বাড়িতেই ফাইনাল দেখবেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট কাতারে
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে কাতারে যাচ্ছেন না আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ। তিনি জানান, আজ
বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারনী ম্যাচ নিয়ে ফুটবল ভক্তদের খুব একটা আগ্রহ থাকে না। তবু একেবারে পদকশূণ্য থাকার চেয়ে ব্রোঞ্জ পাওয়া তো মন্দ নয়। ইংল্যান্ড ও বেলজিয়ামের মধ্যকার আজকের ম্যাচের মহত্ম তেমনি। উত্তাপ ছড়াতে পারে আরো একটি কারণে-গোল্ডেন বুট। এজন্য বিশেষ নজরে থাকবেন ইংলিশ দলপতি হ্যারি কেইন ও বেলজিয়ান স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকু।
গ্রæপ পর্বেও মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড ও বেলজিয়াম। ১-০ গোলে জিতে গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল এডেন হ্যাজার্ডের দল। তবে তাদের কাছে আজকের ম্যাচের গুরুত্ব আরো বেশি। ডি ব্রæইনা-লুকাকু-হ্যাজার্ডদের নজর ১৯৮৬ বিশ্বকাপকে ছাড়িয়ে যাওয়ার দিকে। সেবার সেমিতে উঠেও চতুর্থ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল রেড ডেভিলদের। ইংলিশদের সামনে সুযোগ অর্ধশতাব্দীর সেরা অর্জনের। সেটা সম্ভব হলে ঘরের মাঠে ১৯৬৬ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এটাই হবে বিশ্বকাপে থ্রি লায়ন্সদের সেরা অর্জন। ২০১৫ ফিফা নারী বিশ্বকাপেও ব্রোঞ্জ জিতেছিল ইংল্যান্ডের মেয়েরা।
আসরের সবচেয়ে কঠিন দল হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করা ফ্রান্সের কাছে শেষ চারে থেমে যায় বেলজিয়ামের সোনালী প্রজন্মের বিশ্বকাপ স্বপ্ন। ঐ ম্যাচে ছিলেন না দলের সেন্টার ব্যাক থমাস মুনিয়ের। আজ দলে পিএসজি ডিফেন্ডারের অন্তর্ভুক্তি শক্তি বাড়াবে নিশ্চিত। দলের কোচ রবার্তো মার্টিনেজের বিশ্বাস প্রাপ্যটা বুঝে নিয়েই রাশিয়া ত্যাগ করবে বেলজিয়াম, ‘আমরা বেলজিয়ামের জন্য প্রাপ্য পাওনা নিয়ে তবেই ত্যাগ করব। জয়ের মনোবাসনা নিয়ে সবাই মিলে একসঙ্গে লড়াই করব। আমাদের মানষিকতা ইতোমধ্যে বদলে গেছে।’
ইংল্যান্ডের সমস্যা অন্যখানে। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে শেষ চারের হতাশার মাত্র ৭২ ঘন্টার মাথায় মাঠ নামতে হবে কেইনদের। মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গের যাত্রা ক্লান্তিও সইতে হবে দেলে আলি-লিঙ্গার্ডদের। বেলজিয়াম তো ফ্রান্সের কাছে হেরে পিটার্সবার্গেই রয়ে গেছে। কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের জন্য তাই আজ আসল পরীক্ষা। তাছা দল হিসেবে বেলজিয়ামও তো সমীহ পাওয়ার যোগ্য। তার প্রমাণ তারা ইতোমধ্যে দিয়েছে। সাউথগেটও সেটা ভালোভাবেই জানেন, ‘বেলজিয়ামের যাত্রাটা ছিল অসাধারণ এবং শেষটাও ভালোভাবে করতে চায়। আমাদের চাওয়াটাও একই রকম। তাদের অসাধারণ কিছু খেলোয়াড় আছে এবাং তারা দেখিয়েছে আমাদের জন্য ভালো একটা পরীক্ষা অপেক্ষা করছে।’
দু’দলের লড়াইয়ের আড়ালে থাকবে সর্বোচ্চ গোলের দৌড়ও। যে দৌড়ে এগিয়ে কেইন। ৬ গোল ইংলিশ স্ট্রাইকারের, দুটি কম লুকাকুর। আজ দুই গোল করতে পারলে পুরষ্কারটা উঠবে লুকাকুর হাতে। ১৯৯২ বিশ্বকাপের পর থেকে ফিফা নিয়ম অনুযায়ী গোলসংখ্যা সমান হলে দেখা হয় গোলে সহায়তার হিসাব, সেখানেই সমতা হলে দেখা হয় মাঠে কম থেকেছেন কোন খেলোয়াড়। দুই হিসাবেই কেইনের চেয়ে এগিয়ে লুকাকু। একটি গোলে অ্যাসিস্টের পাশাপাশি লুকাকু মাঠে ছিলেন ৪১৬ মিনিট। কেইনের কোন অ্যাসিস্ট নেই, মাঠ দাপিয়েছেন ৪৮৩ মিনিট। চার গোল আছে রাশিয়ার ডেনিস চেরিশেভ ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর। কিন্তু চেরিশেভের বিশ্বকাপ অভিযান থেমেছে শেষ আটে, রোনালদোর শেষ ষোলয়।
প্রথমবারের মত বিশ্বকাপে অংশ নিতে এসেই সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার পথে। তবে সেরা গোল নির্বাচন করতে গেলে স্বয়ং কেইন হয়ত কোনটাই বেছে নিতে পারবেন না। ছয় গোলের তিনটি এসেছে পেনাল্টি থেকে, দুটি পোস্টের দুই গজ সামনের জটলার মধ্য থেকে। বাকিটা তো অপ্রত্যাশিতভাবে পাওয়া। সতীর্থের শট অনিচ্ছাকৃতভাবে তার গোড়ালিতে লেগে জালে জড়ায়। তবু বিশ্বকাপ তাকে সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবেই মনে রাখবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।