Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন তুরস্কের শরণার্থীদের ঢল নামার আশঙ্কা

আমরা ধর্মপরায়ণ এক যুব প্রজন্ম তৈরি করতে চাই : এরদোগান

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, ‘আমরা ধর্মপরায়ণ এক যুব প্রজন্ম তৈরি করতে চাই। আপনারা কী মনে করেন যে একেপি পার্টি একটি ইসলামবিদ্বেষী প্রজন্ম তৈরি করবে? এটা কখনও আমাদের মিশন হতে পারে না। আমরা এমন এক প্রজন্ম তৈরি করতে চাই, যারা রক্ষণশীল গণতন্ত্রবাদী ও গণতান্ত্রিক। যারা নাস্তিক নয়; জাতির নীতি-নৈতিকতা ও মূলবোধকে যারা বুকে লালন করবে।’ ২০১৩ সালে এরদোগান সরকার হিজাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। ২০১৫ সালে তুরস্কের সংসদের ২৫তম অধিবেশনে আধুনিক তুরস্কের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২১ জন নারী সংসদ সদস্য হিজাব পরে শপথ বাক্য পাঠ করেন। একই বছরের আগস্টে ‘আয়েশা গোরসেন’ প্রথম হিজাবি নারী হিসেবে তুরস্ক সরকারের মন্ত্রী নিযুক্ত হন। প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট এরদোগান দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থানের খোলনলচে পাল্টানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তার প্রচেষ্টায় আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্ক কর্তৃক প্রবর্তিত অনেক নিয়ম-কানুনই আর বলবৎ নেই। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন নির্দেশনা বাস্তবায়ন করল দেশটির সরকার। নতুন নির্দেশনায় দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে মসজিদ তৈরি করা হয়েছে। দেশের সব স্কুলে মসজিদের পাশাপাশি অজুর স্থানসহ ডাইনিং রুম, প্রশাসনিক কার্যালয়, ক্যান্টিন, রান্নাঘর, আর্কাইভ রুম ও যথেষ্ট পরিমাণ টয়লেট থাকারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অপর এক খবরে বলা হয়, সিরীয় সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা ও অস্ত্র মোতায়েন করছে তুরস্ক সরকার। ইদলিবে তাদের মিত্রদের সঙ্গে আসাদবিরোধীদের দমনের অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকালে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় হামা প্রদেশ সীমান্তবর্তী তুর্কি ঘাঁটি মোরেকে তুরস্কের এক সামরিক বহর অবস্থান নেয়। এছাড়া হাতায় প্রদেশের একটি বেসামরিক বিমানবন্দরে সামরিক বিমানে করে অনেক তুর্কি সেনাকে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে তারা কোনদিকে অগ্রসর হচ্ছে তা বোঝা যায়নি। আসাদের সরকার সিরিয়াজুড়ে বিদ্রোহীদের দমন করতে পারলেও ইদলিবে এখনও বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, দেশটির দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধের শেষ বড় ধরনের লড়াই হবে এখানেই। অপর এক খবরে বলা হয়, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত প্রদেশ ইদলিবে বিদ্রোহীদের দমনে দেশটির সরকার ও তাদের মিত্রদের করা হামলায় শরণার্থীর ঢল নামার আশঙ্কা করছে তুরস্ক। তাই সিরিয়া সীমান্তে মোতায়েন করা তুর্কি সীমান্তরক্ষীদের সতর্ক করার পাশাপাশি সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করতে মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি সেনা। তুরস্কের একটি নির্ভরযোগ্য সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে আর্ন্তজাতিক সংবাদমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, ইদলিবে এখনও ১০ হাজার আল-নসুরা ও আল-কায়েদা সদস্য অবস্থান করছে। সিরিয়ার সরকারি বাহিনী জানিয়েছে, তারা বিদ্রোহীদের শেষ শক্তিশালী ঘাঁটি ইদলিবে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইদলিবে সরকারি বাহিনীর হামলার মুখে ইতোমধ্যে ৩০ হাজারের বেশি বাসিন্দা উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক। সোমবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সরকারি বাহিনীর হামলার মুখে উদ্বাও হওয়া বেশিরভাগ মানুষই ১ থেকে ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। দুজারিক বলেন, ‘আমরা ইদলিবের ৩০ লাখ বাসিন্দাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন আছি। তুরস্কে ইতোমধ্যে ৩৫ লাখ সিরীয় শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে, সিরিয়ার ইদলিবে বেপরোয়া হামলা না চালাতে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে হুঁশিয়ারি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়া ও ইরানের সহায়তায় ওই অঞ্চলে বেপরোয়া হামলায় মানবিক সংকটের পাশাপাশি লাখ লাখ লোক নিহত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। তবে বাশার আল-আসাদ ইদলিব পুনরুদ্ধার করতে ধাপে ধাপে আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই প্রদেশের আশপাশের এলাকাগুলো আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত বিদ্রোহীদের দখলে থাকা শেষ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। যেখানে প্রায় ৩০ লাখ বেসামরিক লোকের বসবাস। এদিকে, শরণার্থীর ঢল নামার আশঙ্কায় তুরস্কের দক্ষিণ পূর্ব সীমান্তের ৫০ কিলোমিটার দূরে হাতয় প্রদেশের একটি বিমানবন্দরে সৈন্যদের পৌঁছতে দেখা যায়। তবে এসব সৈন্য সীমান্ত অতিক্রম করবে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যতিও তুরস্ক ইতোমধ্যে সিরিয়া থেকে আসা প্রায় ৩৫ লক্ষ শরণার্থীকে জায়গা দিয়েছে। তাই নতুন করে আর কোন শরণার্থী নিতে চাইছে না দেশটি। দেশটির একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেটিন গুরকান বলেন, এ ধরনের সৈন্য সমাবেশের উদ্দেশ্য হলো নিরাপত্তা জোরদার করা যাতে সীমান্ত দিয়ে নতুন করে আর শরণার্থী প্রবেশ করতে না পারে। এরাবিয়ান জার্নাল, আনাদোলু, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শরণার্থী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ