পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
হবিগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নুরপুর ইউনিয়নের সুরাভই গ্রামের মৃৎশিল্পের জড়িত কুমার সম্প্রদায়ের পরিবারদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পেশা হিসেবে ছিল মাটির তৈরী বিভিন্ন জিনিস। বর্তমানে আর্থিক সংকটসহ বহুমুখি সমস্যার কারণে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এবং ধীরে ধীরে কালের আর্বতে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী কুমার সম্প্রদায়। নুরপুর গ্রামের প্রায় ২৫টি কুমার পরিবার মৃৎশিল্পের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রয়োজনীয় অর্থাভাবে এখানকার কুমার পরিবারগুলো নেই কোন আধুনিক মেশিন ও সরঞ্জাম। মাটির থালা-বাসন, হাড়ি-পাতিল, কলস, ফুলের টব, দই বাটি ও নানা ধরণের খেলনাসহ মৃৎশিল্প তৈরী করাই তাদের প্রধান কাজ। কালের বিবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী কুমার সম্প্রদায়। লাভজনক না হওয়ায় অনেক কুমার তাদের বাবা-দাদার পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে গেছেন। মৃৎশিল্পের প্রধান উপকরণ হচ্ছে- এঁটেল মাটি, জ্বালানী কাঠ, শুকনো খড়। কুমার পেশার উপর নির্ভর করে পরিবার পরিজন নিয়ে উন্নত জীবন যাপন সম্ভব হচ্ছে না বলে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে এখন অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন। কেউ আবার কৃষি কাজের উপর নির্ভর করে জীবন যাপন করছেন। কুমাররা সাধারণত ফাল্গুন থেকে জ্যৈষ্ঠ এই চার মাস মৃৎশিল্পের তৈরী করে থাকেন। এ সময় কুমার সম্প্রদায়ের লোকেরা কোনো মতে দু’বেলা খেয়ে বেছে রয়েছেন। বাকি ৮ মাস চরম কষ্টে তাদের জীবন যাপন করতে হয়। তবু পূর্বপুরুষের পেশাকে টিকিয়ে রাখতে শত কষ্টে মাঝেও প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে এ শিল্পকে আকড়ে ধরে রয়েছেন। তাছাড়াও বর্তমান আধুনিক যুগের প্লাস্টিক সামগ্রীসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পারায় এই শিল্পে ধ্বস নেমেছে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় হারিয়ে যাবে প্রাচীন এই মৃৎশিল্পের অস্থিত্ব। এ বিষয়ে মৃৎশিল্প কারিগর সুভাস পালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক সময় মাটির তৈরীর জিনিস খুব প্রচলিত ছিল। আধুনিক যুগে এ প্রচলন নেই বললেই চলে। মাটির জিনিসের কদরও ছিল বেশী। অমরা দিন দিন নানা সমস্যায় ভুগছি। আগের মত এখন ক্ষেতে আর মাটি পাওয়া যায় না। এছাড়াও জ্বালানি কাঠ বা খড়ও পাওয়া যাচ্ছে না। এখন শুধু মাটির তৈরী দই টব ও খেলনা বিক্রি করে কোন রকম জীবন জীবিকা নির্বাহ করছি। কিন্তু লাভজনক না হওয়ায় এখন এ পেশায় আমাদের তেমন আগ্রহ নেই। বাপ দাদার এ পেশায় আমাদের নতুন প্রজন্ম আগ্রহী নয়। আমাদের ছেলে মেয়ারা এখন পড়ালেখা করে উচ্চ শিক্ষিত হতে চায়। তারা উন্নত জীবন যাপন করতে ভাল চাকরি করতে ইচ্ছুক। এদিকে চুনারুঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাহুবলের সীমান্তে লাখরিপাড়া গ্রামে প্রায় ২০টি পরিবার প্রাচীনকাল থেকেই এ পেশায় নিয়োজিত। বর্তমানে মাঠির তৈরী হাড়ি-পাতিল বাজারজাতে ধ্বস নামায় এখন এ পেশা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।