ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির এক সিদ্ধান্ত মোতাবেক এখন থেকে ঢাবি ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত অবস্থান বা ঘোরাফেরা করতে পারবেননা। সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে গত ৫ জুলাই ২০১৮ তারিখ রাতে তারা এই সিদ্ধান্ত নেয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অধিদপ্তর থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গতাকাল সাংবাদিকদের জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শুধুমাত্র এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। এখানে বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ/প্রক্টরের পূর্বানুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে অবস্থান ও ঘোরাফেরা এবং কোনো ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। এতদ্বিষয়ে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নিবেন।
ছাত্রত্ব নেই এমন অছাত্রকে কর্তৃপক্ষ হলে অবস্থান করতে দেবেন না এবং অনতিবিলম্বে অছাত্রদের (যদি থাকে) হল ছাড়ার নির্দেশ সম্বলিত নোটিস প্রদান করবেন। এতদ্বিষয়ে প্রয়োজনে হল কর্তৃপক্ষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নেবেন। হল প্রশাসনের পূর্বানুমতি ব্যতীত কোনো অভিভাবক ও অতিথিও হলে অবস্থান করতে পারবেন না।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ও আবাসিক হল ও হোস্টেলসমূহে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন, চরমপন্থী ও উগ্র ভাবাদর্শ প্রচারে ও কর্মকান্ডে কেউ সংশ্লিষ্ট আছে কী না তদবিষয়ে সতর্ক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হল প্রশাসনকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হলো। কোনো অবস্থাতেই যাতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের সদস্য ও চরমপন্থীরা হলে প্রবেশ অথবা অবস্থান করতে না পারে সে ব্যাপারে হল প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক ও তৎপর থাকতে হবে। এতদবিষয়ে ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সকল হলে অবস্থানরত ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের সাথে হল প্রশাসন নিয়মিত মত বিনিময় সভা করবেন।
শিক্ষা ও শিক্ষা-সহায়ক কর্মকান্ড ব্যতীত আবাসিক হল/হোস্টেলে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ও স্বাভাবিক জীবনে বিঘœ ঘটায় এমন কর্মসূচি (উস্কানিমূলক বক্তব্য, গুজব ছড়ানো প্রভৃতি) গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেয়া হোক। স¤প্রতি ছাত্রী হলে যারা গভীর রাতে স্লোগান দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে বিঘ ঘটিয়েছে তাদেরকে আবাসিক জীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে যত্মশীল থাকার জন্য পরামর্শ দিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রাধ্যক্ষগণ চিঠি দিবেন।
স¤প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত কতিপয় অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার তদন্ত করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে আহবায়ক করে ৭ (সাত) সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের কাছে করা মন্তব্যে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে জঙ্গী তৎপরতার সাথে তুলনা করেন, একই সাথে মেয়েদের হলে গভীর রাতে কোটা আন্দোলনের পক্ষে শ্লোগান দেয়াকে অপতৎপরাতা বলে উল্লেখ করেন।