নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এক পাড়ে ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনেরিও। অন্য পাড়ে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদ। ৮ হাজার ১৩৪ কিলোমিটার এই দূরত্ব পাড়ি দিতে হলে পাড়ি দিতে হবে আটলান্টিক মহাসাগড়। বিশ্বায়নের যুগে এই দূরত্ব যেন এক ফুৎকারে মিইয়ে গেছে ফুটবলের কল্যাণে। বিশেষ করে লাতিন আমেরিকার শ্বৈল্পিক ফুটবলে আকুণ্ঠ ভালোলাগাই এই দূরত্ব ঘোঁচানোর সহায়ক।
নেইমারের উত্থানের খবর প্রায় সবার মুখে মুখেই ছিল। সান্তোসে অসাধারণ ফুটবল উপহার দিয়ে লাইমলাইটে চলে আসেন নেইমার। ব্রাজিল দলে নতুন তারকা আসছেন তা জেনে গেয়েছিল গোটা বিশ্ব। এটাও প্রায় দশ বছর আগের কথা। এর পর ব্রাজিল দলে হাকডাক দিয়ে কোনো খেলোয়াড় আসেনি। কিন্তু হঠাৎ এক বিস্ময় বালকের আবিস্কার করতে যাচ্ছে পেলের দেশ- ভিনিসিয়াস জুনিয়র। যাকে বলা হচ্ছে ব্রাজিলের নতুন নেইমার।
বয়স মাত্র ১৮। কিন্তু এই মুহূর্তে বড় দলে জায়গা করে নিয়েছেন ভিনিসিয়াস। তাকে দলে ভিড়িয়েছে স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ। ৩৮ মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে তাকে দলে নিয়ে চমক দেখিয়েছে রিয়াল। ২০১৩ সালে সান্তোস থেকে নেইমার জুনিয়রকে বার্সেলোনা এনেছিল ৪৯ মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে। কিন্তু নেইমার তখন প্রায় পরিণত এবং সান্তোসের সেরা তারকা। অন্যদিকে ভিনিসিয়াসের নেই তেমন কোনো তারকাখ্যাতি। কিন্তু তার প্রতিভা তাকে এগিয়ে নিচ্ছে অনেকদূরে।
গত পরশু ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে সবার সামনে আনে রিয়াল মাদ্রিদ। এসময় তরুণ ফুটবলারের পাশে ছিলেন স্বদেশি কিংবদন্তি রোনাল্ডো। রিয়াল মাদ্রিদের হল অব ফেমে থাকা এই কিংবন্তিকে পাশে পেয়ে সাহস পেয়েছেন ভিনিসিয়াস। তবে ভিনিসিয়াসের জার্সিতে কোনো নম্বর দেওয়া হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, রিয়াল মাদ্রিদের ‘বি’ দলে প্রথমে পাঠানো হবে ভিনিসিয়াসকে। এরপর ডাকা হবে মূল দলে।
ভিনিসিয়াসের উত্থান খুব সহজে হয়নি। রিও ডি জিনেরিও থেকে ভেতরের শহর সাও গঞ্জালো। সেখানে রাস্তায় ফুটবল খেলতেন ভিনিসিয়াস। তার ফুটবল প্রতিভা এতোটাই দারুণ ছিল যে দশ বছর বয়সে তাকে ক্লাবে যুক্ত করে ফ্ল্যামেঙ্গো। তিন বছরের মধ্যে অনুর্ধ্ব-১৫ দলে অভিষেক তার। ১৪ বছর বয়সে রিওতে চলে আসেন ভিনিসিয়াস। রিওতে আসার পর স্থানীয় ফুটবল প্রতিযোগীতায় মুগ্ধতা ছড়ান। তাকে ডাকা হয় ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-১৭ দলে। সেলেসাওদের হয়ে জেতেন দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপ। তার ফুটবল জ্ঞান ও কৌশলের কথা জানতে পেরে তাকে দেখার আগ্রহ তৈরি হয় রিয়াল মাদ্রিদের। তাতেই যেন সব পেয়ে গেলেন ভিনিসিয়াস।
গত বছর তার সঙ্গে চুক্তি করে রিয়াল। এ বছর তাকে উন্মোচন করল। ধারণা করা হচ্ছে ‘বি’ দলে কয়েক মাস খেলানোর পর তাকে মূল দলে নেওয়া হবে। তবে মূল দলে আসতে তাকে প্রমাণ করতে হবে ‘বি’ দলে। ভিনিসিয়াসের বিশ্বাস তিনি রিয়াল মাদ্রিদকে খুব দ্রæতই প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন। আত্মবিশ্বাসী কন্ঠে বলেছেন, ‘আমার স্বপ্ন সত্যি করার জন্য ধন্যবাদ। খুব সহজেই আমি রিয়াল মাদ্রিদে চলে এসেছি। আমার সতীর্থ এবং ক্লাব কর্মকর্তাদের প্রমাণ দেব যে আমি খেলার জন্য তৈরি।’ তবে পথটা যে খুব একটা সোজা ছিলো না সেটিও জানিয়েছেন পরক্ষণেই, ‘আমি জানি কতটা কষ্ট করে এ পর্যন্ত এসেছি। দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে ফুটবলার হবার স্বপ্ন দেখেছি এবং সেটি আজ সত্যি হয়েছে। আমি এর সম্মান রাখতে সবকিছু করবো।’
ভিনিসিয়াসকে নিয়ে আশাবাদী রিয়ালের প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেসও। তার ভাষ্য, ‘তাকে দেখার অপেক্ষায় গোটা ব্রাজিল ও রিয়াল মাদ্রিদ। আমরা আশাবাদী অচিরেই আমরা তাকে মাঠে নামাতে পারব।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।