন কুষ্টিয়ার সুশীলসমাজ। মাস তিনেক আগে প্রশাসন মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেও এখন প্রশাসনের স্থবির অবস্থার কারণে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের দুর্বলতার কারণেই কুষ্টিয়ায় ফের মাদকদ্রব্য ঢুকছে।
সূত্রমতে, কুষ্টিয়া পুলিশের গোয়েন্দা তালিকায় জেলার ছয় উপজেলার ১৫৭ জন ছোট-বড় মাদক ব্যবসায়ীর মোবাইল নম্বরসহ নাম রয়েছে। এর মধ্যে শীর্ষে অবস্থান সীমান্তবর্তী উপজেলা দৌলতপুরের। এখানে পুরো তালিকার অর্ধেকরও বেশি মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের হিসাবে এর সংখ্যা ৮১ জন। এরপরই রয়েছে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা। শহর, শহরতলী এবং উপজেলা মিলে এখানে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে মাত্র ৩২ জনকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এর সংখ্যা কম মনে হলেও কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়া আর লাহিনী পাড়া অর্থাৎ কুষ্টিয়া শহরতলী এসব এলাকা ধরে কুমারখালী উপজেলায় ২২ জন মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে পুলিশের তালিকায়। এরপর রয়েছে মিরপুর উপজেলায় ১৩ জন এবং ভেড়ামারাতে ছয়জন। আর সবচেয়ে কম মাত্র তিনজন মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে খোকসা উপজেলায়।
পুলিশের এই তালিকায় অনেক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী কারবারীদের নাম নেই বলে জানা গেছে। এ ধরনের ব্যবসা চলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে, সে সব সিন্ডিকেটের শীর্ষে বেশ কিছু ক্ষমতাবান রাজনৈতিক নেতা বা নেতার আশির্বাদ রয়েছে। অথচ এই তালিকায় তেমন কোনো ব্যক্তির নাম খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাদকসেবী জানিয়েছে, শুধু মিরপুর উপজেলার পোড়াদহতেই ২০ জনের বেশি সক্রিয় ব্যবসায়ী রয়েছে। কুমারখালীর ছেঁউড়িয়া, মন্ডলপাড়া এবং লাহিনী এলাকায় ৩০ জনের বেশি মাদকের আড়তদার রয়েছে।
ভারতীয় সীমান্তে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ৪৬ কিলোমিটার এলাকা বিস্তৃত। এর মধ্যে ১৮ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া। বাকি ২৮ কিলোমিটার ‘অরক্ষিত’ উন্মুক্ত। সীমান্তের ২৮ কিলোমিটার অরক্ষিত-উন্মুক্ত জায়গা দিয়েই প্রতিদিন পানির মতো চলে আসছে মাদক, অস্ত্র ও ভারতীয় পণ্য। সীমান্তে এ চোরাচালান রোধে বিজিবি ও বিএসএফ প্রায়ই বৈঠক করলেও কোনো ফল হয়নি। উন্মুক্ত জায়গা দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার হয়ে এবং বর্ষাকালে নৌকায় করে মাদক পাচার করছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘অরক্ষিত’ সীমান্ত দিয়ে দেশে প্রতিদিনই ভারতীয় মদ, ভারতীয় বাংলা মদ, গাঁজা, ফেন্সিডিল, হেরোইন ও বলবর্ধক বড়িসহ নানা নেশাদ্রব্য ঢুকছে। এসব মাদক পাচারের কাজে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে নানা বয়সী নারীরা জড়িয়ে পড়েছে। এসব মাদকবন্ধে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এমন দাবি জেলার সুশীল সমাজের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাদক

২২ অক্টোবর, ২০২২
২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ