পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বর্ষার কারণে রাজধানীর বাজারে অধিকাংশ নিত্যপণ্যের বাজার এখন ঊর্ধ্বমুখী। কাঁচা সবজি, মাছ, ডিম ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজি বাজারে গিয়ে অনেকটা হতাশ হতে হচ্ছে ক্রেতাদের। পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, বেগুন, কাকরোল, ঢ়েড়স, মিষ্টি কুমড়া, পেপে, করলাসহ বিভিন্ন সবজিতে বাজারে ভরপুর। তারপরেও গত সপ্তাহের তুলনায় বিভিন্ন সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বৃষ্টিকে দুষছেন ব্যবসায়ীরা।
টমেটোর দাম গত সপ্তাহ থেকে কিছুটা বেড়ে ১শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে চিচিঙ্গা, পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, কাকরোল, করলা, বরবটি। গত সপ্তাহে এসব সবজি ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে এগুলো কিনতে বাড়তি ২০-৩০ টাকা গুনতে হবে ক্রেতাদের। প্রতি কেজি বেগুন কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। আর পেপে বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের এক সবজি বিক্রেতা বলেন, গত সপ্তাহে সবজির দাম কিছুটা কম ছিল। কিন্তু এ সপ্তাহে টানা বৃষ্টির কারণে দাম বেড়েছে সব রকম সবজির। আবহাওয়া ঠিক হলে দামেও সবজির পরিবর্তন আসবে বলে জানান তিনি।
এদিকে বর্ষা মৌসুমে নদীতে বেলে মাছ বেশি ধরা পড়ে। ঢাকার বাজারে যখন তাজা বেলে মাছ আসে, তখন তা থেকে চোখ ফেরানো যায় না। কিন্ত সেই মাছ কেনার সাধ্য সবার নেই। এখন এক কেজি মাঝারি আকারের বেলে মাছের দামও বিক্রেতারা ৭০০ টাকার বেশি চান। আকার আরেকটু বড় হলে দাম হাঁকা হচ্ছে কেজিপ্রতি হাজার টাকা। বেলের মতো বর্ষায় যেসব মাছ বেশি পাওয়া যায়, সেই সব মাছের দাম ব্যাপক চড়া। একই সঙ্গে বেড়ে গেছে রুই, কাতলা, চিংড়ি, শিং, মাগুরসহ বিভিন্ন মাছের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টি ও নদীতে পানি বেশি থাকায় মাছ ধরা যাচ্ছে না। এতেই সরবরাহ কমে গিয়ে দাম বেড়ে গেছে।
গতকাল শান্তিনগর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, আকারের এক কেজি বেলে মাছের দাম বিক্রেতা এক হাজার ২০০ টাকা চাইলেন। বাজার ঘুরে দেখা গেল, বিভিন্ন আকারের বেলে মাছ আছে। তাজা মাছ ছোট আকারের হলেও দাম কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন ৬৫০ টাকা। নদীর যেকোনো মাছই বিক্রেতারা কেজিপ্রতি ৬০০ টাকার বেশি দাম চাইছিলেন। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকারে বড় হলে চাষের রুই-কাতলার দামও ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি চাওয়া হচ্ছে। ছোট রুই-কাতলার কেজিও ৩০০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। শিং-মাগুরের দাম আরও বেশি, আকারভেদে কেজিপ্রতি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। দেশি হলে হাজার টাকার বেশি। নদীর চিংড়ির দাম সর্বনিম্ন ৬০০ থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা কেজি। আর ৫০০ টাকা কেজিতে যে চাষের চিংড়ি পাওয়া যেত, সেটা এখন ৬০০ টাকার নিচে মিলছে না। তবে চাষের কই, পাঙাশ ও তেলাপিয়ার দাম বাড়েনি। এসব মাছ কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে মিলছে। অবশ্য মান ও বাজারভেদে মাছের দাম নানা রকম।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সিকদার বলেন, নদীতে পানি বেশি থাকায় মাছ ধরা পড়ছে না। পানি যখন টান দেবে, তখন মাছ ধরা পড়বে। তিনি বলেন, ইলিশের সরবরাহ বেশি হলে দাম কমবে।
এদিকে ঢাকার বাজারে ইলিশের সরবরাহ আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। তবে দাম তেমন কমেনি। আধা কেজি ওজনের একটি ইলিশ ৪০০ টাকা, ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬০০ টাকা, এক কেজির কিছুটা কম ওজনের ইলিশ প্রতিটি ৮০০ টাকা ও এক কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিটি এক হাজার ৩০০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা।
অন্যদিকে রাজধানীর বাজারগুলোতে আবারও বেড়েছে ডিমের দাম। গত সপ্তাহে ৯৫ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিমের দাম বেড়ে এখন ১০৫ টাকা ছাড়িয়েছে। অথচ গত রোজায়ও এক ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকায়।
দফায় দফায় দাম বেড়ে ডিম এখন অনেকটাই নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে গেছে। বাজারে কারও নজরদারি না থাকার কারণে ডিমের দাম এমন দফায় দফায় বাড়ছে বলে অভিযোগ করছেন সাধারণ ক্রেতারা।
আর খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোজার পর ডিমের চাহিদা খুব বেড়েছে। সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকায় ডিমের দাম বেড়েছে। বাজারে ডিমের যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, খামারিরা সে পরিমাণ ডিম সরবরাহ করতে পারছেন না।
এদিকে ডিমের পাশাপাশি অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে লাল লেয়ার মুরগির দাম। রোজার সময় ১৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া লাল লেয়ার মুরগির দাম এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে আড়াই শ’ টাকায়। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক মাসের ব্যবধানে ডিমের দাম তিন দফা বেড়েছে। আর রোজার পর কমপক্ষে পাঁচ দফা বেড়েছে ডিমের দাম। অথচ রোজার সময় ডিমের দাম কয়েক দফা কমে গিয়েছিল। তবে ঈদের পর থেকেই অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে ডিমের দাম।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, শুধ ডিম বিক্রি করেন এমন ব্যবসায়ীরা প্রতি ডজন ডিম ১০৫-১১০ টাকায় বিক্রি করছেন। এক সপ্তাহ আগেও এসব ব্যবসায়ীরা ডিমের ডজন বিক্রি করেছেন ৯৫ টাকা। আর রোজার সময় বিক্রি করেছেন ৭০ টাকা ডজন।
খুচরা পর্যায়ে মুদি দোকানে এক পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০-১১ টাকায়। আর হালি হিসাবে বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকা। এসব ব্যবসায়ীরা ডিমের ডজন বিক্রি করছেন ১১৫-১১৮ টাকা। অথচ এক সপ্তাহ আগেও খুচরা দোকানগুলোতে ১০৫ টাকা ডজন ডিম পাওয়া গেছে। আর এক হালি পাওয়া গেছে ৩৫ টাকায়।
বর্তমানে ডিমের যে দাম দাঁড়িয়েছে, এমন বেশি দামে রাজধানীতে কতদিন আগে বিক্রি হয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। তবে একাধিক ব্যবসায়ী বলেছেন কয়েক বছরের মধ্যে ডিমের দাম এত বাড়েনি।
এদিকে রমজানের পর কেজিতে দুইশো টাকা উঠে গিয়েছিল কাঁচা মরিচের দাম। কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে সেই দাম কমে ১০০ নিচের চলে এসেছে। আর পেঁয়াজের দাম প্রতিদিনই কেজিতে দুই-এক টাকা করে বাড়ছে। তবে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সবজির বাজার। আর স্থিতিশীল আছে চালের দাম।
বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, কাঁচা মরিচের আমদানি ভাল। আর পেঁয়াজ প্রায় শেষের দিকে। তাই মরিচের দাম কমে এলেও বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি দর ৫২ থেকে ৫৪ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ২৮ থেকে ৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। একসপ্তাহ আগে পেঁয়াজের দাম ছিল ৪২ থেকে ৪৩ টাকা। প্রতিদিন কেজিতে দুই-এক টাকা বেড়ে গতকাল শুক্রবার ৫২ থেকে ৫৪ টাকায় ঠেকেছে।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।