Inqilab Logo

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আরেকটি বাংলাদেশ-ভারত দ্বৈরথ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

সাফ অনুর্ধ্ব-১৫ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে আজ ভারতের মুখোমুখী হচ্ছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। ভুটানের রাজধানী থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে ম্যাচটি। বলা যায়, টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসরে আরেকটি বাংলাদেশ-ভারত দ্বৈরথ দেখবেন ফুটবলপ্রেমীরা। গত ডিসেম্বরে ঢাকার কমলাপুরস্থ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে প্রথম আসরের ফাইনালে এই ভারতকেই ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিল লাল-সবুজের কিশোরীরা।
টুর্নামেন্টের ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পকিস্তানের বিপক্ষে উড়ন্ত সূচনা। গ্রুপের শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষেও দুর্দান্ত খেলেছে বাংলাদেশের কিশোরীরা। শেষ চারে খেলার আগে তাদের চোখ ছিলো টুর্নামেন্টের ফাইনালে। শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যপুরণ হলো লাল-সবুজের মেয়েদের। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ১৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের কিশোরী দল নেপালকে হারিয়েছে ৩-০ ব্যবধানে। সেমিফাইনালে স্বাগতিক ভুটানকে পেয়ে কোন ছাড়ই দেয়নি তারা। শেষ চারে ভুটানকে ৫-০ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় আসরের ফাইনালে পা রাখে বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৫ নারী ফুটবল দল। ৮ মাস পর আবারো টুর্নামেন্টের টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের পথে শেষ বাধা ভারত। যাদের বিপক্ষে প্রথম আসরে দুইবার জয়ের স্মৃতি এখনো তরতাজা বাংলাদেশের কিশোরী ফুটবলারদের।
গেল ডিসেম্বরে সাফের প্রথম শিরোপা জয়ের পর মাত্র কয়েকদিনের ছুটি পেয়েছিলেন মারিয়া মান্ডা, তহুরা, আঁখি, মনিকা, শামসুন্নাহরা। টানা অনুশীলন। মাঝে হংকংয়ে চারজাতি আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। একটি টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে এর চেয়ে ভালো প্রস্তুতি আর কী হতে পারে? মেয়েদের প্রস্তুতিতে চেষ্টার কোনো ঘাটতি রাখেনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। মাঠে মারিয়া-তহুরারা তার প্রতিদানও দিয়ে আসছেন। প্রথম আসরের মতো টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসরেও ম্যাচ বাই ম্যাচ কিশোরীদের নৈপূণ্য মানুষের প্রত্যাশার পারদও উপরে উঠিয়েছে। এখন শেষটা ভালো হলেই হলো। আর সেই শেষটা ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল। জিতলে নারী ফুটবলের ইতিহাস ঐতিহ্যে বাংলাৈদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকা ভারতকে টানা তিনবার হারানো হবে মারিয়াদের। লাল-সবুজের কিশোরীরা ধরে রাখবে দক্ষিণ এশিয়া ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব। পারবে কি বাংলাদেশের মেয়েরা? এই টুর্নামেন্টের তিন ম্যাচে বাংলাদেশের কিশোরীরা যে পারফরম্যান্স করেছে তাতে ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে ফেভারিট তারাই। দেশের ফুটবলপ্রেমীদের প্রত্যাশা চাংলিমিথাংকে এক খন্ড কমলাপুর স্টেডিয়ামের পরিণত করে ভুটানের থিম্পুতেও লাল-সবুজের মেয়েরা জয়ের নিশান উড়াবে। গ্রুপ পর্ব থেকে সেমিফাইনাল- তিন ম্যাচে ২২ গোল করে একবারও নিজেদের জালে বল প্রবেশের সুযোগ দেয়নি বাংলাদেশ দল। এমন ঝড়ের গতিতে এগিয়ে আসা দলটির সামনে ভারতও যে উড়ে যাবে, সে আশা করা যেতেই পারে।
ভারতকে নিয়ে বাংলাদেশের কিশোরীদের ভয়ডর নেই। গত টুর্নামেন্টে লিগ পর্বে তাদেরকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেয়ার পর শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল ১-০ ব্যবধানে। ওই আসরে ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচে চার গোল করা তিনজনই আছেন চলতি টুর্নামেন্টে। শামসুন্নাহার, আনুচিং মগিনি ও মনিকা চাকমারা থিম্পুতেও ভারতকে গুড়িয়ে দিতে পারবেন তো আজ?
ফাইনালকে সামনে রেখে গতকাল সকালে ম্যাচ ভেন্যু চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে ৩৯ মিনিট হালকা অনুশীলন করে বাংলাদেশ কিশোরী দল। অনুশীরল শেষে দলের প্রধান কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন,‘ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে আমার দল তাদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলবে। গ্রুপ পর্ব এবং সেমিফাইনালে মেয়েরা যে পারফরমেন্স দেখিয়েছে, ফাইনালেও তা দেখাবে বলে আমার বিশ্বাস। আমরা ভুটানে এসেছি শিরোপা জিততে। ইনশাল্লাহ শিরোপা নিয়েই দেশে ফিরবো। মেয়েদের সাফল্যের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।’
স্ট্রাইকার তহুরা’র কথা,‘ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে জিততে নিজেদের শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করবো আমরা। আমার স্বপ্ন টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতা। এখানে এসেছি চ্যাম্পিয়ন হতেই। আমি চাই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ফাইনালে গোল করতে। আল্লাহ সহায় থাকলে অবশ্যই তা পারবো।’ অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা বলেন,‘ফাইনাল ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে নিজেদের সেরাটা মাঠে ঢেলে দিতে প্রস্তুত আমরা। সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ম্যাচ জিততে। যত তাড়াতড়ি সম্ভব আমরা গোল করার চেষ্টা করবো। ভারত শক্তিশালী দল। তাদের বেশ ক’জন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় দলে আছেন যারা যে কোন সময় ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে পারে। কিন্তু আমরাও কম নই। যার প্রমাণ প্রথম আসরে দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য এটাই- ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জেতা। সবার কাছে দোয়া চাই, আমরা যেন সেরার খেতাব ধরে রাখতে পারি।’ গোলরক্ষক মাহমুদা আক্তার বলেন,‘ আমি খুব খুশি সেমিফাইনালে স্বাগতিক ভুটানকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা পাওয়ার জন্য। ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে নিজের সেরাটা দিতে প্রস্তুত আমি। গোলরক্ষক হিসেবে গোলবার আগলে রাখবো শেষ তিন ম্যাচের মতই। আমি আশাবাদী টানা দ্বিতীয় শিরোপা জিততে। সবার কাছে দোয়া চাই।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফুটবল

২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ