রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে মনোনয়ন পেতে ততই বাড়ছে আগ্রহী প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। চট্টগ্রাম-১২ পটিয়াতেও ছড়াচ্ছে সেই উত্তাপ। পটিয়াতে বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনয়ন লড়াইয়ে পুনরায় এগিয়ে রয়েছে বর্তমান ও সাবেক এমপি। তবে তাদের চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত নতুনরাও। শেষ মুহূর্তে দলীয় কোন্দলই ফ্যাক্টর হয়ে দাড়াতে পারে দুই দলে। এ আসনে নৌকার জয়যাত্রা অব্যাহত রাখতে জোরালো প্রস্তুতি নিয়েছে স্থানীয় আ.লীগ। আসন উদ্ধারেও মরিয়া বিএনপি। ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান এমপি শামসুল হক চৌধুরীও দলের সম্ভাব্য শক্তিশালী প্রার্থী। তবে দলীয় মনোনয়ন পেতে তৎরপতা চালাচ্ছেন বিজিএমইএ সহ-সভাপতি ও দক্ষিণ জেলা আ.লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. নাছির, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বদিউল আলম, সাবেক মহিলা এমপি ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আ.লীগের সভাপতি চেমন আরা তৈয়ব, দক্ষিণ জেলা আ.লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক এড. আবদুর রশিদ।
বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে দু’বার নির্বাচিত সাবেক এমপি গাজী মুহাম্মদ শাহজাহান জুয়েল। তাকে ঠেকাতে মাঠে নেমেছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইদ্রিছ মিয়া জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুল আলম মাস্টার। ২ দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ আসনে আ.লীগ ও বিএনপির মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্ধিতা হবে।
আ.লীগের বর্তমান এমপি শামসুল হক চৌধুরী জানান, তার ২ মেয়াদে এখন পর্যন্ত পটিয়ায় ২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। আরও ৩০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে। পটিয়া আ.লীগে কোনো কোন্দল নেই বলে তিনি দাবি করেন। স্থানীয় আ.লীগও তার নেতৃত্বে আস্থাশীল বলে জানান তিনি। তবে নির্বাচন ঘিরে একটি মহল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তার বিশ্বাস নেত্রী তার ওপর আস্থা রয়েছে এবং তাকে পুনরায় মনোনয়ন দেবেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আ.লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও বিজিএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাছির ছাত্র জীবন থেকেই ছাত্রলীগ রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি পটিয়া থেকে আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। দলীয় হাইকমান্ড শামসুল হক চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়ায় তিনি তার পক্ষে কাজ করেন। সাম্প্রতিক সময়ে আ.লীগের তৃণমূলে দ্বিধা বিভক্তি দেখা দিলে তৃণমূলের বিশাল নেতা কর্মীর একটি অংশ তার সাথে কাজ করছে। তিনি জানান, বর্তমান এমপির কারণে দলের নেতা কর্মীদের মূল্যায়ণ হয়নি। বরং নির্যাতনের শিকার। তৃণমূলের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি এই বার মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি মনোনয়ন পেলে জয়ী হয়ে পটিয়ায় আ.লীগকে আরো সুংগঠিত করবেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বদিউল আলম। তিনি বলেন, বর্তমান এমপির অনিয়ম ও কর্মীদের নির্যাতন থেকে রক্ষায় আমি পটিয়া থেকে এমপি হতে আগ্রহী। ছাত্রজীবন থেকে আ.লীগের জন্য অনেক ত্যাগ শিকার করেছি। আশা করছি নেত্রী মূল্যায়ন করবেন।
১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পটিয়ায় ধানেরশীষ বিজয়ী হয়। এরমধ্যে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন গাজী শাহজাহান জুয়েল। পটিয়া জুড়ে ১৭ ইউনিয়নে তার একটি বিশাল কর্মীবাহিনী রয়েছে। তার সমর্থিত নেতাকর্মীরা সবসময় তার পক্ষে কাজ করছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে গাজী শাহ্জাহান জুয়েল মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। গাজী শাহ্জাহান জুয়েল বলেন, বিএনপির হাইকমান্ড যোগ্যতা বিবেচনা করে আমাকে মনোনয়ন দেবেন।
বিএনপির অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম জানান, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার পর তিনি পটিয়ায় বিএনপির মাঠ ধরে রেখেছেন। আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়ে তিনি হামলা ও মামলার শিকার হয়েছে। তাকে বেশ কয়েকবার জেলে যেতে হয়েছে। তিনি বর্তমানে মামলার ঘানি টানছে। তাই বিএনপির হাইকমান্ড তাকে এবার মনোনয়ন দেবে বলে তার প্রত্যাশা। তার ধারণা বিএনপি এবার প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল করবে না।
এদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইদ্রিস মিয়া বলেন বিএনপির দুরাবস্তায় তিনি পটিয়ার বিএনপির হাল ধরেছেন। তিনি বিএনপি প্রার্থী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি দাবি করেন নেতাকর্মীদের তিনি সুসংগঠিত করে রেখেছেন, মনোনয়ন পেলে বিজয় উপহার দেবো।
আ.লীগ, বিএনপি, জাতীয় পাটি ছাড়াও সিপিবি থেকে কমরেড শাহ্ আলম, এলডিপি থেকে ব্যবসায়ী এম এয়াকুব আলী, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট থেকে মঈনদ্দীন চৌধুরী হালিমী, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন থেকে ড. বেলাল নুর আজীজি এবার সংসদ সদস্য প্রার্থীর মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।