Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাঙ্গুনিয়ায় গয়াল খামারে সাফল্য

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে নুরুল আবছার চেীধুরী | প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

গয়ালের খামার করে সফলতা পেয়েছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া গ্রামের উচ্চ শিক্ষিত মো. এরশাদ মাহমুদ। উপজেলার শেষ সীমান্তে অবস্থিত দুর্গম পাহাড়ি জনপদ সুখবিলাস শাকিলা পাহাড় এলাকায় একটি গয়াল খামার গড়ে তুলেছেন। নিয়মিত পরিচর্যা ও সঠিক ব্যবস্থাপনায় গয়াল দ্রুত বেড়ে ওঠছে। গয়াল খামারে সফলতা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বেকার যুবকদের মধ্যে আরো ব্যাপকহারে খামার করার উৎসাহ দেখা যাচ্ছে।
স্নাতক পাস ১৮ বছরের তরুণ মো. এরশাদ মাহমুদ মেধা ও কঠোর পরিশ্রমে গয়াল খামার প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইচ্ছাশক্তি ও অদম্য সাহস নিয়ে ২০০৮ সালে রাঙ্গামাটি জেলার গহীন বনের এক উপজাতীয় পরিবার থেকে এরশাদ মাহমুদ তিনটি গয়াল ক্রয় করেন। এর মধ্যে একটি বাচ্চা ও একটি মাদি গয়াল। পর্যায়ক্রমে গয়ালের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এখন তার খামারে রয়েছে ৫৬টি গয়াল।
এরশাদ মাহমুদ ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখতেন পুকুর ভরা মাছ, সবুজ বনায়নে সারি সারি বৃক্ষ, খামার ভরা পশু। এসব এখন আর এরশাদ মাহমুদের স্বপ্ন নয়। সুখবিলাস ফিশারিজ অ্যান্ড প্ল্যান্টেশনের প্রতিষ্ঠান ‘গয়াল খামার প্রজনন কেন্দ্র গড়ে তুলে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সফল খামারি এরশাদ মাহমুদ। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাছ চাষের পাশাপাশি বর্তমানে বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণী গয়ালের খামার দেখতে প্রতিদিন ইচ্ছুক জনতার ভিড় বাড়ছে। একজন সফল খামারি হিসেবে এরশাদ মাহমুদ ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে জাতীয় পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ মৎস্য খামারির পুরস্কার নেন।
সাবেক জেলা পিপি ও রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া ইউনিয়নের সুখবিলাস গ্রামের মরহুম অ্যাডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদারের ছেলে মো. এরশাদ মাহমুদ। সাবেক পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপির ছোটভাই তিনি। ১৯৮৮ সাল থেকে মাছচাষ শুরু করেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনাবাদি জমি কিনে অথবা লিজ নিয়ে সেখানে মৎস প্রকল্প গড়ে তুলছেন। প্রায় দেড় শত একর জমির উপর মৎস্য চাষ করছেন তিনি। তার দেখাদেখি অনেকে মৎস চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
সুখবিলাস ফিশারিজ অ্যান্ড প্ল্যান্টেশনের প্রতিষ্ঠান ‘গয়াল খামার প্রজনন কেন্দ্র’ এর ম্যানেজার টিটু কুমার বড়ুয়া বলেন, খামারে পাঁচজন শ্রমিক গয়ালের দেখভাল করছে। গয়ালের খাদ্য হিসেবে ভুসি, লবণ, খুরা কাঁচা ঘাস ও শুকনো খড় দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি গয়ালের গড় ওজন ৫০০-৭০০ কেজি হয়। গত বছর তিনটি মাঝারি গয়াল বিক্রি হয় চার লাখ ৩২ হাজার টাকা।
চলতি বছরের আগস্ট মাসে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় একটি গয়াল বিক্রি হয় এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। কম চর্বিযুক্ত মাংসের কারণে দেশীয় গরুর চেয়ে দ্বিগুণ ওজনের প্রতিটি গয়াল সর্বোচ্চ দুই লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। বাজারে বিক্রি হওয়া গরু-মহিষের তুলনায় গয়ালের দাম একটু বেশি। একেকটি গয়াল ওজনভেদে বিক্রি হচ্ছে। গরু-মহিষের চেয়ে বেশি মাংস পাওয়া যাওয়ায় গয়ালের চাহিদা বাড়ছে বলে ম্যানেজার জানান।
সফল খামারি এরশাদ মাহমুদ বলেন, পাহাড়ের কোলে সবুজ বনায়নের পাশে গয়াল খামার প্রতিষ্ঠা করে হয়েছে। গয়ালের খামারের পাশে গোবর থেকে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরি করা হয়েছে। বায়োগ্যাসের উচ্ছিষ্ট গোবর মাছের খাবার হিসেবে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মৎস্য প্রজেক্টে দেয়া হচ্ছে। গয়াল পালনে মাংসের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বনের পশু গয়াল বিলুপ্ত থেকে রক্ষা পাচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গরু

২৪ জুন, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ