সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদের ফল আটকে থাকা স্থগিত দুই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলছে।
শনিবার সকাল ৮টার দিকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়, একটানা চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
এদিকে ওই দুই কেন্দ্র ছাড়াও ভোটের ফল সমান হয়ে যাওয়ায় সংরক্ষিত ৭ নম্বর (১৯, ২০ ও ২১) ওয়ার্ডের ১৪টি কেন্দ্রে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদেও পুনঃভোট শুরু হয়েছে। এই ১৬ কেন্দ্রে প্রায় ৩৯ হাজার ভোটার থাকলেও ৩০ জুলাই পরবর্তী নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণায় তেমন উত্তাপ ছিল না।
সকাল থেকে অনেকটা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন হচ্ছে মেয়র পদের ২৪নং ওয়ার্ডের গাজী বুরহানউদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২৭নং ওয়ার্ডের হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। সকাল থেকে এ দুই কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা।
জানা গেছে, মেয়র পদে নৌকা প্রতীকধারী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের চেয়ে
ধানের শীষ নিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী ৪ হাজার ৬২৬ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন।
স্থগিত দুটি কেন্দ্রের ভোট সংখ্যা ৪ হাজার ৭৮৭। ব্যবধানের চেয়ে মাত্র ১৬১টি ভোট বেশি। এ দুটি কেন্দ্রের শতভাগ ভোট প্রদান করা হলেও আরিফুল হক চৌধুরীকে টানা দ্বিতীয়বার মেয়র হতে প্রয়োজন মাত্র ৮১ ভোট। তবে এই দুই কেন্দ্রে ভোটার তালিকায় মৃত ও প্রবাসী ২৯৮ জনের নাম রয়েছে বলে দাবি করেছেন আরিফুল হক চৌধুরী।
ইতিমধ্যে বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে
নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন। এই ২৯৮ জন ভোটারের অনুপস্থিতিতে আরিফ কোনো ভোট না পেলেও ৩০ জুলাই তার প্রাপ্ত ভোটেই ১৩৭ ভোটে বিজয়ী হন। অনাকাক্ষিত কোনো অঘটন না ঘটলে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে আরিফুল হক চৌধুরীই সিলেটের মেয়র হচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্নের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে আরিফের অপেক্ষার প্রহর।
৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী নাজনীন আক্তার কণা (জিপ গাড়ি) ও নার্গিস সুলতানা রুমি (চশমা) সমান ৪ হাজার ১৫৫ ভোট পান। ফলে সিটি কর্পোরেশনের ১৯, ২০ ২১নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ৭নং ওয়ার্ডে পুনঃভোট হচ্ছে।
আজকের দ্বিতীয় দফা ভোটে ভাগ্য নির্ধারণ হবে কে হচ্ছেন সংরক্ষিত এই ওয়ার্ডটির কাউন্সিলর।
সংরক্ষিত ৭নং ওয়ার্ডের ৩৪ হাজার ১২৩ জন ভোটারের ওপর নির্ভর করছে কণা না রুমির ভাগ্য। এবারই প্রথম মেয়র ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে দ্বিতীয় দফা ভোট হচ্ছে।
২০১৩ সালের ১৫ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৬নং ওয়ার্ডের দুই প্রার্থীর ভোট সমান হওয়ায় সেবার এই ওয়ার্ডে পুনরায় ভোট নেয়া হয়েছিল।
এদিকে মেয়র পদের ফল আটকে থাকা দুটি কেন্দ্রে দু’জন করে ৪ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর ফলও আটকে আছে। এর মধ্যে গাজী বুরহানউদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটে নির্বাচিত হবে ২৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। কেন্দ্রের ভোট সংখ্যা ২২২১। ২৪নং ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছেন সোহেল আহমদ রিপন। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন হুমায়ুন কবির সুহিন ও মোহাম্মদ শাহজাহান।
সংরক্ষিত ৮নং ওয়ার্ডে রেবেকা আক্তার লাকী ২০৪২ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। জিপ গাড়ি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫৯৭৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সালেহা কবীর শেপী (চশমা) পান ৩৯৩৫ ভোট। ব্যবধানের চেয়ে কেন্দ্রে ১৭৯টি ভোট বেশি রয়েছে। ওই নির্বাচনে শতভাগ ভোট পড়লে প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর হতে রেবেকা বেগম লাকীর প্রয়োজন মাত্র ৯০ ভোট।
এ ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন মোছা. হেনা বেগম (বই), জোৎস্না ইসলাম (আনারস) ও রিনা বেগম (মোবাইল ফোন)। হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটে নির্বাচিত হবেন ২৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।
কেন্দ্রের ভোট সংখ্যা ২৫৬৬। ২৭নং ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আজম খান। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন আবদুল জলিল নজরুল, শাহ মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ও চঞ্চল উদ্দিন। সংরক্ষিত ৯নং ওয়ার্ডে অ্যাডভোকেট রোকসানা বেগম শাহনাজ ২৪৯৫ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন।
চশমা প্রতীক নিয়ে তিনি পান ৭৯৭০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সামিরুন নেসা (গ্লাস) পেয়েছেন ৫৪৭৫ ভোট। ব্যবধানের চেয়ে কেন্দ্রে ৭১টি ভোট বেশি রয়েছে।
ওই নির্বাচনে শতভাগ ভোট পড়লে শাহনাজকে তৃতীয়বার কাউন্সিলর হতে প্রয়োজন মাত্র ৩৬ ভোট। এ ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন আসমা বেগম (বই), আসমা বেগম (মোবাইল), পারভিন বেগম (জিপ গাড়ি), নাসিমা চৌধুরী (ডলফিন), রুবি বেগম (হেলিকপ্টার) ও লিজা আক্তার (আনারস)।