Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উদ্বাস্তু সঙ্কটের আরো অবনতি হতে পারে

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কাউন্সিলের সাম্প্রতিক এক বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল উদ্বাস্তু ও অভিবাসী সঙ্কট বিষয়ে একটি অভিন্ন নীতি প্রণয়ন করা। কিন্তু তার পরিবর্তে এ বৈঠক বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশের মধ্যে তিক্ত মতপার্থক্যকে তুলে ধরেছে। বিষয়ের গুরুত্ব বিবেচনা করে বলা যায় যে ইউরোপের আত্মস্বার্থ নীতির কারণে ইতিমধ্যেই ট্র্যাজিক হয়ে ওঠা একটি পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটতে চলেছে । এই সম্মেলনের প্রথম থেকেই ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে মতবিরোধ আরো স্পষ্ট হতে থাকে। আফ্রিকা দিয়ে অসংখ্য অভিবাসন প্রত্যাশী ইতালি ও গ্রিসে প্রবেশ করার পর দেশ দুটি ইউরোপের অন্য দেশগুলোকে এ চাপ ভাগ করে নেয়ার আহŸান জানালেও অনেক দেশই এ বিষয়ে তাদের জোরালো আপত্তির কথা জানায়। ইউরোপিয়ান কাউন্সিল বলে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের চাপ ২০১৫ সালের মতো না হলেও নতুন করে আফ্রিকা হয়ে ইউরোপে প্রবেশের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা সত্য যে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ্পি কন্তেসহ কয়েকজন ইউরোপীয় নেতা ঐক্যবদ্ধ ইউরোপীয় অবস্থান বলে মনে করা পরিস্থিতিতে অর্জিত বিরাট বিজয় সম্পর্কে কথা বলার জন্য বীরবেশে দেশে ফিরেছেন। ইতালির অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী মাত্তিও স্যালভিনি উদ্বাস্তু ও অভিবাসী বিষয়ে তার দেশের নয়া নীতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অধিকতর মর্যাদাহানিকর ভাষা ব্যবহার করেছেন। তিনি মানবিক উদ্ধার কার্যক্রমের মাধ্যমে ইতালিতে পৌঁছা উদ্বাস্তুদের প্রসঙ্গে বলেন, তারা ইতালিূকে শুধু একটি পোস্টকার্ডের উপর দেখবে। বৈঠকে সমঝোতার ফলে এখন থেকে স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে ইইউভুক্ত দেশগুলো নতুন অভিবাসী কেন্দ্র ঠিক করতে পারবে বলে জানান ইইউ নেতারা। যাচাই-বাছাই শেষে সেসব কেন্দ্র থেকেই সত্যিকারের অভিবাসীদের গ্রহণ করা হবে; ফেরত পাঠানো হবে বাকি ‘অনিয়মিত অভিবাসীদের’। জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে অভিবাসীদের অবাধ চলাচলের সুযোগে কড়াকড়ি আরোপেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে সমুদ্র ও স্থলপথে ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের চাপ কমাতে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। ৬শ’ উদ্বাস্তু ও অর্থনৈতিক অভিবাসী বহনকারী এ ধরনের প্রথম বোট অ্যাকুরিয়াসকে ১১ জুন ফেরত পাঠানো হয়। তখন মাত্রাতিরিক্ত ব্যবস্থা বলে মনে হওয়া সিদ্ধান্তটি ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, মাল্টা ও অন্যান্য দেশের মধ্যে এক রাজনৈতিক বিরোধের সৃষ্টি করে। তবে ব্রাসেলস শীর্ষ বৈঠকের পর তার দেশ আর একা নয় বলে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর হট্টগোল কমে আসে। ইতালির পপুলিস্ট, ডানপন্থী সরকারের প্রধান কন্তে বোঝাতে চেয়েছেন যে উদ্বাস্তুদের স্বাগত না জানাে নার মনোভাব এখন বৃহত্তর ইউরোপীয় ঐকমত্য লাভ করছে। উদ্বাস্তু ও অভিবাসী নিয়ে বিতর্ক এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে যে এটা জার্মানির মত দেশে এক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে। যে সব দেশ উদ্বাস্তুদের আভিবাসনের প্রধান লক্ষ্য জার্মানি তাদের মধ্যে সম্মুখসারির দেশ বলে বিবেচিত নয়। অস্ট্রিয়া ও অন্যান্য দেশও এ সঙ্কটের সম্মুখীন। ইউরোপ নিরাপত্তা, জনগণের চাপ ও জাতীয় পরিচিতির ভিত্তি উদ্বাস্তু সঙ্কটকে দেখা অব্যাহত রেখেছে। তারা এটার বৈশি^ক মানবিক সঙ্কটে পরিণত হওয়ার বিপক্ষে। ইউরোপ যতদিন এ সঙ্কটটিকে বাঁকা দৃষ্টিতে দেখবে ততদিন তা বাড়তে থাকবে এবং সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য অনেক খারাপ পরিণতি বয়ে আনবে। মিডল ইস্ট মনিটর, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউরোপীয়


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ