Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভাড়া চাওয়ায় মেয়র বুলডোজার চালালেন হোটেলে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

রংপুরের পাঁচ তারকা মানের গ্র্যান্ড প্যালেস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে বুলডোজার চালিয়ে ক্ষতিসাধন করার অভিযোগ ওঠেছে রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার বিরুদ্ধে। এস এ টিভি ও গ্র্যান্ড প্যালেস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, অবৈধ সুবিধা না পাওয়ায় রংপুরের একমাত্র পাঁচ তারকা মানের হোটেল গ্র্যান্ড প্যালেসে অসৌজন্যমূলক আচরণ করাসহ বুলডোজার চালিয়ে এর ক্ষতিসাধন করেছেন মেয়র।
গতকাল এস এ পয়েন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সালাউদ্দিন আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্রæপের পরিচালক নুরে আলম রুবেল, গ্র্যান্ড প্যালেস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের উপদেষ্টা হুমায়ন কবির প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, সিটি মেয়রের দু’জন গেস্ট গ্র্যান্ড প্যালেসের দু’টি রুম ভাড়া নেন। পরে চেক-আউটের সময় রুম ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তারা সিটি মেয়রের কথা বলেন। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি ফ্রন্টডেস্ক ইনচার্জের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে তারা মেয়রকে খবর দিলে তিনি স্বয়ং সেখানে এসে উপস্থিত হন এবং বুলডোজার দিয়ে হোটেলটি গুঁড়িয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। পরে তার নির্দেশনা অনুযায়ী বুলডোজার চালিয়ে এর সামনের অংশের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হয়। সালাউদ্দিন বলেন, একজন জন প্রতিনিধি হিসেবে মেয়র এ কাজ করতে পারেন না। এই অনভিপ্রেত অপকর্মের মাধ্যমে মেয়র তাঁর শপথ ভঙ্গ করেছেন বলেন দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করে সালাউদ্দিন বলেন, হোটেলে শুধু বুলডোজার চালিয়ে ক্লান্ত হননি তিনি (মেয়র)। এরপর গত রোববার তার অপকর্ম ঢাকার জন্য ড্রেন পরিস্কারের নাম করে হোটেলের সামনে ময়লা আবর্জনার স্তুপ রেখে দেন। পরে মেয়র হোটেলের সামনের অংশ মাপজোক করে দাবি করেন যে, হোটেলের সামনের অংশের এক-দুই ইঞ্চি জায়গা সিটি কর্পোরেশনের ভিতরে আছে। সালাউদ্দিন বলেন, রংপুরের মেয়রের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ক্ষমতার অপব্যবহারে রংপুরবাসী বিস্মিত ও হতবাক। আমি এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি জানান, এ জায়গা সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ-এর। এটা উনার (এরশাদ) পারিবারিক সম্পতি। ওই জায়গা নিয়ে কোন ঝামেলা নাই। নিস্কন্টক এই জমিতে সঠিক অনুমোদন নিয়েই আমরা এই হোটেল নির্মাণ করেছি।
ওই মেয়রের বিরুদ্ধে আইন-গত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন কিনা? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে সালাউদ্দিন জানান, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জনপ্রতিনিধির আচরন যদি এমন হয় তবে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে। মেয়র সাহেব আমাকে ফোন করলে, আমি ফ্রি থাকার পদক্ষেপ নিতাম। কিন্ত উনি আমার সঙ্গে কথা না বলে হোটেল কর্মচারীদের উপর চড়াও হলেন! তারা তো প্রতিষ্ঠানের নির্দেশ পালন করেছে। নিয়ম মাফিক বিল করেছে। কিন্ত ফ্রি থাকার ইচ্ছা থাকলে আমাকে উনি (মেয়র) কেন বললেন না।
সালাউদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুশুর বাড়ী রংপুর। পল্লী বন্ধু এরশাদ এ রংপুরের সন্তান। বেগম রোকেয়ার ঐতিহ্যবাহী এ রংপুরে পর্যটন আকর্ষণ করতেই আমাদের গ্রæপ থেকে সর্বপ্রথম রংপুরকে বেছে নিয়ে পাঁচ তারকা মানের হোটেলে বিনিয়োগ করেছি। এখানে কর্মসংস্থান হয়েছে, রংপুরবাসী এর সুফল পাচ্ছেন।
তাই এ ধরনের আত্মঘাতি কর্মকান্ড থেকে মেয়রকে বিরত থাকাসহ একজন প্রকৃত জনপ্রতিনিধির গুনাবলী অর্জণের পরামর্শ দেন সালাউদ্দিন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হোটেল

৯ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ