বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ক্ষতিকারক ওষুধে নয়, বৈজ্ঞানিক ও আধুনিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করেছেন কুমিল্লার খামারি ও গৃহস্থরা। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করায় গরুর সুস্থতা নিয়েও দুশ্চিন্তা করছেন না তারা। কুমিল্লার সীমান্ত পথে যাতে অবৈধভাবে ভারতীয় গরু কোরবানির হাটে আসতে না পারে এ ব্যাপারে বিজিবিসহ জেলা প্রশাসনের ভূমিকা রাখার দাবি জানিয়েছেন।
এবারে কুমিল্লার দুই লাখ ৬০ হাজারের বেশি গরু এবং উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীদের আনা এক লাখসহ প্রায় সাড়ে তিন লক্ষাধিক গরু জেলার সতের উপজেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী চার শতাধিক হাটে স্থান পাবে। মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গবাদিপশু ‘হৃষ্ট-পুষ্টকরণ’ প্রক্রিয়ায় এসব গরু প্রস্তুত করা হচ্ছে। কুমিল্লায় কুমিল্লা জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস দেশি গরুতে ভরসা রাখার জন্য কোরবানিদাতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
গতবছর ঈদের সপ্তাহখানেক আগ থেকে গরুর দাম বেশি থাকলেও ঈদের আগেরদিন দাম কমে যায়। তবে এবারের চিত্র উল্টে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা। তাদের মতে, গরুর খাদ্য, পরিচর্যা খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবারে ষাড়, বলদ, গাভী, মহিষ, ছাগল, ভেড়ার দাম গতবারের চেয়ে বাড়বে। তবে কোরবানির পশু সঙ্কট থাকবে না। আর অবৈধভাবে ভারতীয় গরু আসা ঠেকানো গেলে স্থানীয় খামারি ও গৃহস্থরা দেশীয় গরুতে আশানুরূপ লাভ পাবেন।
প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারে হৃষ্টপুষ্টকরণ প্রক্রিয়ার আওতায় কুমিল্লার সতের উপজেলায় এক লাখ ৭৪ হাজার ৫৫৬টি ষাঁড়, ৬৩ হাজার ১৭২টি বলদ, ২২ হাজার ৬৮০টি গাভী, ১৪৬টি মহিষ হাটে তোলা হবে। এছাড়াও হাটে ছাগল, ভেড়া স্থান পাবে ৪৩ হাজার ৫৮২টি। হৃষ্টপুষ্টকরণ প্রক্রিয়ায় এবারে গবাদিপশু লালনে এগিয়ে রয়েছে মুরাদনগর, হোমনা, বরুড়া, নাঙ্গলকোট, দাউদকান্দি, চৌদ্দগ্রাম, দেবিদ্বার, মেঘনা, সদর দক্ষিণ, বুড়িচং, আদর্শ সদর ও তিতাস উপজেলা। কুমিল্লার সদর দক্ষিণের খামারি সালাউদ্দিন জানান, প্রচলিত, প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণের বিকল্প নেই। এ পদ্ধতির গরুর কদর বেশি। আর ইনজেকশন, ট্যাবলেট, পাউডার খাইয়ে গরু মোটাতাজা করার ক্ষেত্রে ঝুঁকি থাকে। গরু মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই তিনি এবারে তার খামারে ৬৫টি গরু দেশীয় পদ্ধতিেেত মোটাতাজা করেছেন। বরুড়ার আরেক খামারি তাজুল ইসলাম জানান, এ বছর পশু খাদ্যের দাম বাড়তি হওয়ায় গরু লালন পালনে খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। তার খামারের ৪২টি গরু দেশীয় পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াজাত ইউরিয়া, লালিগুড় ও খড়ের বিশেষ মিকশ্চারের মাধ্যমে তৈরি খাবার খাইয়ে মোটাতাজা করেছেন। হাটে ভারতীয় গরু উঠলে খামারের গরুতে লাভবান হওয়া যায় না। প্রতিবছরই দেখা যায় ঈদের সপ্তাহখানেক আগে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে আনা ভারতীয় গরু হাটে তুলেন। দামের ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশীয় খামারি ও গৃহস্থদের গরু বিক্রিতে। এতে লোকসানের মুখে পড়তে হয় খামারিদের। অনেক খামারি ব্যাংক থেকে বা বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে কোরবানির পশু লালন-পালনে খামার গড়ে তোলেন।
কুমিল্লার প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তা ডা. আবদুল মান্নান বলেন, কুমিল্লা অঞ্চলের হৃষ্টপুষ্ট আড়াই লাখের বেশি গবাদিপশু এবারে কুরবানির হাটে উঠবে। এসব গবাদিপশুর অধিকাংশই শঙ্কর জাতের। তাই আশা করা হচ্ছে, হাটে এবার পশু সঙ্কট দেখা দেবে না। আরেকটি বিষয়ে এবার আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি, এটি হচ্ছে হাটে যাতে কোন অবস্থাতেই রোগা, এবং ক্ষতিকারক ওষুধ, ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে মোটা-তাজা করা গরু বিক্রি করতে না পারে। এ ধরনের গরু বিক্রিরোধে হাটগুলোতে ভেটেনারি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে। প্রাণিসম্পদ অফিসের এই কর্মকর্তা কোরবানিদাতাদের দেশি গরুতেই ভরসা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।