বাড়িতেই ফাইনাল দেখবেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট কাতারে
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে কাতারে যাচ্ছেন না আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ। তিনি জানান, আজ
স্পেন, আর্জেন্টিনা, জার্মানির মতো সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা বিদায় নেওয়ার পর ফ্রান্স ও উরুগুয়ের লড়াই হবে রাশিয়া বিশ্বকাপের একমাত্র কোয়ার্টার-ফাইনাল যেখানে মুখোমুখি হচ্ছে দুই সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। নিজনি নভগোরোদ স্টেডিয়ামে আজ রাতে সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে দল দুটি। জমজমাট এই ম্যাচের আগে চলুন চোখ বুলিয়ে নেয়া যাক দু’দলের কিছু তথ্য-উপাত্তে -
সপ্তমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলবে ফ্রান্স। শেষ আটের আগের ছয় ম্যাচে চার জয়ের সঙ্গে আছে দুই হার। অন্যদিকে এর আগে উরুগুয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনাল খেলেছে চারবার। ইংল্যান্ডকে ১৯৫৪ সালে, সোভিয়েত ইউনিয়নকে ১৯৭০ সালে ও ঘানাকে ২০১০ সালে শেষ আটে হারিয়ে সেমি-ফাইনালে পৌঁছে তারা। অন্য ম্যাচটিতে ১৯৬৬ সালে পশ্চিম জার্মানির কাছে পরাজিত হয় দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
বিশ্বকাপে পেনাল্টি শুট আউটে ফ্রান্সের জয়-পরাজয় সমান দুটি করে। শেষ ২০০৬ সালে ফাইনালে ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হারে ফরাসিরা। অন্যদিকে বিশ্বকাপে একবারই পেনাল্টি শুটআউটের অভিজ্ঞতা আছে উরুগুয়ের। ২০১০ সালে জোহানেসবার্গে কোয়ার্টার-ফাইনালে ঘানাকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শেষ চারে পৌঁছায় অস্কার তাবারেসের দল।
দুই দলই চলতি আসরের গ্রæপ পর্ব শেষ করেছে গ্রæপ সেরা হয়ে। তিন ম্যাচেই জয় নিয়ে ‘এ’ গ্রæপের চ্যাম্পিয়ন হয় উরুগুয়ে। আর দুই জয় ও এক ড্রয়ে ‘সি’ গ্রæপের সেরা ফ্রান্স। শেষ ষোলোতে ৪-৩ গোলে আর্জেন্টিনাকে হারায় দিদিয়ে দেশমের দল। আর ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় পায় উরুগুয়ে।
নিষেধাজ্ঞায় শেষ আটের গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে ফ্রান্স পাচ্ছে না মিডফিল্ডার বেøইস মাতুইদিকে। এছাড়া দলে আরও চারজন (অলিভিয়ে জিরুদ, বাঁজামাঁ পাভার্ড, পল পগবা ও কোরোঁতাঁ তোলিসো) রয়েছেন যারা আর একটি হলুদ কার্ড পেলেই এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হবেন। অন্যদিকে টুর্নামেন্টে উরুগুয়ের হয়ে একমাত্র হলুদ কার্ডটি দেখেছেন রদ্রিগো বেন্তানকুর।
স্পেন বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলেও স্প্যানিশ ক্লাব আতলেতিকো মাদ্রিদের চারজন খেলোয়াড়কে দেখা যেতে পারে ফ্রান্স ও উরুগুয়ের মধ্যকার ম্যাচে। ফ্রান্স দলে আছেন অঁতোয়ান গ্রিজমান ও লুকা এরনঁদেজ। আর উরুগুয়ের রক্ষণে আছেন হোসে মারিয়া হিমেনেস ও দিয়েগো গডিন।
১৯৩০ ও ১৯৫০ সালে দুইবার বিশ্বকাপ জিতেছে উরুগুয়ে। অন্যদিকে ১৯৯৮ সালে নিজেদের একমাত্র বিশ্বকাপ ঘরে তোলে ফ্রান্স। দুই দলের লড়াই হবে চলতি বিশ্বকাপের একমাত্র কোয়ার্টার-ফাইনাল যেখানে দুই সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পরস্পরের মুখোমুখি হবে।
টানা সাত জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে নামবে উরুগুয়ে। শেষ সাত ম্যাচে নিজেরা ১৩টি গোল করার বিপরীতে হজম করেছে মোটে একটি। চলতি আসরে গ্রæপ পর্বে একমাত্র দল হিসেবে কোনো গোল হজম করেনি তারা। গত বছরের নভেম্বরে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে শেষ হেরেছিল উরুগুয়ে।
শেষ ষোলো ম্যাচে ফ্রান্সের হার মাত্র একটি। মার্চে ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে হারটি এসেছিল কলম্বিয়ার বিপক্ষে। নিজেদের শেষ দশ ম্যাচে আট জয়ের সঙ্গে আছে দুটি ড্র।
নিজনি নভগোরোদ স্টেডিয়ামে চলতি আসরের শেষ ম্যাচ হবে এটি। দুই দলই এখানে খেলবে প্রথমবারের মতো। এই মাঠে আগের পাঁচ ম্যাচে গোল হয়েছে ১৭টি। এখানে ক্রোয়েশিয়া ও ডেনমার্কের শেষ ষোলোর ম্যাচটির নিষ্পত্তি হয়েছে পেনাল্টি শুট আউটে।
এর আগে বিশ্বকাপে উরুগুয়ে ও ফ্রান্সের দেখা হয়েছে তিনবার। ১৯৬৬ সালে গ্রæপ পর্বের এক ম্যাচে প্রথম দেখায় ২-১ গোলের জয় লাতিন পরাশক্তিদের। পরের দুই ম্যাচ হয়েছে গোলশূন্য ড্র। পাঁচ বছর আগে মন্তেভিদেওতে দুই দলের শেষ দেখা হয়েছিল এক আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে। ওই ম্যাচে ১-০ গোলে জিতে স্বাগতিক উরুগুয়ে।
ফ্রান্সের ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপে চলতি বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষের জালে পাঁচটি শট নিয়েছেন। সবগুলোই লক্ষ্যে ছিল এবং তার মধ্যে তিনটি গোল হয়েছে।
বিশ্বকাপ ও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ মিলিয়ে ফরাসি ফরোয়ার্ড আঁতোয়ান গ্রিজমান শেষ পাঁচ নক আউট ম্যাচে করেছেন ছয় গোল।
চলতি আসরে উরুগুয়ের শেষ তিনটি গোলই করেছেন এডিনসন কাভানি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।