Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ীর পরলোক গমন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৬ এএম

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সুপরিচিত রাজনীতিকদের একজন অটল বিহারী বাজপেয়ী গতকাল স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৫ মিনিেিট মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।
বাজপেয়ীই ছিলেন হিন্দুত্ববাদী বিজেপির প্রথম প্রধানমন্ত্রী।
কিডনিতে সংক্রমণ হওয়ায় প্রায় নয় সপ্তাহ যাবত তিনি দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে ভর্তি ছিলেন। গত বুধবার থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রæত অবনতি হতে থাকে, তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। দু›হাজার নয় সালে স্ট্রোক হওয়ার পর থেকেই তিনি আর কথা বলতে পারতেন না। অবশ্য তার আগেই তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছিলেন। তার সতীর্থরা অবশ্য বলতেন যে, তিনি সবই বুঝতে পারতেন, কিন্তু ভাষায় প্রকাশ করার ক্ষমতা হারিয়েছিলেন।
বাজপেয়ী হিন্দু পুনরুত্থানবাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রচারক ছিলেন, এবং সংঘেরই রাজনৈতিক দল জনসংঘের সদস্য ছিলেন। তবুও তখন থেকেই হিন্দুত্ববাদীদের মধ্যে একজন মধ্যপন্থী বলে তাঁকে মনে করা হতো। তিনি বাংলাদেশের প্রতি ছিলেন বন্ধুবাৎসল।
কানপুরে পড়াশোনা করেছিলেন বাজপেয়ী। তারপরে আইন পড়েছেন। তার বাবা আর তিনি একই বর্ষের ছাত্র ছিলেন, থাকতেনও একই হোস্টেলে। ছাত্রজীবনে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনের জন্য কিছুদিন জেল খাটলেও তারপর থেকেই বিাজপেয়ী হিন্দুত্ববাদী নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর ভক্ত হয়ে পড়েন।
রাজনৈতিক দায়িত্বের মধ্যেও তিনি নিয়মিত কবিতা লিখতেন, প্রচুর বই পড়েতন, আর সিনেমা দেখতে ভালবাসতেন। দলীয় সতীর্থ লালকৃষ্ণ আদভানিকে দিয়ে দিল্লির রিগ্যাল সিনেমা হলে বহু নতুন সিনেমার প্রথম দিনের প্রথম শো দেখতে যেতেন তিনি, সেকথা বহুল প্রচারিত।
তবে সেই লালকৃষ্ণ আদভানিই যখন দলের প্রধান হিসাবে রামমন্দির নিয়ে আন্দোলনের মুখ্য হয়ে উঠলেন, যার পরিণতিতে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে দিয়েছিল, তখন বাজপেয়ীকে বিশেষ মুখ খুলতে দেখা যায় নি।
দু›হাজার চার সালের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকেই নির্বাচনী রাজনীতিতে আর কখনও আসেন নি বাজপেয়ী। একদিকে অসুস্থতাও বাড়ছিল। তারপরেই সক্রিয় রাজনীতি থেকেই সরে গিয়েছিলেন তিনি। আর ২০০৯ সালের স্ট্রোকের পর থেকে তো কথাও বলতে পারতেন না।
তার শেষ যে ছবিটি সর্বশেষ জনসমক্ষে আসে, তা হল ২০১৫ সালে যখন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জী অটল বিহারী বাজপেয়ীকে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ভারতরতেœ ভূষিত করতে নিজে গিয়েছিলেন তাঁর বাসভবনে, সেই ছবিটি।
আর বাক্যহারা হওয়ার প্রায় এক দশক পরে বৃহস্পতিবার সমাপ্ত হল একাধারে রাজনীতিবিদ, সুবক্তা আর কবি অটল বিহারী বাজপেয়ীর জীবন। সূত্র ঃ বিবিসি।
বাজপেয়ীর মৃত্যুর পর তার বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরছে ভারতীয় গণমাধ্যম। ২০০৩-০৪ সালের এমনই একটি ঘটনা প্রকাশ করা হয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে।
ওই সময়ে পাকিস্তান সফরে যাচ্ছিল সৌরভের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দল। একদিকে রাজনৈতিক উত্তেজনা অন্যদিকে চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী পাকিস্তান দলের বিরুদ্ধে সিরিজের চাপ। অটল বিহারী বাজপেয়ী তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী। সৌরভের হাত ধরে একদিকে যেমন তার মনোবল বাড়িয়েছিলেন, তেমনই ভারত অধিনায়কের কানে তুলে দিয়েছিলেন কূটনৈতিক মন্তব্যও।
ভারতীয় ক্রিকেট দলের তৎকালীন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর হাতে একটি ব্যাট তুলে দিয়ে অটল বিহারী বাজপেয়ী বলেছিলেন, শুধু খেলায় নয়, মনও জিতে এসো। শুভকামনা।



 

Show all comments
  • মাহবুব ১৭ আগস্ট, ২০১৮, ১:৪২ এএম says : 0
    এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেন ভারতের আর্দশবাদী হিন্দু নেতা ।অনেক বিশ্লষক মনে করেন, হিন্দু-মুসলিম মৌলবাদীরা থিউরী,আচরণে একই ।তাই ,প্রগতিবাদী মৌলবাদী রা যত দোষ নন্দ ঘোষ বলে,একেতো নাচনি বুড়ি ,তার উপর ঢোলে বারি ,কি নেতিবাচক তথ্য দ্বারা অপব্যাখার অনিন্দ্য শিল্পায়ন করা, যায় ,তার বিচিত্র প্রচারের ব্যাপকতা, মিঃ বাজপায়ী অনুভব করেছিলেন। শান্তির বাণি প্রচারে ইতিহাসের উজ্জল অধ্যায় থাকবেন।ভালো , যা সার্বজনীন ,তা অনুসরনে উপকৃত হতে পারি সবাই ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ