বাড়িতেই ফাইনাল দেখবেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট কাতারে
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে কাতারে যাচ্ছেন না আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ। তিনি জানান, আজ
খুব কাছে গিয়েও প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের সোনলী ট্রফিটা ছুঁয়ে দেখা হলো না ক্রোয়েশিয়ার। এজন্য চেষ্টার কমতি ছিল না রাকিটিচ-মড্রিচদের। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার আগ পর্যন্ত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছে তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফ্রান্সের কাছে ৪-২ গোলে হেরে চূর হয় তাদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। এজন্য হতাশ হলেও ফাইনালে খেলতে পেরেই গর্বিত ক্রোয়াটরা। এমনটিই জানান দলীয় অধিনায়ক লুকা মড্রিচ। রাশিয়া বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতীস্বরুপ গোল্ডেন বল উঠেছে তার হাতে।
ম্যাচ শেষে মড্রিচ বলেন, ‘আমরা বীরের মতো লড়লাম, জয়ের জন্য সবকিছু করলাম, কিন্তু আমরা ছিলাম দুর্ভাগা। ম্যাচের বেশিরভাগ সময় আমরাই তুলনামূলক ভালো দল ছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু দুর্ভাগা ও উদ্ভট গোলের জন্য আমাদের চরম মূল্য দিতে হলো।’ হারলেও বিশ্বকাপে এটিই তাদের সেরা সাফল্য। এজন্য গর্বিত মড্রিচ, ‘আমরা এই টুর্নামেন্টের জন্য গর্বিত হতে পারি। আমরা দারুণ খেললাম। সত্যি বলতে, এটা ক্রোয়েশিয়ার জন্য দুর্দান্ত একটা টুর্নামেন্ট ছিল। আমরা বিশ্বকাপটাই জয়ের খুব কাছে ছিলাম। কিন্তু আমরা গর্বিত হতে পারি।’ এজন্য ভক্ত-সমর্থকদের কৃতিত্ব দিচ্ছেন ৩২ বছর বয়সী, ‘ম্যাচের পর ভক্তদের এই সমর্থন দেখলে অবশ্যই আপনি আরও খুশি হবেন। আমরা জানি আমরা এখানে বড় কিছুই করলাম। কিন্তু আপনি যখন এতটা কাছে আসেন, এটা (ফাইনালে হার) মেনে নেওয়া সহজ নয়। এই রেশ বহুদিন আমাদের ভোগাবে।’
টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়ার কৃতীত্ব সতীর্থদের দিচ্ছেন রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার, ‘আমি এজন্য গর্বিত। আমার সব সতীর্থদের আমি ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ তাদের সাহায্য ছাড়া আমি নিশ্চিত করেই এই পুরস্কার পেতাম না।’ ডিয়েগো ম্যারাডোনা, জিনেদিন জিদান, লিওনেল মেসিদের উত্তরসূরি হিসেবে গোল্ডেন বল জেতায় মড্রিচের সাফল্যে উচ্ছ¡াস প্রকাশ করেছেন ক্রোয়েশিয়ার কোচ জøাতকো দালিচ, ‘আমরা খুব আনন্দিত যে লুকা গোল্ডেন বল জিতেছে। ওর দারুণ একটা টুর্নামেন্ট কাটল।’
রৌপ্য জিতে গর্বিত হওয়া ক্রোয়েশিয়ার অনুভূতি যদি এই হয় তাহলে ফ্রান্সের খেলোয়াড়দের অনুভূতি কেমন সেটা না বললেও চলে। গকতাল বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় দেশের বিমানে চড়েন দিদিয়ের দেশমের দল। এর আগে রাশিয়ায় তাদের সময়টা কেটেছে ঘোরের মধ্যে থেকে। দেশম তাই বলেই ফেললেন, ‘কি ঘটে গেছে সেটা আমরা আগামীকাল উপলব্ধি করতে পারব। এ মুহূর্তে তারা (ছেলেরা) জানে না বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা কি।’
এর আগে খেলোয়াড় হিসেবে ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জেতেন দেশম। তার অধিনায়কত্বেই ঘরের মাঠে ১৯৯৮ বিশ্বকাপ জেতে ফ্রান্স। ২০ বছর পর তার হাত ধরেই দ্বিতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা ওঠল ফ্রান্সের মাথায়। খেলোয়াড় ও কোচ উভয় ভূমিকায় বিশ্বকাপজয়ী হওয়া ইতিহাসের তৃতীয় ব্যক্তি দেশম। অথচ বিশ্বকাপের আগে তার ট্যাকটিকস ও খেলোয়াড়দের যাচাই-বাছাই নিয়ে যথেষ্ঠ সমালোচনা হয়েছ স্বয়ং ফরাসি গণমাধ্যমে।
দেশমের হাত ধরেই ২০১৬ ইউরোর ফাইনালে খেলে ফ্রান্স। কিন্তু পর্তুগালের কাছে হেরে যাওয়ায় শিরোপা ছুঁয়ে দেখায় হয়নি। সেই ক্ষোভ দলকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে উদ্বুদ্ধ করেছে বলে মনে করেন দেশম, ‘হয়ত যদি আমরা ইউরো চ্যাম্পিয়ন হতাম, তাহলে আজ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে পারতাম না। ওই হার থেকে আমি অনেক শিখেছিলাম। ইউরোর ফাইনাল ভিন্নরকম ছিল। এবার আমরা নিরুদ্বিগ্ন থাকার চেষ্টা করেছিলাম এবং ছেলেরা জানত তাদের কি করতেই হবে এবং ঝুঁকিটা কি ছিল।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।