পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে ঘোষিত সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে মানববন্ধন কর্মসূচী বিভিন্ন স্থানে বাধার মুখে পন্ড হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাদের অভিযোগ সারাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষন পরিষদের ব্যানারে মানব বন্ধন করতে গেলে ছাত্রলীগ বাধা দিয়েছে। কর্মসূচী পালন করতে গেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী সাধারণ ছাত্রদের উপর ছাত্রলীগের নেতারা দফায় দফায় হামলা করেছে। এতে ১০জন আহত হয়েছে। সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ছাত্রলীগের নেতারা আন্দেলনকারীদের ব্যানার কেড়ে নিয়েছে। এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের শাবির শাখার আহবায়ক মোঃ নাসির উদ্দিনকে শাহপরান হলে আটকে রাখার অভিযোগ করেছে আন্দোলনকারীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্র ঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচী ছিলনা। তবে ক্লাস এবং পরীক্ষা যথারিতি অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে প্রগতিশীল ছাত্র জোট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের দ্রæত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। গতকাল সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ছাত্রফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন প্রিন্স প্রমুখ। সমাবেশে লিটন নন্দী তার বক্তব্যে বলেন, ছাত্রলীগ তার চিরাচরিত চরিত্রে ফিরে গেছে। মতের বিপরিতে গেলেই তার উপর শারীরিক শক্তি প্রদর্শন করতে হবে’- এটা ছাত্রলীগের এক ধরণের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে দফায় দফায় হামলার মধ্য দিয়ে তাদের সন্ত্রাসী মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছে।
রাবি সংবাদদাতা জানান, পূর্ব ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবি) কোটা সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধনে অংশ নেয়া আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর দফায় দফায় হামলা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্র্মীরা। সকাল ১০ টায় বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন শুরুর আগ মহুর্তে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় আরবী বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনন্ত ও নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনির্ভাসিটির আহবায়ক আব্দুল্লাহ শুভ, আইন বিভাগের ৩য় বর্ষের আবু রায়হানসহ অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
ক্যাম্পাস ঘুরে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমে জানা যায়, সকাল পৌনে দশটার দিকে কোটা আন্দোলনকারীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের জন্য গ্রন্থাগারের সামনে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বর থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমদ রুনুর নেতৃত্বে ২০-২৫ জন নেতাকর্মী গ্রন্থাগারের সামনে আসেন। সেখানে এসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন রকম গালিগালিজ করেন। এসময় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান মিশু মানববন্ধনের ব্যানার কেড়ে নেয়। তারা আন্দোলনকারীদের এলোপাথাড়ি থাপ্পর ও কিল-ঘুষি মারতে থাকে। আর অন্যদেরকে ধাওয়া দেয় ছাত্রলীগের অন্য নেতাকর্মীরা। এসময় আন্দোলনকারীরা কেউ গ্রন্থাগারের সামনে দিয়ে, কেউ গ্রন্থাগারের পেছন দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে বেলা ১১ টার দিকে আবার গ্রন্থাগারের সামনে আবার মানববন্ধনের চেষ্টা চালালে ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমদ রুনুর নেতৃত্বে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অন্তত ৫ থেকে ৭জন শিক্ষার্থীকে বেধরক মারধর এবং দফায় দফায় ধাওয়া দেয়ার ঘটনা ঘটে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের রাবি শাখার আহবায়ক মাসুদ মোন্নাফ বলেন, ‘পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকে। এরই মধ্যে বিশ^বিদ্যালয় প্রক্টর মানববন্ধন শুরুর পূর্ব মহুর্তে আমাদের কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে প্রক্টর অফিসে সময় ক্ষেপণ এবং আমাদের আটকে রাখে। অন্যদিকে ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার নেতৃত্বে মানবন্ধনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালানো হয়। তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে রাবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, মারধরের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। অন্যান্য দিনের মতো নেতাকর্মীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দিয়েছি মাত্র। জানতে চাইলে বিশ^বিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের সকল বিশৃঙ্খলা এড়াতে প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
শাবি সংবাদদাতা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত মানববন্ধনে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বাধা প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। এদিকেকোটা সংস্কার আন্দোলনের শাবির আহŸায়কমো. নাসির উদ্দিনকে শাহপরান হলে আটকে রাখার অভিযোগ করেছে আন্দোলনকারীরা। ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, ঢাবিতেকোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল রবিবার বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন হওয়ার কথা থাকলেও ছাত্রলীগের অবস্থানের কারণে তা অনুষ্ঠিত হয়নি। এসময় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের থেকে ব্যানার ছিনিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের শাবি’র যুগ্ম আহŸায়ক এন এইচ খন্দকার নোমান বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন থেকে আহŸায়ক মো. নাসির উদ্দিনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এবং আমাদেরকে হুমকি দেয়ার কারণে আমরা মানববন্ধন করতে পারিনি। শাবি ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মানববন্ধনে আমাদের পক্ষ থেকে বাধা দেয়া হয়নি। তাদের কর্মসূচি না করার জন্য অনুরোধ করছিলাম, তারা আমাদের কথা রেখে চলে গেছে। তবে দিনাজপুর অফিজ জানায়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা মানববন্ধন এবং ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা জানান ছাত্রলীগের কড়া পাহারার কারণে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কোন কর্মসূচী গতকাল পালিত হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।