নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
প্রথম ওভারেই আউট দুই ওপেনার। পরের দুই ব্যাটসম্যানও নেই ষষ্ঠ ওভারে। একাদশ ওভারে একশ ছুঁয়েও ধুঁকতে ধুঁকতে থমকে যাওয়া দেড়শর নিচে। ব্যাটিং উইকেটে মুখ থুবড়ে পড়ল বাংলাদেশের ব্যাটিং। পরে বৃষ্টিতে আরও সহজ হয়ে যাওয়া সমীকরণে সহজেই জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেন্ট কিটসে গতকাল সকালে ২০ ওভারে বাংলাদেশ করতে পেরেছিল ১৪৩ রান। বৃিষ্টর বাধার পর ডাকওয়ার্থ-লুইস আইনে ক্যারিবিয়ানদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১১ ওভারে ৯১। জিতে যায় তারা ১১ বল বাকি রেখেই।
অথচ ওয়ানডে সিরিজে কি দারুণই না খেলেছিল টাইগাররা। আত্মবিশ্বাসে টইটুম্বুর থাকা দলটি ধাক্কা খায় শুরু থেকেই। প্রথম বলেই নেই দুর্দান্ত ফর্মে থাকা তামিম ইকবাল। দুই বল পর শেষ সৌম্য সরকার। এরপর সাকিব-লিটনের ছোট্ট জুটির পর আবার জোড়া ধাক্কা। সে ধাক্কাও সামলানো গিয়েছিল মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। কিন্তু দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়েনি। আপার কাট করতে গিয়ে ফাঁদে পড়ে আউট হন মুশফিক। এরপর বাকিরা যেন তার পিছু ধরতে ব্যস্ত থাকেন। ওয়ার্নার পার্কের ছোট বাউন্ডারি, ব্যাটিং সহায়ক উইকেট আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং সামর্থ্য বিবেচনায় নিয়ে সাকিব আল হাসান মনে করছেন, লড়াইয়ের জন্য অন্তত ১৮০ রান প্রয়োজন ছিল। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দলকে ততদূর নিতে না পারায় ব্যাটসম্যানদের হারের দায় দিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
অধিনায়ক আগলে রাখবেন সতীর্থদের, তবুও নিজেও যেহেতু ব্যাটসম্যান তাই দায় কাঁধে নিয়েই সাকিব বললেন, ‘ওদের চিন্তাভাবনা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। টি-টোয়েন্টিতে সবাই ইতিবাচক থাকবে এবং রান করার চেষ্টাই করবে ইনিংসের শুরু থেকে। সবাই সে চেষ্টাই করেছে। এভাবে উইকেট না হারিয়ে কীভাবে রান করব, সেটিই হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। ১১ ওভারে আমাদের যে ১০০ ছিল, সেটা যদি ৫ উইকেটে না হয়ে ২ উইকেটে হতো তাহলে এমন একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি হতো যেখানে ১৯০/২০০ করার মতো একটা অবস্থায় আমরা যেতে পারতাম।’
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ প্রথম ওভারেই হারায় দুই ওপেনারকে। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে করে ১৩৯ রান। প্রথম ১০ ওভারে অতিথিরা সংগ্রহ করে ৯৫ রান। শেষ ১০ ওভার থেকে আসে মোটে ৪৮। সাকিব মনে করেন, শুরুতে বেশি উইকেট হারানোয় শেষটায় প্রত্যাশিত রান পাওয়া যায়নি, ‘হ্যাঁ, (শেষ ১০ ওভারে কম রান হওয়া) নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এটা হয়েছে শুরুতে দ্রæত উইকেট হারানোয়। আমরা ১০ ওভারের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেছিলাম। দ্রæত ৫ উইকেট হারানোর পর যে কোনো দলের জন্যই ১৭০/১৮০ রান করা খুব কঠিন একটি কাজ।’
১২ ওভারে যাদের রান ছিল ৫ উইকেটে ১০০, তারাই পরের ৪৮ বলে তুলতে পেরেছে ৪৩ রান। শেষ পর্যন্ত কেন বড় স্কোর হয়নি, সব দায়িত্ব নিজের কাঁধেই নিয়ে নিলেন বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক, ‘প্রথম ওভারে ২ উইকেট পড়ে গিয়েছিল। আমি আর লিটন ব্যাটিং করছিলাম। ২-৪ ওভার খেললে উইকেট সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যায়। সবাই ভালো শুরু পেয়েছি কিন্তু বড় স্কোর পাইনি। এটাই সবচেয়ে হতাশার দিক। অন্য দলে দেখা যায় শীর্ষ তিন বা চারে একটা বড় ইনিংস খেলে, যেটা আমাদের খুব দরকার পরের দুই ম্যাচে।’
বৃষ্টির জন্য অনেকটা সময় খেলা বন্ধ থাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ১১ ওভারে পায় ৯১ রানের লক্ষ্য। ১১ বল বাকি থাকতে সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। তবুও স্বল্প পুঁজি নিয়েই লড়াই শুরু করেছিল বাংলাদেশ। দারুণ সূচনা এনে দেন মুস্তাফিজ। কিন্তু লাভ হয়নি। পুঁজিটাই বড় হয়ে দাঁড়ায়। সাকিব মনে করেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিস্ফোরক ব্যাটিং লাইন আপের সামনে সেটা কঠিন কোনো লক্ষ্য ছিল না, ‘এই ধরনের উইকেটে ৯১ রান ডিফেন্ড করা খুবই কঠিন।...ওদের কয়েকজন মানসম্পন্ন টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান আছে। ওদের বিপক্ষে জিততে হলে আপনাকে উইকেট নিতেই থাকতে হবে।’
পরের দুই ম্যাচ বলতে যুক্তরাষ্ট্রে। ফ্লোরিডায় টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ দুটি ম্যাচ। বাংলাদেশ পারবে ঘুরে দাঁড়াতে? রাতে ওয়ার্নার পার্ক ছাড়ার আগে সাকিব আশার কথা শুনিয়ে গেলেন, ‘সেখানে আমাদের অনেক দর্শক থাকবে। দর্শকদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত। যদিও একটা সফরের শেষ পর্যায়ে নিজেদের উদ্বুদ্ধ করা কঠিন হয়ে যায়। পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে এটা অবশ্য ঠিক না। এখনো আমাদের সিরিজ জেতা সম্ভব। যেহেতু বাকি আছে দুটি ম্যাচ। যদি পারি, সেটা হবে বিরাট অর্জন।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।