Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটছে কুমারদের

ঝিনাইগাতী (শেরপুর) থেকে এস.কে সাত্তার : | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

বাজারে রকমারি প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে আজ বিলুপ্তির পথে গ্রামবংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। ফলে দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় ঝিনাইগাতীতে ও মৃৎশিল্পীরা এখন বেকার হয়ে পড়েছে। তাদের ঘরে এখন চলছে হাহাকার। এক সময় জমজমাট থাকা পাড়া যেন হারিয়েছে প্রাণ। বদলে যাচ্ছে কুমারপাড়াগুলোর দৃশ্যপট। দুর্দিন নেমে এসেছে কুমারদের জীবনে। করছেন দুর্বিষহ জীবনযাপন। তাদের তৈরী বাসন-কোসন প্লাস্টিকের তৈরি সামগ্রীর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারার কারণে অনেকেই বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে বাধ্য হয়েই চলে যাচ্ছেন অন্য পেশায়। ঝিনাইগাতীর চাপাঝোড়া ও বানিয়াপাড়ায় এ পেশার সাথে জড়িত রয়েছে অর্ধশতাধিক কুমার পরিবার। সরেজমিন কুমারপাড়ায় গিয়ে জানা যায়, কুমার-কুমারী ও তাদের পরিবার-পরিজনের কষ্টের করুন কাহিনী। অর্ধাহার- অনাহারে এখন দিন কাটছে তাদের। শুধু যে তাই, তা কিন্তুু নয়, অনেকেই অভাবের তাড়নায় ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের অসচেতনতার চেয়ে চরম দারিদ্র্যতাই সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কথা হয় পাল পাড়ায় মাটির বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির কাজে ব্যস্ত এক গৃহবধূর সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই গৃহবধূ এই প্রতিনিধিকে জানান, ‘এখন আর আগের মতো আমাগো কুমার পাড়ার আয়-রোজগার নেই। আগে আমরা চরকা দিয়ে বিভিন্ন রকম বাসন-কোসন ও খেলনা তৈরি করতাম। কিন্তু এখন চরকা ব্যবহার করা হয় না। কারণ চরকা দিয়ে জিনিসপত্র তৈরি করে ভালো দাম পাওয়া যায় না। তাছাড়া এখন আমাদের মাটি ও কিনে আনতে হয়। তারপর দ্রব্যমূল্যে যে আগুন, তাতে চোখে এখন আর পথ দেখিনা। শুধু পেটে-ভাতে বাঁচতে পারলেই বাঁচি। যৎ সামান্য আয়ে সংসার টিকিয়ে রাখাই কঠিন। বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন যখন সামনে আসে তখন প্রার্থীদের নানান প্রতিশ্রুতির জোয়ারে ভাসে পুরো কুমারপাড়া। কুমার পাড়ার সচেতন মানুষদের দেয়া বিভিন্ন দাবি দাওয়া পূরণেরও আশ্বাস দেয়া হয়। কিন্তু নির্বাচন যায়- নির্বাচন আসে। প্রার্থীরা বিজয়ী ও হন। অথচ সেই আগের মতই অবহেলিত রয়ে যায় কুমার পাড়া। ওই পাড়ার বাসিন্দারা আর ও জানান, এ পেশাটি টিকিয়ে রাখার জন্য একাধিকবার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু কোন ফল পাওয়া যায়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৃৎশিল্প

১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ