বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাহুবলে স্ত্রী-সন্তানের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করা হলো না প্রবাসী নাছির উদ্দিনের। প্রবাস থেকে বাড়ি ফেরার পথে ঘাতক বাস চাপায় তার স্বপ্নের করুন মৃত্যু হয়। তাকে রিসিভ করতে আসা সহোদরসহ দুর্ঘটনায় আরো ৫ জন গুরুতর আহত হন। পরে আহতদের মাঝে আব্দুল্লাহ (৪০) নামে অপর যাত্রী বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার রাত ১২টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহুবল সদর সংলগ্ন মোহনা কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন স্থানে।
নিহতরা হলো- উপজেলার চন্দনিয়া গ্রামের নছর উদ্দিনের পুত্র প্রবাসী নাছির উদ্দিন (৪০) ও উপজেলার হরিতলা গ্রামের মুনছব উল্লার পুত্র আব্দুল্লাহ (৪০)। আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে, বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে অপর এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিলীমা আক্তার (৭) নামে এক স্কুল ছাত্রী নিহত হয়েছে। উপজেলার চন্দনিয়া গ্রামের নছর উদ্দিনের পুত্র প্রবাসী নাছির উদ্দিন বিগত ১১/১২ বছর যাবৎ দুবাই দেশে কর্মরত ছিলেন। এ বার ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে তিনি দেশে স্ত্রী-সন্তানসহ স্বজনদের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে ডুবাই থেকে সিলেট আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের অবতরণ করেন। পরে সিলেট থেকে তারা যাত্রীবাহী বাসে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক পথে রওনা হন। রাত পৌঁনে ১২টায় তারা বাহুবল উপজেলা সদরের মৌচাক পয়েন্টে নেমে একটি সিএনজি অটোরিকশাযোগে বাড়ির পথে রওনা হন। সিএনজি অটোরিকশাটি কয়েকশ ফুট দূরবর্তী মোহনা কমিউনিটি সেন্টারের কাছে পৌঁছামাত্র পিছন দিক থেকে আসা দ্রæতগামী শ্যামলী পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৫১৩২) একটি বাস যাত্রাবাহী ওই সিএনজিকে চাপা দেয়। এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস ও সিএনজি দুটোই পার্শ্ববর্তী খাদে পড়ে গেলে প্রবাসী নাছির উদ্দিন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। ঘটনায় আহত হন নিহত নাছির উদ্দিনের সহোদর ইছার উদ্দিন (৩০), একই উপজেলার বালিচাপড়া গ্রামের আছদ উল্লাহর পুত্র নুরুল্লাহ (৪৬), হাবিজপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের পুত্র সেলিম মিয়া (৪০), হরিতলা গ্রামের মুনছব উল্লার পুত্র আব্দুল্লাহ (৪০) ও একই গ্রামের এরাজত উল্লাহর পুত্র সিএনজি চালক শফিক মিয়া (৪০)। আহতদের তাৎক্ষণিক বাহুবল ও পরে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে, প্রবাসী নাছির উদ্দিনকে কাছে পাওয়ার জন্য উদগ্রীব পরিবারের সদস্যদের কাছে মিনিট দশেকের মধ্যেই মৃত্যু সংবাদ পৌঁছে যায়। আনন্দে আত্মহারা পরিবারটিতে নেমে আসে রাজ্যের শোক। রাতের নিরবতা ভেঙে শুরু হয় স্বজন হারানো আর্তনাদ। নিমিষেই ভারী হয়ে ওঠে এলাকার আকাশ-বাতাস।
গতকাল সকালে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় আহত আব্দুল্লাহ (৪০) মৃত্যুবরণ করেন। নিহতদের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। চালক পালিয়ে গেলেও ঘাতক বাসটি আটক রয়েছে। অপর দিকে, মহাসড়কে দ্বিগাম্বর বাজারের অদূরে কালীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অপর এক সড়ক দুর্ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্রী নিলীমা আক্তার (৭) নিহত হয়। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা ৩ ঘন্টা সময় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। নিহত নিলীমা আক্তার উপজেলার হাজীমাদাম গ্রামের খোয়াজ উল্লার কন্যা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় স্কুল ছুটির পর ছাত্রী নিলীমা আক্তার মহাসড়ক পারাপারের সময় সিলেটের দিক থেকে আসা “লন্ডন এক্সপ্রেস” এর একটি যাত্রীবাহী বাস তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই শিশু নিলীমার মৃত্যু হয়। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখলে উভয় পার্শ্বে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে। দুপুর ২টার পর বাহুবল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী ও বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলী ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরোধ তোলে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।