শুধু ঘোষণা নয়, রীতিমতো গেজেটও পাস করা হয়েছে এ বিষয়ে। বুধবার সকালে প্রকাশিত গেজেট সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে মালিকানাধীন কোম্পানির সিগারেট, গাড়ি, চাল, কয়েক ধরণের কসমেটিক্স ও মদ আমদানির ওপর নতুন করে শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের ক্ষেত্রে করা হয়েছে আইনটি। আর ট্রাম্প যেখানে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছিলেন, তুরস্ক সেখানে শতভাগ শুল্ক বৃদ্ধি করলো।
গত ১১ জুলাই জারিকৃত একটি প্রেসিডেন্সিয়াল ডিক্রি সংশোধন করে নতুন ডিক্রি জারি করা হয়েছে এদিন, আর তাতেই বলা হয়েছে নতুন
করে মার্কিন পণ্যে শুল্ক আরোপের কথা। তুর্কি ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাউত ওকতে টুইটার পোস্টে লিখেছেন, ‘আমাদের অর্থনীতির ওপর মার্কিন প্রশাসনের এক তরফা আক্রমণের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন পণ্যগুলোর ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে’।
গত শুক্রবারেই তুরস্কের পররাষ্ট মন্ত্রণালয় বলেছিল, তারা মার্কিন প্রশাসনের এই শুল্কবৃদ্ধির ঘটনার পাল্টা পদক্ষেপ নেবে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হামি আকসয় বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মের লঙ্ঘন। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বের সাথেও মানানসই নয়।
বাস্তবে তাই হলো। ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধের বিরুদ্ধে চীনের মতোই পাল্টা পদক্ষেপ নিলো তুরস্ক। এর ফলে দুই ন্যাটো মিত্র দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরো জটিল হয়ে উঠলো। দুই দেশের সাম্প্রতিক সম্পর্কের যে টানাপোড়েন চলছিলো, তাই বাস্তবে রূপ পেল এই পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের ঘটনায়।
বেশ কিছুদিন ধরেই আঙ্কারা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিলো। সমাধানে একটি পদক্ষেপ নেয়া হলেও কোন অগ্রগতি হয়নি। গত সপ্তাহে একটি তুর্কি প্রতিনিধি দল ওয়াশিংটন থেকে ফিরেছে সম্পর্কে কোন অগ্রগতি ছাড়াই। তুরস্কের হাতে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে আটক থাকা মার্কিন যাজক অ্যান্ড্রু ব্রানসনের মুক্তির বিষয়ে কোন পক্ষই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সরেনি।
যুক্তরাষ্ট্র অনেক দিন থেকেই চাইছে তাকে ফিরিয়ে নিতে। ২০১৬ সালের তুরস্কের অভ্যুত্থান চেষ্টার সাথে জড়িত ও কুর্দি বিদ্রোহীদের সহযোগিতার অভিযোগে ওই যাজকের বিচার চলছে তুর্কি আদালতে। এর প্রতিবাদে দুই তুর্কি মন্ত্রীর ওপর এ মাসের শুরুতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
অন্যদিকে অভ্যুত্থানের মূল পরিকল্পনাকারী ফেতুল্লাহ গুলেনকেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চায় তুরস্ক, কিন্তু সেক্ষেত্রেও রাজি হচ্ছে না ট্রাম্প প্রশাসন।