পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাজারে প্লাস্টিক সামগ্রীর ভিড়ে যশোরের চৌগাছায় মৃৎশিল্পীদের ঘরে ঘরে হাহাকার। প্লাস্টিক সামগ্রী প্রায় বিলুপ্তির পথে ঠেলে দিচ্ছে চিরচেনা মৃৎশিল্পকে। দেশের অন্যান্য এলাকার মতো মাটির তৈরি সামগ্রীর ব্যবহার কমে যাওয়ায় বদলে যাচ্ছে কুমারপাড়ার দৃশ্যপট। দুর্দিন নেমে এসেছে কুমারপাড়ার সংসার জীবনে। নতুন কর্মসংস্থানের খোঁজে অনেকে গ্রাম ছাড়ছেন।
উপজেলার সবচেয়ে বড় কুমারপাড়া ধুলিয়ানী, হাজরাখানা, সাঞ্চাডাঙ্গা, নিয়ামতপুর ও পৌর এলাকায় ইছাপুর গ্রাম। এ পেশার সাথে জড়িত অর্ধশতাধিক কুমার পরিবার। সরেজমিন দেখা গেছে কুমার ও তাদের পরিবার পরিজনের কষ্টের কাহিনি। অনাহারে-অর্ধাহারে তাদের দিন কাটছে। কুমারপাড়ার শিশুরা ঝরে পড়ছে শিক্ষা থেকে।
শিশুদের শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ার ক্ষেত্রে যত না অভিভাবকদের অসচেতনতা, তার চেয়ে বেশি দায়ী অভাব-অনটন। এছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার সুযোগ পেলেও স্কুল-কলেজ দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় লেখাপড়ার উৎসাহ হারিয়ে বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়ছে শিশুরা।
ধুলিয়ানী গ্রামের মাটির সামগ্রী তৈরির কাজে ব্যস্ত গৃহবধূ পুতুল রানী পাল বলেন, বর্তমানে কুমারপাড়ার আয় নেই বললেই চলে। এক সময় বর্ষা মৌসুম ছাড়া প্রায় সারা বছর আমরা চরকা দিয়ে ভাঁড়, কলস, হাঁড়িসহ বিভিন্ন রকম বাসন-কোসন ও খেলনা তৈরি করতাম। কিন্তু এখন চরকা ব্যবহার হয় না। কারণ বর্তমানে মাটির তৈরী ভাড় কলস ইত্যাদি তেমন বিক্রি হয় না।
তিনি আরও বলেন, চরকা দিয়ে জিনিসপত্র তৈরি করে ভালো দাম পাওয়া যায় না। কারণ প্লাষ্টিক সামগ্রীতে বাজার সয়লাব। একদিকে মাটি, খড়ি-খেড় নগদ টাকা দিয়ে কিনতে হয়। নগদ অর্থ ব্যয় করে মাটির জিনিস তৈরী করলেও বাজারে আর তেমন চলে না। তারপরও বাবা-দাদার পেশা হিসেবে এ মাটির জিনিস তৈরী করে থাকি। যা করে আমরা শুধু সামান্য আয়ে সংসার টিকিয়ে রেখেছি। তবে বরাবরের মতোই মৃৎশিল্পীরা অবহেলিত।
হাজরাখানা গ্রামের নিমাই পাল বলেন, এ পেশাটি টিকিয়ে রাখার জন্য আমরা একাধিকবার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো ফল পাওয়া যায়নি। সরকারি-বেসরকারি অবহেলার কারণে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না এই পেশার মানুষ। ফলে অচিরেই শিল্পটি বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কেবলমাত্র পূর্ব পুরুষের পেশাকে টিকিয়ে রাখার জন্যই এখনো অনেকে শত কষ্টের মধ্যেও এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে আছেন।
মৃৎশিল্পী হারান পাল বলেন, সরকারি-বেসরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধাই তারা পান না। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা শুধু নির্বাচনের সময় বিভিন্ন প্রতিশ্রæতি দিলেও নির্বাচনের পরে সব ভুলে যান। বাজারে প্লাস্টিক সামগ্রীর ভিড়ে প্রায় বিলুপ্তির পথে দেশের চিরচেনা মৃৎশিল্প। এভাবে চলতে থাকলে একদিন এই শিল্প বাস্তবে নয়, ইতিহাসের পাতায় পাওয়া যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।