Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মাদরাসা শিক্ষাবিরোধী চক্রান্তে নেমেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় : পীর সাহেব জৌনপুরী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

কুরবানীর চামড়ার অযৌক্তিক নি¤œমূল্য নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবার মাদরাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ভ‚মিকা নিয়েছে। ২০১৩ সালের তুলনায় এবার কুরবানীর পশুর চামড়ার দর অর্ধেকে নামিয়ে এনে এনজিওদের মাদরাসা শিক্ষা বিরোধী চক্রান্ত সফলের আরেক ধাপ এগিয়ে দিল। গতকাল এক বিবৃতিতে জৈনপুর পীর ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে লবণ মিশ্রিত কুরবানীর পশুর চামড়া প্রতি বর্গফুটের দাম ছিল ৮৫ টাকা থেকে ৯০ টাকা। ছাগলের চামড়ার দর ছিল প্রতি বর্গফুট ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বছর গরুর চামড়ার প্রতি বর্গফুটের দাম নির্ধালন করেছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। আর ছাগলের চামড়ার দর করেছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। যা ২০১৩ সালের তুলনায় অর্ধেক বা তারও কম। এভাবে মন্ত্রণালয় মাদরাসা বিরোধী এনজিওদের চক্রান্ত সফলে সুযোগ করে দিয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন সরকার ব্যবসায়ী বান্দব। তাই ব্যবসায়ীদের সার্থে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
পীর সাহেব বলেন, মন্ত্রী এ কথা বলার সময় কিছু সংখক ট্যানারী ব্যবসায়ীর স্বার্থ রক্ষার কথা বলেছেন। কিন্তু হাজার হাজার মাদরাসার লাখ লাখ ছাত্র, শিক্ষকের কথা ভাবেননি। তিনি বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী চামড়ার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে তাতে চামড়ার পাইকারী ব্যবসায়ীরাও প্রতিবাদ করেছেন।
তিনি আরো বলেন, চামড়ার যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে চামড়া সংগ্রহের যাতায়াতের ব্যায় উঠানোও কঠিন হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে মাদরাসার লাল লাখ ছাত্র শিক্ষক চামড়া সংগ্রহের কাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। আর তখন সারাদেশের আনাচে কানাচের কুরবানীর চামড়া সংগ্রহ করা সরকার এবং ট্যানারী সিন্ডিকেটের পক্ষে সম্ভব হবেনা। ফলে চামড়া শিল্পে ও চামড়া বিষয়ক অর্থনীতিতে বিপর্যয় নেমে আসবে।
তিনি আরো বলেন, কুরবানীর চামড়ার ন্যায্য মূল্যের উপর গরীব এবং ইয়াতীমদের হক্ব আদায়ে দায়ভার নিতে হবে সরকার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ট্যানারী সিন্ডিকেটকে। কারণ কুরবানীর চামড়ার ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করে সংগৃহিত অর্থ গরীব ও ইয়াতিমদের মাঝে বিতরণ করা ওয়াজিব।
পীর সাহেব আরো বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চামড়ার মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে যাওয়ার অজুহাত দেখিয়েছে। অথচ গরুর চামড়ার প্রতি পাউন্ডের আন্তর্জাতিক মূল্য ছিল ৮৬ সেন্ট। বর্তমানে চামড়ার আন্তর্জাতিক মূল্য কমে হয়েছে ৭০ সেন্ট। আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার মূল্য ৩৪ সেন্ট হলে পড়ে বাংলাদেশের চামড়ার মূল্য অর্ধেক কমানো যৌক্তিক। অথচ মাত্র ১৬ সেন্ট দাম কমার কারণে বাংলাদেশ চামড়ার মূল্য অর্ধেক কমিয়ে দেয়া হলো। এটা ভয়ানক চক্রান্তের অংশ। সুতরাং বাংলাদেশে কুরবানীর চামড়ার মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ট্যানারী মালিক নয়, চামড়ার পাইকারী ব্যবসায়ী এবং মাদরাসা শিক্ষা ধারার সাথে সংশ্লিষ্ট ও অভিজ্ঞ ওলামায়ে কিরাম ও পীর মাসায়েখের যৌথ সম্মেলন ডেকে তাদের মতামতের ভিত্তিতে চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। তখনই দেশের ও সকল পক্ষের কল্যাণ হবে। অন্যথায় মাদরাসা শিক্ষা ধারার অস্তিত্ব রক্ষায় লাখ লাখ মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষককে আন্দোলনে নামতে বাধ্য করা হবে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পীর সাহেব জৌনপুরী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ