Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বরিশালে পুলিশ কমিশনারকে লাঞ্ছিত করলেন আওয়ামী লীগ নেতা

বরিশাল ব্যুরো ঃ | প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৮, ১২:৩৯ এএম

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ নেতা শাহে আলম মুরাদ ও তার সঙ্গীরা বরিশালে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় এসে পুলিশ কমিশনারকে লাঞ্ছিত করেছেন। ঘটনার প্রায় ২৪ ঘন্টা পরে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই নিজাম মাহমুদ ফকির বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ৩৩/১৮। মামলাটির তদন্ত করছেন এসআই মহিউদ্দিন মাহি। মামলায় ১ জনের নাম উল্লেখ করে ২০ থেকে ২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, একটি যাত্রীবাহী লঞ্চের কেবিনে ওই নেতা ও তার সাথে থাকা লোকজন প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে সিনিয়র সহকারী কমিশনার মর্যাদার এক কর্মকর্তাসহ তিন পুলিশ সদস্যকে মারধর করেন। এ সময় পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মাহফুজুর রহমানকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। গত শনিবার সন্ধ্যার পর বরিশাল লঞ্চ টার্মিনালের এ ঘটনায় বরিশাল পুলিশ প্রশাসনে তোলপাড় চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ সুন্দরবন-১১ লঞ্চের ভিআইপি কেবিনের সামনে অন্তত অর্ধশত নেতাকর্মী নিয়ে অবস্থান করছিলেন। প্রায় একই সময় ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মেদ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান লঞ্চঘাটে যান। সরকারি এই কর্মকর্তাকে প্রটোকল দিতে সেখানে গিয়েছিলেন ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম ও পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মাহফুজুর রহমান। ঘটনাচক্রে সচিবকে পেছনে রেখে পুলিশের এই দুই কর্মকর্তা চলে যান লঞ্চের ভিআইপি কেবিনের লাউঞ্জে। সেখানে গিয়ে দেখতে পান অর্ধশতাধিক লোকের মধ্যে বসেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা শাহে আলম মুরাদ। এই নেতার সঙ্গে থাকা অপরাপর বেশ কয়েক ব্যক্তি পিস্তল হাতে নিয়ে নানা অঙ্গভঙ্গি করছিলেন। সেই দৃশ্য দেখে কমিশনারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহিদুল ইসলাম ছুটে গিয়ে অস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়টি জানতে চান এবং পিস্তলের বৈধতা যাচাইয়ের জন্য কাগজপত্র দেখতে চান। কিন্ত আওয়ামী লীগ নেতা শাহে আলম মুরাদ ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন পুলিশের সঙ্গে বাক-বিতন্ডায় জড়ান। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ কমিশনারের দেহরক্ষী ছুটে গিয়ে তাদের দ্রুত স্থান ত্যাগের অনুরোধ করেন। এই সময়ে তুমুল বাকবিন্ডার একপর্যায়ে শাহে আলম মুরাদের সঙ্গে থাকা সৈকত ইমরানসহ ২০ থেকে ২৫ জন একত্রিত হয়ে সহকারী জাহিদুল ইসলাম ও দেহরক্ষী হাসিবকে এলোপাতাড়ি পিটুনি দেয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পুলিশ কমিশনার চেয়েছিলেন সকলকে বের করে দিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে নেয়ার। কিন্তু ক্ষুব্ধ শাহে আলম মুরাদ ও তার লোকজন পুলিশ কমিশনারকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। একপর্যায়ে শাহে আলম কমিশনারের মাথায় পিস্তল ধরেন। এমনকি কমিশনারকে এই সময়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন তার সঙ্গে থাকা ইমরান সৈকতসহ বেশ কয়েকজন। এই চিত্র ক্যামেরায় ধারণ করতে গেলে কমিশনারের সঙ্গী ওবায়েদকেও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তার সঙ্গে থাকা ক্যামেরাটি ছিনিয়ে নিয়ে যায় শাহে আলমের লোকজন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশ কমিশনার দ্রুত ফোন করে ঘটনাস্থলে আরো পুলিশ ডেকে নেন। তবে বরিশাল পুলিশ চাইছিল না সরকারের দুইজন সচিবের উপস্থিতিতে এই ধরনের বিষয় প্রকাশ্যে আসুক। যে কারণে ঘটনার পর জড়িতদের গ্রেপ্তারের প্রস্তুতি নিতে লঞ্চটি থামিয়ে রাখা হলেও পরবর্তীতে প্রভাবশালী কারো ফোন পেয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা লঞ্চের যাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই এই লঞ্চে ঢাকায় যাত্রা নিরাপদ নয় মনে করে টার্মিনালেই নেমে যান। এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয় পুলিশ প্রশাসনে। ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় সরকারি কাজে বাধা, হত্যার উদ্দেশ্যে পুলিশ সদস্যদের মারপিট ও গুরুতর আহত করার দায়ে এসআই নিজাম মাহমুদ ফকির বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার বিষয়ে শাহে আলম মুরাদ মুঠোফোনে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে বলে প্রচার হচ্ছে আসলে এমন কোন ঘটনা ঘটে নাই। মিডিয়াতে কেউ কেউ অতিরঞ্জিত করে তুলে ধরছে। আর এর সঙ্গে আমি জড়িত নই। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সাদা পোশাকের পুলিশের বাক-বিতন্ডা হয়েছিল। আমি বিষয়টি জানতে পেরে তা মিটমাট করে দিয়েছি। ###

 



 

Show all comments
  • kazi Nurul Islam ১৭ জুলাই, ২০১৮, ১:১২ এএম says : 0
    Mr. Obaidul Kader, G.S. Bangladesh Awameligue, Sir, please control them so call Neta. noilay a dol dubtay time nibay na.Other one police why weakness ?? 20, 25 jon hamla kari F.I.R only one. RUBBISH.
    Total Reply(0) Reply
  • Sarwer Morshed ১৭ জুলাই, ২০১৮, ২:১৪ এএম says : 0
    সব কিছুর একটা নিয়ম আছে,পুলিশের আসল কাজ কি এটি ভুলে গেছে! প্রশাসনের লোক জন যদি দলীয় কর্মীর মতন হয়ে যাই তাহলে এমনটা ঘটবে! জনগনের নিরাপত্তা দেয়া যাদের আসল কাজ এটি না করে উল্টোটা করতেছে!
    Total Reply(0) Reply
  • Plabon Ahmed ১৭ জুলাই, ২০১৮, ২:১৬ এএম says : 0
    মারহাবা, হাবামার। চলিতেছে সারকাস।
    Total Reply(0) Reply
  • Rafiqul Islam ১৭ জুলাই, ২০১৮, ২:২০ এএম says : 0
    এই রকম দুই একটা ঘটলে পুলিশের ঘুম ভাঙ্গবে
    Total Reply(0) Reply
  • Sarkar Ruposh ১৭ জুলাই, ২০১৮, ২:২০ এএম says : 0
    বাহ্ বাহ্, ভালো তো ভালো নাহ্.......?
    Total Reply(0) Reply
  • সাব্বির ১৭ জুলাই, ২০১৮, ২:২১ এএম says : 0
    আ.লীগের জন্য ব্যাপার না
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ১৭ জুলাই, ২০১৮, ৪:১৫ পিএম says : 0
    Eiahai shushashon protishtito howar nomuna,
    Total Reply(1) Reply
    • নাসির ১৭ জুলাই, ২০১৮, ৫:২৬ পিএম says : 4
      মাছের রাজা ইলিশ কিন্তু দেশের রাজা পুলিশের মার খাওয়া মানে সামনে সুখবর নেই|
  • শামীম ১৭ জুলাই, ২০১৮, ৬:৪২ পিএম says : 0
    হায়বে ঘটনা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী লীগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ