মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে নেপাল-চীন যৌথ সামরিক মহড়া শুরু হতে যাচ্ছে। নেপাল ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ভারতের আয়োজনে পুনেতে শুরু হওয়া বিমসটেক সামরিক মহড়ায় যোগ দিতে অস্বীকার করার পর চীনের সাথে তারা সামরিক মহড়ায় অংশ নেয়ার কথা জানা গেল। বিষয়টি ভারতকে ক্ষুব্ধ করেছে।
নেপালের সেনাবাহিনির মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোকুল ভান্ডারি সোমবার বলেন, ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীনের চেংডুতে নেপাল ও চীনের মধ্যে সাগরমাথা ফ্রেন্ডশিপ-২ নামের এ ১২ দিন ব্যাপী সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। এর প্রধান লক্ষ্য হবে সন্ত্রাস দমন অভিযান।
গত বছরের এপ্রিলে প্রথম নেপাল-চীন সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। চীনের সাথে নেপালের ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা সহযোগিতা ভারতে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। এদিকে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে পুনেতে শুরু হওয়া প্রথম বিমসটেক সামরিক মহড়ায় যোগদানে অস্বীকৃতি জানানোর পরই চীনের সাথে নেপালের এ সামরিক মহড়া আয়োজনের কথা জানা যায়।
কাঠমান্ডু থেকে পাওয়া খবরে জানা যায় যে নেপাল ভারত সরকারের বিমসটেক দেশগুলোর সামরিক মহড়ার আয়োজনে খুশি নয়।
ভান্ডারি বলেন, চীনের সাথে সামরিক মহড়ায় মাত্র ২০ জন নেপালি সৈন্য অংশ নেবে। তার অর্থ এই যে নেপাল ভারতকে দেখাতে চায় যে তারা চীনের সাথে বড়মাপের কোনো সামরিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে না। এর আগে নেপাল-ভারত যৌথ সামরিক মহড়া সূর্য কিরণ-এ ৩শ’ নেপালি সৈন্য অংশ নিয়েছিল। ভারতীয় গণমাধ্যমে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলিকে চীনপন্থী হিসেবে দেখা হয়। এদিকে জানা গেছে যে সার্ক শীর্ষ বৈঠক প্রক্রিয়ার উপর থেকে বাধা তুলে নিতে নেপাল ভারতকে চাপ দিচ্ছে। ২০১৬ সালে সার্ক শীর্ষ বৈঠক পাকিস্তানে অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও ভারতের কারণে তা হয়নি। সার্কের বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে নেপাল সার্কের কার্যক্রমের পুনরুজ্জীবন চায়।
কাঠমান্ডুর একটি সূত্র জানান, ভারতকে বিমসটেককে সার্কের বিকল্প হিসেবে দেখার বিষয়টি অবশ্যই ছাড়তে হবে। নেপালের একজন কর্মকর্তা বলেন, সন্ত্রাসের প্রতি গুরুত্ব আরোপ এক জিনিস আর সামরিক মহড়ায় যোগদান আরেক জিনিস। সমরকার ও বিরোধী দল নিশ্চিত নয় যে বিমসটেক এ ধরনের মহড়ার মত সংস্থা।
এদিকে আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, ১০ সেপ্টেম্বর থেকে পুণেতে শুরু হওয়া বিমস্টেকভুক্ত দেশগুলির যৌথ সামরিক মহড়ায় নেপাল যোগ না দেয়ায় ভারত ক্ষুব্ধ হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে যে চীনের ইন্ধনেই কি বিমসটেক সামরিক মহড়ায় যোগ দিল না নেপাল? উল্লেখ্য, অনিবার্য কারণ দেখিয়ে এ সামরিক মহড়ায় আসেনি থাইল্যান্ডও। এই মহড়ার পরে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর ভারতেই বিমসটেকভুক্ত রাষ্ট্রগুলির সেনাপ্রধানদের দু’দিনের সম্মেলন হবে। সেখানেও নেপালের সেনাপ্রধান উপস্থিত থাকবেন না।
এ গোটা বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ নয়াদিল্লীর সাউথ ব্লক। চীনের পরোক্ষ হস্তক্ষেপেই এই ঘটনা ঘটছে বলে ভারত মনে করছে। কিন্তু সে কথা এখনই প্রকাশ্যে না এনে যতটা সম্ভব সৌজন্য বজায় রেখে ক‚টনৈতিক চ্যানেলে নেপালের কাছে নিজেদের উষ্মার কথা নয়াদিল্লী প্রকাশ করেছে বলে সূত্রের খবর।
সা¤প্রতিক বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন দেশগুলিকে নিয়ে নিরাপত্তা সহযোগিতার একটি অবিভক্ত পরিসর গড়ে তোলার ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সার্ক-এ পাকিস্তান থাকার কারণে যে বিষয়গুলি নিয়ে উদ্যোগী হওয়া সম্ভব হয় না সেগুলিকেই বিমস্টেকের মঞ্চে জোর দিতে চাইছে সাউথ ব্লক। কিন্তু বিমসটেকের অন্যতম সদস্য নেপালের এমন পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত ছিল না নয়াদিল্লি। এই নেপালই দু’বছর আগে ভারতের ডাকে সাড়া দিয়ে উরি হামলার প্রতিবাদে ইসলামাবাদের সার্ক সম্মেলন বয়কট করেছিল।
নেপালের রাজনৈতিক সূত্রের মতে, শেষ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী অলির নিষেধাজ্ঞায় বাতিল হয়ে গিয়েছে সে দেশের সেনাপ্রতিনিধিদের পুনে সফর। কূটনীতিকদের মতে, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে অলি সরকার বার্তা দিতে চাইছে যে ভারতের উপর সামরিক এবং বাণিজ্যিক নির্ভরতা কমিয়ে আনা হবে।
অতি সম্প্রতি চীনের ৪টি নৌ বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়েছে নেপালকে। একদিকে ভারতকে প্রত্যাখ্যান করা এবং অন্যদিকে চীনকে আরও কাছে টানা -একইসঙ্গে এই দু’টি সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি নিছকই কাকতালীয় নয় বলেই ভারত মনে করছে। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া ও আনন্দবাজার পত্রিকা ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।