পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পরিবহন খাতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে সিলেটে। করোনা, বন্যা বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধির ঘটনায় এমনিতেই এখাতে নেমে এসেছে মন্দা। এর মধ্যে ট্রাফিক পুলিশের নানামুখী হয়রানীতে নাজেহাল পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া পরিবহন খাতে পাথর কোয়ারী নির্ভর গড়ে উঠেছিল একটি টেকসই অর্থনীতিক। ব্যাংক লোন নিয়ে পরিবহন খাতে বিনিয়োগ করেছিলেন সিলেটের অসংখ্য মানুষ। বেকার বিশাল একটি জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছিল পরিবহন ঘিরে। কিন্তু পাথর কোয়ারী বন্ধের কারণে পরিবহন খাতে নেমেছে দূর্যোগ। লোকসানের গ্লানি বইতে না পেরে বেশিরভাগ পরিবহন মালিক এখন দেউলিয়া। সেই সাথে পরিবহন নির্ভর শ্রমিকরা অসহায়, বেকার। এনিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে নানা কর্মসূচী পালন করেছেন সিলেটের শ্রমিকরা। কিন্তু সবকিছুতে ব্যর্থ হয়ে এবার অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ।
আগামীকাল মঙ্গলবার ভোর থেকে সেই আন্দোলনে বাস্তবায়নে নামবেন তারা। রোববার দুপুরে সিলেটের ৬টি রেজিস্ট্রার্ড সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিলেট জেলায় পরিবহন শ্রমিক কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন নেতৃবৃন্দ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে ৫দফা দাবি জানিয়ে গত সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। স্মারকলিপির অনুলিপি সিলেটের প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সকল সেক্টরে প্রেরণও করেছেন তারা। এছাড়া একই দাবিতে ৮ সেপ্টেম্বর হুমায়ুন রশীদ চত্বরে মানববন্ধন করেছেন শ্রমিকেরা। কিন্তু এরপরও দাবি মেনে না নেয়ায় পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি পালনে বাধ্য হয়েছেন তারা। তাদের ৫দফা দাবির মধ্যে রয়েছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও ডিসি (ট্রাফিক) অপসারণ, ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ও রেকার বাণিজ্যসহ মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ, সিলেটে শ্রম আদালতের প্রতিনিধি শ্রমিক লীগের নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তারকারী নাজমুল আলম রোমেনকে প্রত্যাহার, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে পাথর কোয়ারি খুলে দেয়া, ভাঙা রাস্তাগুলোর দ্রুত সংস্কার এবং নতুন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি বন্ধ ও বিক্রয়কৃত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন প্রদান, সেই সাথে বেআইনী গাড়ী অটোবাইক, ব্যাটারীচালিত রিক্সা ও বন্ধের ব্যবস্থা, ডাম্পিংকৃত গাড়ী চলাচল।
এদিকে, গতকাল অনুষ্ঠিত পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সভায় জানানো হয়, উখাপিত দাবি মেনে নেয়া না হলে আগা মঙ্গলবার ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সিলেট জেলার সকল পরিবহন শ্রমিক কর্মবিরতি পালন করতে বাধ্য হবে। জেলার রাস্তায় বের হবে না কোন গাড়ী। সরকারের কাছে অনতিবিলম্বে ৫ দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান তারা। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচী ছাড়া আর কোন পথ খোলা থাকবেনা তাদের।
সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ও সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হাজী ময়নুল ইসলামের সভাপতিত্বে, সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকারিয়া আহমদের পরিচালনা অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা ট্রাক পিকাপ, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দিলু মিয়া, সিলেট জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুহিম, ইমা লেগুনা হিউম্যান হুলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রনু মিয়া মঈন, সিলেট জেলা অটো টেম্পু অটোরিকশা শ্রমিক জোটের সভাপতি আব্দুল হালিম ভাসানী, সিলেট জেলা ট্রাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মনির মিয়া, সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আজাদ মিয়া, সিলেট জেলা ট্রাক কভার্ডভ্যান পিকাপ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর, পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক আলী আকবর রাজন।
অপরদিকে, সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ও সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হাজী ময়নুল ইসলাম গতকাল বিকেলে ইনকিলাবকে বলেন, ফালতু অজুহাতে সিলেটের টেকসই অর্থনীতীর ভিত্তি পাথর কোয়ারী বন্ধ রাখা হয়েছে, অথচ পাথর কোয়ারীতে পরিবহন চলাচল উপযোগী রাস্তা তৈরী করেছিল সরকার। শত কোটি টাকার রাস্তা ব্যবহার হচ্ছে এখন কথিত পর্যটনসহ যাত্রী বহনে। বন্ধ করে রাখা হয়েছে পাথর কোয়ারীগুলো। পাথর কোয়ারীতে উপার্জনের স্বার্থে পরিবহন খাতে বিনিয়োগ করেছিল সিলেটের অসংখ্য মানুষ। পাথর কোয়ারী বন্ধ রাখায় ব্যাংক ঋণে জর্জরিত হয়ে বিনিয়োগকারীরা কার্যতঃ দেউলিয়া। একই সাথে পরিবহন শ্রমিকরা বেকার। এছাড়া পাথর কোয়ারী কেন্দ্রিক উদীয়মান ্অর্থনীতির চাকা অচল হ্ওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত। নিরব দূর্ভিক্ষে শেষ হচ্ছে মানুষ। কারো খেয়াল নেই। পাথর কোয়ারী নিয়ে মানুষের শেষ ভরসাস্থল আদালতে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে গতি হলেও তা বাস্তবায়নে কোন পদক্ষেপ নেই সংশ্লিষ্টদের। তারা কোন কিছুই পাত্তা দিচ্ছে না, তাহলে ভুক্তভোগীরা যাবে কোথায়? তিনি বলেন, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ জনবান্ধব তথা পরিবহন বান্ধব নয়। সেকারণে সেবার পরিবর্তে হয়রানির শিকার হচ্ছে পরিবহন ঘনিষ্টরা। বিশেষ করে এসএমপির ট্রাফিক কমিশনার পরিবহন ও শ্রমিক বিদ্বেষী। তার কারণে হয়রানির মুখে গোটা পরিবহন খাত। তার দায়িত্বের গত ৩ বছরে পরিবহন খাতের সাথে ট্রাফিক বিভাগের প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থান গড়ে দিয়েছেন তিনি। সেকারণে পরিবহন শ্রমিকরা তার উপর ত্যক্ত-বিরক্ত। তার অপসারণ জরুরী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।