Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুনরুদ্ধারে মরিয়া বিএনপি আ.লীগ চায় ধরে রাখতে

লক্ষীপুর-৪ রামগতি-কমলনগরে বইছে নির্বাচনী হাওয়া

লক্ষীপুর থেকে মো. কাউছার | প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হয়েছে লক্ষীপুর-৪ আসনে। হেভিওয়েট প্রার্থীদের জমজমাট আমেজে চলছে গণসংযোগ, শুভেচ্ছা বিনিময়, গ্রুপিং-লবিং। অপর দিকে ভোটারদের মধ্যেও চলছে নানা গুঞ্জন। কে কোন দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন, কে হলে ভালো হয়, তা নিয়েও চলছে নানা বিশ্লেষণ। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও দান-অনুদান দিয়ে যাচ্ছেন।
১৭টি ইউনিয়ন, এক পৌরসভা ও রামগতি-কমলনগর দুই উপজেলা নিয়ে লক্ষীপুর-৪ আসন। এ আসনের অধিকাংশ মানুষ মৎস্যজীবী ও কৃষক। কিন্তু এবার সক্রিয় হয়ে ওঠছেন জোট-মহাজোটের নেতাকর্মীরা। মনোনয়ন পেতে আ.লীগ-বিএনপির দলীয় নেতা ছাড়াও জোটের শরিক হেভিওয়েট প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। লবিং করছেন কেন্দ্রীয়ভাবে। পাশাপাশি ঘুরে বেড়াচ্ছেন সাধারণ ভোটারদের কাছেও। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। মূলত এই আসনে আগামী নির্বাচনে লড়াই হবে ১৪ দলের সাথে ২০ দলের। ইতোমধ্যে আ.লীগ, বিএনপি, জেএসডি (জাসদ) ও এলডিপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা, সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ শুরু করেছেন।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উত্তোলক জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী হন। তিনি এবারো নির্বাচনে আগ্রহী।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ.লীগ থেকে নির্বাচিত হন মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন। এবারো আ.লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন বর্তমান এই এমপি। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় আ.লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক, এ আসনের সাবেক সংরক্ষিত মহিলা এমপি ফরিদুন্নাহার লাইলী। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক কমলনগর আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামছুল কবির। ভ‚মিহীন নেতা হিসেবে পরিচিত আজাদ উদ্দিন চৌধুরীও মনোনয়ন চাইবেন। তিনি ইতোমধ্যে এ লক্ষ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদেরের হাতে ফুল দিয়ে আ.লীগে যোগদান করেন।
বর্তমান এমপি ও মনোনয়ন প্রত্যাশী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, রামগতি-কমলনগরে অনেক উন্নয়ন কাজ করেছি। এ অঞ্চলের মানুষের সবচেয়ে যে বড় দাবি ছিল নদী ভাঙন প্রতিরোধ। সে বিষয়ে বর্তমান সরকার কাজ করছে। ইতোমধ্যে এক কোটি ৩৪৯ কোটি টাকা একনেকে পাস হয়ে প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম পর্যায়ের সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে। ইনশাআল্লাহ মনোনয়ন পেলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। আ.লীগের কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লায়লী বলেন, আমি ছাত্র জীবন থেকে আ.লীগের সক্রিয় রাজনীতি করে আসছি। মনোনয়ন পেলে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে জণগণের সেবা করে যাব। অধ্যাপক শামছুল কবির বলেন, আমি ছাত্র জীবন থেকে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। ২০০২সাল থেকে ২০০৭সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলে ছাত্র সংসদে যুগ্ম সম্পাদক ছিলাম। সব সময় নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি নিঃস্বার্থভাবে এলাকার উন্নয়নে কাজ করব।
এদিকে বিএনপি থেকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক এমপি আশরাফ উদ্দিন নিজান, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সফিউল বারী বাবু। কেন্দ্রীয় তাঁতী দলের সহ-সভাপতি আবদুল মতিন চৌধুরী। ২০০১ ও ২০০৮ এর নির্বাচনে আশরাফ উদ্দিন নিজান এমপি নির্বাচিত হন। এলাকায় তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তিনি এমপি থাকাকালীন নদীভাঙন রোধে কাজ করেছেন। তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে তার ভালো অবস্থান। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সফিউল বারী বাবু তিনিও বিভিন্ন অকেশনে এলাকায় যাচ্ছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নিচ্ছেন। ছাত্রজীবন থেকে তিনি দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাই জেল-জুলুম কিছুই তাঁকে পেছনে ফেলতে পারেনি। তাঁতী দলের সহ-সভাপতি আবদুল মতিন চৌধুরীও দুর্দিনে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বর্তমানে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সাথে ২০ মামলার আসামি হয়ে আইনি মোকাবেলা করছেন। এখানে আ.লীগ-বিএনপি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট রয়েছে। তাই এ আসনে ত্রিমুখী লড়াইয়ে সম্ভাবনা কোনোভাবে উড়িয়ে দেয়া যায় না। এই আসনে আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী একসময়ের বিএনপি সরকারের বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মেজর (অব.) আব্দুল মন্নান। তিনি বিকল্প ধারার কেন্দ্রীয় মহাসচিব। তিনি আগামী নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকেও মনোনয়ন পাওয়ার আশা করছেন।
সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলার বিএনপির সভাপতি আশরাফ উদ্দিন নিজান বলেন, আমি দুইবার এমপি নির্বাচিত হয়েছি। আমার এলাকাবাসী তথা লক্ষীপুরবাসী জানে আমার সততা, যোগ্যতার কথা। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সফিউল বারী বাবু বলেন, দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করছি। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আমাদের নেতা তারেক রহমান দলীয়ভাবে আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচিত হয়ে রামগতি ও কমল নগরের জনগণের কল্যাণে কাজ করব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ