Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উন্নয়নের নতুন দ্বার খুলেছে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু

লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

উত্তরাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জেলা লালমনিরহাটের যোগাযোগ ব্যবস্থা তথা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তিস্তা নদী উপর নবনির্মিত কাকিনা-মহিপুর সেতুটি খুলে দিয়েছে পিছিয়ে পড়া এ অঞ্চলের সম্ভাবনার নতুন দ্বার। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সাথে সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ পুরো অঞ্চলের কয়েক লাথ মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও জীবনযাত্রার মানে প্রভাব ফেলছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পাশাপশি অবস্থান হলেও লালমনিরহাট ও বিভাগীয শহর রংপুরের মধ্যকার যোগাযোগের অন্তরায় তিস্তা নদী। সেই বাঁধা কাটাতে ২০১২ সালে ১২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ১২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা নদীর উপর ৮৫০ মিটার দীর্ঘ লালমনিরহাটের কাকিনা ও রংপুরের মহিপুরে দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর ফলক উদ্বোধন করেন। এবছরের শুরুতে সেতুটির কাজ শেষ হবার পর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষা না করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে গত এপ্রিল মাসে তা চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থায় অধিকতর উন্নয়ন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক রুট বুড়িমারী স্থলবন্দরের সঙ্গে রাজধানী ঢাকা ও বিভাগীয় শহর রংপুরের দূরত্ব কমিয়ে আনার জন্যই লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের রুদ্রেশ্বর ও রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের মহিপুর এলাকায় তিস্তা নদীর উপর দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণ করে সরকার।
দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, সেতুটি খুলে দেয়ার পর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই রংপুর শহরের সঙ্গে লালমনিরহাটের আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার লোকজন যোগাযোগ করতে পারছে। এর সুফল পাচ্ছে রংপুরের পিছিয়ে থাকা গঙ্গাচড়া উপজেলার মানুষও।
ব্যবসায়ী অভিমত, সেতুটি এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য ও উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতে দারুণ ভূমিকা রাখছে। এছাড়া পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরের সঙ্গে সড়কপথে বিভাগীয় শহর রংপুর ও ঢাকার দূরত্ব কমেছে প্রায় ৬০ কিলোমিটার। এতে তারা কম সময়ে কাঁচামালসহ কৃষিজাত পণ্য পরিবহনে সক্ষম হচ্ছেন। তাছাড়া বুড়িমারী স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যও দ্বিগুণ বৃদ্ধির পাশাপাশি বন্দরের গুরুত্ব অনেকগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে দাবি করছেন তারা। বুড়িমারী স্থলবন্দর ব্যবহারকারী সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও আমদানিকারক ব্যবসায়ী সায়েদুজ্জামান সাঈদ বলেন, ‘কাকিনা-মহিপুর দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু চালুর ফলে বুড়িমারী-লালমনিরহাট-বড়বাড়ী হয়ে ঘুরে আর রংপুর যেতে হচ্ছে না। এতে অল্প সময়ে পণ্য গন্তব্যে পাঠানো যাচ্ছে। কমেছে পরিবহন খরচও।’
লালমনিরহাটের চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি শেখ আব্দুল হামিদ বলেন, ‘সেতুুটি পিছিয়ে থাকা রংপুর অঞ্চলের ইতিবাচক আর্থসামাজিক পরিবর্তনের সুযোগ এনেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান ও বাণিজ্য সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।’
লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন বলেন, ‘তিস্তা নদী লালমনিরহাট ও রংপুরবাসীর উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্তরায় ছিল। এঅঞ্চলের দারিদ্র্যপীড়িত মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিতে কাকিনা-মহিপুরে দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণ করেছে সরকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সেতু

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ