Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

জামালপুরে আ.লীগের ব্যতিক্রমী আয়োজন ‘সংগঠন মেলা’

ইয়াছিন রানা, জামালপুর থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

প্রথমবারের মত ‘সংগঠন মেলা’ নামে ব্যতিক্রমর্ধমী এক আয়োজন করলো জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ। সুশৃঙ্খল প্রতিযোগীতার মাধ্যমে কোন্দল এড়িয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নেয়া নানান পদক্ষেপ উপস্থাপন করার জন্য এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের বিশ জন কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন। সবাই ‘সংগঠন মেলা’ নামের ব্যতিক্রম এই আয়োজন দেখার জন্য ঢাকা থেকে ছুটে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া তিনদিনের এই মেলা চলবে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত। স্থানীয় এফ এম উচ্চবিদ্যালয় মাঠে মেলার উদ্বোধন করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, এই ধরণের আয়োজন বাংলাদেশে প্রথম। তাই তারা সবাই তা দেখতে এসেছেন।
মেলায় মাদারগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি গ্রাম, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আ’লীগসহ অঙ্গ সংগঠনগুলোর সাংগঠনিক তৎপরতা, নেতাকর্মীদের দক্ষতা, বিভিন্ন সাংগঠনিক ইউনিটের প্রতিযোগিতার মূল্যায়ন, দক্ষ সংগঠকদের পুরুস্কার প্রদানসহ সাংগঠনিক নানা বিষয় উপস্থাপিত হবে তিন দিনের মেলাজুড়ে। যার যার দক্ষতা অনুযায়ী ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা পর্যায়ের মূল দল ও সহযোগী সংগঠনের মধ্যে কাজের গতি অনুযায়ী ১ম, ২য় পুরস্কৃতও করা হবে। মেলায় প্রত্যেকটি কমিটির পদধারীদের নাম ও ছবিসহ উপস্থাপন করা হয়। এছাড়া কয়েকটি কমিটি নানান উন্নয়নের চিত্রও তুলে ধরে মেলায়।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা জানালেন, তিল তিল পরিশ্রমে মাদারগঞ্জ সাংগঠনিকভাবে মডেল উপজেলায় পরিণত হয়েছে। একটি পৌরসভা ৮টি ইউনিয়ন ও ১১৬টি গ্রাম নিয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা। উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে আ.লীগ ও সহযোগি সংগঠনগুলোর প্রতিটি ইউনিটের কমিটি রয়েছে। গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে প্রতিটি শাখা ও ইউনিটের নিয়মিত সভা হয় নির্ধারিত সময় সকাল ৮টায়। এই সভায় সবার আগে উপস্থিতির জন্য নেতাদের মধ্যে চলে প্রতিযোগিতা। ফলে প্রতিটি সভায় উপস্থিতি থাকে সর্বোচ্চ। সভায় এলাকার বিভিন্ন সমস্যা, সাংগঠনিক ত্রæটি,বিচ্যুতি, অগ্রগতি বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটের প্রতি মাসের সাংগঠনিক দক্ষতা বিবেচনায় সংগঠন ও সংগঠক পর্যায়ে পুরষ্কার দেয়া হয়। ফলে নেতাদের মধ্যে সব সময় একধরণের প্রতিযোগিতা থাকে। প্রত্যেক নেতাই প্রতিদিন সাংগঠনিক তৎপরতায় নিজেকে ছাড়িয়ে যাবার প্রতিযোগিতার মধ্যে থাকে। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের নিজস্ব অফিসও রয়েছে। সেখানে প্রতিদিন নেতাকর্মীদের সরগরম উপস্থিতি।
কেন্দ্রীয় নেতারা মাদারগঞ্জকে মডেল হিসেবে ঘোষণা দিয়ে বলেন, মাদারগঞ্জে যে মডেলে আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনগুলো চলছে তা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে ভোটের রাজনীতিতে কোন শক্তিই আওয়ামীলীগকে পেছনে ফেলতে পারবেনা কখনো। তারা সংগঠন মেলার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন এটি তৃণমূল নেতাদের অভূতপূর্ব মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এই মেলার মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে আন্তরিকতা, সৌহার্দ্য বাড়ার পাশাপাশি সাংগঠনিক তৎপরতায় অনেকবেশী গতিশীলতা আসবে। সারাদেশে যদি এখানের সংগঠনের মডেল মত কাজ করে তাহলে আওয়ামী লীগ অনেক এগিয়ে যাবে।
প্রধান অতিথির বক্তৃৃতায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, জীবনে অনেক মেলা দেখেছি। কিন্তু সাংগঠনিক মেলা করা যায়-এটা ভাবিনি। মাদারগঞ্জের আওয়ামী লীগ সেটা করিয়ে আমাদের দেখিয়ে দিল। আওয়ামী লীগ যে একটি ঐক্যবদ্ধ পরিবার সেটা জানিয়ে দিল। এই মেলা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। আমরা আর বিএনপির সঙ্গে প্রতিযোগীতা করবো না-নিজেদের মধ্যে কোন এলাকার সংগঠন কত বেশি সংগঠিত তা প্রমাণে প্রতিযোগীতা করবো। এতে করে সংগঠন লাভবান হবে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনে নৌকার মার্কায় ভোট দিতে দেশবাসীর প্রতি আ্হবান জানান তিনি।
এই আসনের এমপি বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, আমি মাদারগঞ্জ-মেলান্দহ এলাকার সেবক। আপনারই (নেতাকর্মী) আমার চালিকা শক্তি। আপনারা বার বার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন বলেই আমি সংসদে গিয়ে আপনাদের কথা বলি। বর্তমান সরকার আমলে আমার এলাকার ৪১ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। ব্যতিক্রমী এই মেলার আয়োজন করায় সংশ্লিষ্ট্র সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে মির্জা আজম বলেন, শুধু জেলাই নয়, দেশের মধ্যে মাদারগঞ্জ উপজেরা আওয়ামী লীগ একটি মডেল সংগঠন সংগঠন, সেটা প্রমাণিত। বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে প্রতিযোগীতা না গিয়ে নিজেদের মধ্যে ভোট বাড়ানো এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করার প্রতিযোগীতা লক্ষ্য নিয়েই এই মেলার আয়োজন। তিনি বলেন, উপজেলার প্রতিটি ইউনিটকে গ্রাম পর্যায়ে শক্তিশালী এবং নেতাদের দক্ষ করে তুলতে পরিকল্পনা গ্রহণ করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জীবন কৃষ্ণ সাহার সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, একেএম এনামুল হক শামীম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, শিক্ষা সম্পাদক শামসুর নাহার চাপা, তথ্য গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, অ্যাডভোকেট রিয়াজুল কবির কাওছার, মারুফা আকতার পপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল রহমান বেলাল ও পৌর মেয়র মির্জা কবির প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী লীগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ