পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর ৫০তম থানা হিসেবে গত শনিবার থেকে যাত্রা শুরু করেছে ‘হাতিরঝিল থানা’। গতকাল ছিল থানাটির প্রথম কার্যদিবস। প্রথমদিনের কার্যক্রমে ছিলনা নগরীর অন্য থানার মতো ব্যস্ততা। ওসি অন্যান্য কর্মকর্তাসহ ৩০ জন লোকবল নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে থানাটি। রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত মামলা করতে আসেনি কেউ। সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন এক নারীসহ ১৪ জন। বেশিরভাগ জিডি ছিল হারানো সংক্রান্ত। গতকাল হাতিরঝিল থানাসূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাতিরঝিলের মধুবাগ অংশে নির্মিত সেতুটি অতিক্রম করে ডানদিকের গলি দিয়ে একটু সামনে মিনিট তিনেকের পথ হাটলেই চোখে পড়বে সুন্দর একটি ছয়তলা ভবন। পুরো ভবনটি ভাড়া নিয়ে থানার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
বিকেলে সরেজমিনকালে দেখা যায়, থানার ভেতরে প্রবেশ পথেই একটি অস্থায়ী সাঁজানো সুন্দর গেট। উদ্বোধনের জন্য গেটটি করা হয়েছিল। প্রবেশ পথের দু’পাশে সারিবদ্ধভাবে সাঁজানো ফুলদানিতে রয়েছে জীবন্ত ফুলের চারা। থানা অভ্যন্তরে ডিউটি অফিসারের কক্ষের ঠিক সামনেই পৎ পৎ করে উড়ছে লাল-সবুজের পাতাকাসহ তিনটি পতাকা। অন্যদুটি বাংলাদেশ পুলিশ ও ডিএমপি পুলিশের নিজস্ব পতাকা। পতাকাগুলো বাংলার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জানান দিচ্ছিল।
থানায় প্রবেশ করতেই সালাম দিয়ে সুভেচ্ছা জানান কনস্টেবল মো. হারেস আহমেদ। এরপর তিনি সোজা ডিউটি অফিসারের কক্ষ দেখিয়ে অভিযোগ জানাতে বলেন।
থানার ভেতরে ঢুকতে প্রথমেই ডিউটি অফিসারের কক্ষ। তার বামদিকের কয়েকটি কক্ষে রয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), পরিদর্শক (তদন্ত) ও পরিদর্শক (অপারেশন)। ওসির কক্ষে প্রবেশের বামপাশে রয়েছে নারীদের সহায়তার জন্য ‘নারী ও শিশু সহায়তা কেন্দ্র’।
ডিউটি অফিসারের কক্ষে তিনটি টেবিল। একটিতে ডিউটি অফিসারগণ বসেন। অন্য দুটিতে ওয়ারলেস নিয়ন্ত্রণ ও সার্ভিস ডেলিভারি শাখার কর্মকর্তারা বসেন। এই কক্ষটি অতিক্রম করে একটু ভেতরে রয়েছে নারী-পুরুষের জন্য পৃথক হাজতখানা। সুন্দর কালো টাইলসে সাঁজানো হাজতখানা দুটির ভেতরে রয়েছে পরিচ্ছন্ন টয়লেট। হাজতখানা দুটি সার্বক্ষণিক সিসি টিভি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
ডিউটি অফিসার জামাল হোসেন জানান, প্রথমদিনের মতো কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত (রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত) ১৪টি (সাধারণ ডায়েরি) জিডি দায়ের করেছেন। একজন নারী ছাড়া পুরুষ জিডিকারীর সংখ্যাই বেশি। সবগুলোই জিডিই হারানো সংক্রান্ত। রাত সাড়ে ৮টার দিকে এক নারী তার স্বামীর বিরুদ্ধে জিডি করেছেন। এ ছাড়া বিকেলের দিকে রেখা আক্তার নামে এক নারী তার স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের জিডি করতে এসেছেন। অফিসারারা তাকে স্বজনদের সঙ্গে আলাপ আবার আসতে পরামর্শ দেন।
৮ নম্বর সিরিয়ালে জিডিকারী শিক্ষার্থী মনির হোসেন ইনকিলাবকে জানান, মোটরসাইকেলের লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্র হারিয়ে যাওয়ার কারণে জিডি করেছেন। তিনি বলেন, এতদিন পুলিশি সহায়তার জন্য রমনা থানায় যেতে হতো। এখন খুব দ্রæতই জিডিসহ সব কাজ করা যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসীন্দা বেসরকারী চাকুরে মো. সুমন জানান, হাতিরঝিল আগে থেকেই অপরাধপ্রবণ এলাকা ছিল। থানাটির খুবই দরকার ছিল। এখন চোর-ডাকাতরা হানা দিলে খুব সহজে পুলিশকে জানানো যাবে।
গৃহবধূ রাজিফা সুলতানা রোশনি জানান, থানাটি কাছাকাছি হওয়ায় অনেক নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও সেবা গ্রহন করতে পারবেন। এতে ইভটিজিংসহ অন্যান্য অপরাধ হ্রাস পাবে। এছাড়া স্থানীয় বখাটেরা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইকবাল হোসেন ইনকিলাবকে জানান, থানাটি নতুন হওয়ায় বেশি বেশি প্রচারণা চালাতে হবে। এ জন্য মাইকিং বা পোস্টারিং করা যেতে পারে। তিনি বলেন, মাদক বিরোধী অভিযানকে অগ্রাধিকার দিয়ে সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ, ইভটিজিং, নারী নির্যতন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীদের আইনের আানার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হবে।
থানার ওসি আবু মো. ফজলুল করিম ইনকিলাবকে জানান, ‘পুলিশের প্রথম কাজ হলো নাগরিকদের আইনি সহায়তা দেওয়া। মানুষ স্বাচ্ছন্দে থানায় অভিযোগ করতে পারবে। আমরা সর্বোচ্চ দ্রæততর সময়ে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করবো।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।