রাশিয়া বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল আজ। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখী হচ্ছে ১৯৬৬’র বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ও ৯৮’ বিশ্বকাপের তৃতীয়স্থান অর্জনকারী দল ক্রোয়েশিয়া। মস্কোতে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় শুরু হবে ম্যাচটি। এ ম্যাচে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ও তারকা ফরোয়ার্ড হ্যারি কেন ক্রোয়েশিয়ার সামনে বড় বাঁধা দাঁড়িয়েছেন। তবে এই বাঁধা টপকে ইংলিশদের রুখে দিতে বদ্ধ পরিকর ক্রোয়েশিয়া। আসরের গ্রæপ পর্বে যেমন পরিকল্পনার বেড়াজালে অধিনায়ক লিওনেল মেসি’কে আটকে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয় তুলে নিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া, ঠিক তেমনি সেমিফাইনালে কেনকে আটকে ইংল্যান্ডের জয়রথ থামাতে চায় তারা।
বিশ্বকাপে ইতোমধ্যে একটি হ্যাট্টিকসহ চার ম্যাচে ৬ গোল করে ‘গোল্ডেন বুট’ জয়ের দ্বারপ্রান্তে কেন। শেষ চারের ম্যাচেও যে তিনি জ্বলে উঠবেন তা বুঝতে পারছেন ক্রোয়েশিয়ার কোচ জøাটকো দালিচ। তাই কেনকে আটকানোর পরিকল্পনা কষছেন তিনি। তবে সেই পরিকল্পনায় নতুন কিছু নেই। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মেসিকে যে পরিকল্পনার বেড়াজালে ফেলেছিলেন, তেমনি আজকের ম্যাচে কেনকেও একই বেড়াজালে ফেলবেন তিনি। ইংলিশ অধিনায়ককে আটকে রাখার রীতিমতো হুমকিই দিলেন দালিচ। তিনি বলেন, ‘এবারের আসরে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করা খেলোয়াড়দের একজন হ্যারি কেন। এরইমধ্যে সবচেয়ে বেশি গোল সে করেছে। তাকে থামানো কঠিন। আমাদের ভালো ডিফেন্ডার ও মিডফিল্ডার আছে। আমরা মেসিকে যেভাবে আটকাতে পেরেছি। ঠিক সেভাবেই কেনকে আটকাতে পারবো বলে আশা রাখি।’
ক্রোয়েশিয়ার মত শেষ দুই ম্যাচে টাইব্রেকার পর্যন্ত যেতে হয়নি ইংল্যান্ডকে। গ্রæপ রানার্স-আপ হয়ে শেষ ষোলোতে উঠে কলম্বিয়ার বিপক্ষে বড় পরীক্ষা দেয় তারা। ১২০ মিনিটের লড়াই ১-১ গোলে শেষ হওয়ার পর টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে জয় পায় ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এর আগে টাইব্রেকারে জয়ের কোন রেকর্ড ছিল না ইংল্যান্ডের। এবার সেই বন্ধ্যাত্ব ঘোচালো তারা। তবে শেষ আটে সুইডেনের বিপক্ষে জিততে মোটেও বেগ পেতে হয়নি কেনের দলকে। ২-০ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে ২৮ বছর পর আবারো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠার কীর্তি গড়লো ইংলিশরা। তাই ইংল্যান্ডকে শক্ত প্রতিপক্ষই ভাবছেন ক্রোয়েশিয়ার কোচ দালিচ। তাই তো সেমির আগে তিনি বলেন, ‘গ্রæপ পর্ব থেকেই দুর্দান্ত ফুটবল খেলছে ইংল্যান্ড। তাদের ফুটবলশৈলি ছিলো দুর্দান্ত। ভালো পারফরমেন্স করতে না পারলে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠতে পারতো না। ভালো দল বলেই শিরোপা জয়ের অন্যতম দাবীদার তারা। আমরা এমন দলকে সমীহ করছি। আমাদের সর্তক থাকতে হবে ম্যাচের পরিস্থিতি নিয়ে। সেমিফাইনাল ম্যাচটি এবারের আসরে আমাদের জন্য আসল লড়াই। কারণ প্রতিপক্ষ হিসেবে ইংল্যান্ড বেশ শক্তিশালী দল। তারা আক্রমণাতœক ফুটবল খেলেছে। মধ্যমাঠ থেকে পরিকল্পনা ভালোভাবে সাজাতে পারে তারা। কর্ণার পেলে তাদের দীর্ঘকায় ফুটবলাররা হেডে গোল আদায় করতে পারে। সবকিছুই আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে আছে।’
এবারের বিশ্বকাপে গ্রæপ পর্বে সেরা হয়েই শেষ ষোলোতে উঠে ক্রোয়েশিয়া। পরের দুই ম্যাচ জিতে ২০ বছর পর আবারো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দলটি। তবে শেষ ষোলো ও কোয়ার্টার ফাইনালে ঘাম ঝড়ানো জয় পেতে হয়েছে তাদের। শেষ ষোলোতে ডেনমার্কের বিপক্ষে ১২০ মিনিট লড়াই করে ১-১ গোলে সমতা রাখার পর টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়া ৩-২ গোলের জয় পায়। কোয়ার্টার ফাইনালেও স্বাগতিক রাশিয়ার বিপক্ষে ১২০ মিনিট হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে ২-২ ব্যবধানে সমতায় রাখে ম্যাচটি। পরে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে জয় পেয়ে শেষ চার নিশ্চিত করে দালিচের দল। দলের এমন পারফরমেন্সে খুশী এই কোচ তাই ইংল্যান্ডকে হুমকি দিচ্ছেন, ‘আমাদের নিজেদের শক্তির উপর আস্থা আছে। ইংল্যান্ডকে আমরা ভয় পাই না। গত ম্যাচগুলো যেভাবে খেলেছি, সেভাবে খেলতে পারলে আমাদের জয় কেউই আটকাতে পারবে না। বিশেষ করে সেমিফাইনাল নিয়ে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা আছে। মাঠের খেলায় পরিকল্পনাগুলো ভালোভাবে কাজে লাগাতে চাই।’