Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ফ্রান্সের বীরবরণ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৮, ৯:০৯ পিএম

রাশিয়া বিশ্বকাপের বীরদের বরণ করে নিল ফ্রান্সের লাখো ফুটবলপ্রেমী জনতা। রোববার রাতে বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে বিধ্বস্ত করে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় ফ্রান্স। বিশ্বকাপ ট্রফি জিতে পরের দিন বিকালে নিজেদের দেশে ফিরেছে ফ্রান্সের বিশ্বজয়ী ফুটবলাররা। একটি বিশেষ বিমানে চড়ে রাশিয়ার মস্কো থেকে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে গিয়ে পৌঁছান বিশ্বকাপ জয়ী গ্রিজম্যান-এমবাপেদের সঙ্গে সফল কোচ দিদিয়ের দেশম এবং দলের অন্যান্য কর্মকর্তারা। এসময় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ দলের সঙ্গে থাকলেও তিনি ছিলেন আলাদা বিমানে। একই সময় তিনিও ফিরেছেন প্যারিসে। বিশ্বজয়ী ফুটবলারদের বরণ করে নিতে প্যারিসে তাদের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন লাখ-লাখ জনতা। পুরো ফ্রান্স দলকে অভ্যর্থনা জানাতে প্যারিসে যে উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছিল এক কথায় তা ছিল সত্যিই অসাধারণ। এ দৃশ্য দেখে অভিভূত না হয়ে পারা যায় না। দেশে পৌঁছে ফুটবলে বিশ্বসেরা দলের অধিনায়ক হুগো লরিস বিশ্বকাপ ট্রফিটি হাতে নিয়ে বেরিয়ে আসেন বিমানের দরজা দিয়ে। সেখানেই তিনি উঁচিয়ে ধরেন সোনার হরিণ খ্যাত বিশ্বকাপ ট্রফি। হুগো লরিসের বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরার ধরন দেখে মনে হয়েছে যেন তিনি ফ্রান্সসহ সারা বিশ্বকে জানান দিলেন,‘দেখো আমরা চ্যাম্পিয়ন’। পগবা-গ্রিজম্যান-এমবাপেদের অভ্যর্থনা জানাতে প্যারিসের আইফেল টাওয়ার এবং এলিসি প্রাসাদের সামনে জড়ো হয়েছিল ৫ লাখেরও বেশি জনতা। তারা প্রথমে বিমান বন্দরের সামনে জড়ো হলেও স্থানীয় প্রশাসন তাদেরকে সরিয়ে দেয়। পরে সেই জনতা অবস্থান নেয় এলিসি প্রাসাদ এবং আইফেল টাওয়ারের সামনে। লাখ লাখ মানুষের বিশাল এই জনসমাবেশের সামনে দিয়েই ছাদ খোলা বাসে চড়ে বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে মিছিল করে যান ফ্রান্সের বিশ্বজয়ী ফুটবলাররা। সে এক অভূতপূর্ব ঘটনা। এর আগে ১৯৯৮ সালে ফ্রান্স যখন নিজেদের মাটিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তখন এমন দৃশ্য চোখে পড়েনি। বিশ্বজয় করে দেশে ফেরার আনন্দটাই যেন আলাদা। যা ফুটে উঠেছে ফ্রান্সের ফুটবলারদের চোখে-মুখে। জনতার করতালী আর গগণবিদারী চিৎকারে পুরো প্যারিসের আকাশ যেন কেঁপে উঠেছে।
ফুটবল বিশ্বকাপে খেলতে রাশিয়া গিয়েছিল ৩২টি দেশ। এদের মধ্যে প্রায় সবারই প্রত্যাশা ছিল বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফিটি জিতে দেশে ফেরার। তবে সেখানে ফেভারিট দল হিসেবে ছিল কয়েকটি দেশের নাম। এদের মধ্যে অন্যতম ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, স্পেন, জার্মানি এবং ফ্রান্স। নানা ঘটন-অঘটনের পটিয়সি ছিল রাশিয়া বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্টের ২১তম আসরের গ্রæপ পর্বের শুরু থেকেই প্রতিটি ম্যাচে বারুদ ছড়িয়েছিল এবারের বিশ্বকাপ। গ্রæপ পর্বেই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানির বিদায়, শেষ ষোল’তে দুই সাবেক বিশ্বকাপ জয়ী দল স্পেন ও আর্জেন্টিনার বিদায় এবং কোয়ার্টার ফাইনাল এসে পাঁচবারে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের হোঁচট খাওয়া রাশিয়া বিশ্বকাপকে অনেকটাই প্রাণহীন করে দিয়েছিল। কিন্তু ফাইনালে ফরাসী সৌরভ ছড়িয়ে যখন গ্রিজম্যান-এমবাপেরা বিশ্বকাপের সোনালী ট্রফিটি নিজেদের হাতে তুলে নিলেন, তখন আরো একবার প্রমাণ হলো, ‘ট্যলেন্ট ইজ টেম্পোরারি অ্যান্ড ক্লাস ইজ পারমানেন্ট’। বিশ্বকাপ ফাইনালের চাপ ধরে রেখে, ¯œায়ু শক্ত রেখে ম্যাচটা জেতার মত ক্ষমতা এবং যোগ্যতা ছিল কেবল ফ্রান্সেরই, সেটা প্রমাণ করে দিল তারা। ক্রোয়েশিয়া হয়তো কিছু প্রতিভা দিয়ে আবেগ তৈরি করতে পেরেছিল। মাঠের খেলায়ও তার বেশ পারঙ্গমতা দেখিয়েছিল। কিন্তু দিন শেষে বিশ্বজয়ী দলের নাম সেই ফ্রান্স। যারা ৯৮’ বিশ্বকাপ জেতা। এবারো ফেভারিটদের মতই জিতলো ফ্রান্স। বিশ্ব ফুটবলে ছড়িয়ে দিল ফরাসি সৌরভ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বকাপ

২৩ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ