রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সীতাকুন্ডে একটানা রেকর্ড পরিমান ভারী বর্ষণে কোটি কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হন উপজেলার সাগরের বেড়িবাঁধ ও নির্মাঞ্চলের খেটে খাওয়া কৃষক পরিবার। পাহাড়ী ঢলের পানি বৃদ্ধি পেয়ে পৌরসভাসহ উপকূলীয় ১০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছেন তারা। গত বছরও ঠিক একই ভাবে কৃষক আউশ ধানের আবাদ করে কোটি কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হয়ে ছিলেন। কিন্তু তার পরেও চলতি মৌসুমে তারা আবারও একটু লাভের আশায় ধান ও সবজির আবাদ করেন। তার মধ্যে প্রবল বর্ষণে বেশির ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪নং মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী,বসরতনগর,ভাটেরখীল,গোপ্তাখালী, হাসনাবাদও ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়ন, পৌরসভাস্থ সিবপুর এলাকা। এছাড়া বাঁশবাড়ীয়া, বারৈয়াঢালা, মহালংকা, বহরপুর, বাড়বকুÐ, কুমিরা, সোনাইছড়ি, বারআউলিয়া, ভাটিয়ারী, ফৌজদারহাট, সলিমপুরসহ ১০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। এছাড়া পৌরসভাস্থ পন্থিছিলা, শেখ পাড়া, শেখ নগর, ইদিলপুর, দাসপাড়া, স্টেশান রোড, আমিরাবাদ, মধ্যম মহাদেব পুরের চৌধুরীপাড়া, ভূঁইয়া পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বর্ষণের পানি ঢুকে জলাবদ্ধতায় ক্ষতির শিকার হয়েছে। শুধু তাই নয় উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় শতশত বসত ঘরে ঢলের পানি ঢুকে পড়েছে।হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে জনজীবন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মুরাদপুর গুলিয়াখালী এলাকার মোঃ আবু তাহের বলেন,গত এপ্রিল মাসে ১৬০ শতক জমিতে তিনি তিতকরলার আবাদ করেন। এতে তার খরচ পরেছে প্রায় ২ লাখ টাকা। কিন্তু কয়েক দিনের একটানা ভাড়ী বর্ষণে বর্তমানে সবজি ক্ষেত বেশির ভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। এভাবে বর্ষণ হতে থাকলে বাকি সবজিগুলোও নষ্ট হয়ে যাবে। তবে এমন অবস্থায় ক্ষেতের সবজি নষ্ট না হলে তিনি প্রায় ৫ লাখ টাকার সবজি বিক্রি করতে পারতেন। অপরদিকে একই এলাকার কৃষক আয়ুব আলী জানান, ১২০ শতক জমিতে তিতকরলা ও শশা’র আবাদ করেছেন। এতে শ্রমিকও বিভিন্ন বাবদ তার খরচ পরেছে ৮০ হাজার টাকা। ক্ষেতের সবজি সামান্য কিছু বাজারে বিক্রি করলেও বাকিগুলো পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তিনি বলেন গতবছরও এ অঞ্চলের ¯øুইচ গেইট ভেঙে পড়ার কারণে সাগরের জোয়ারের পানি ও পাহাড়ী ঢলের পানি ¯øুইচ গেইট দিয়ে নিস্কাশন হয়না । ফলে এলাকায় সদ্য রোপন করা আউশ ধানের চারা ও কৃষকদের বিভিন্ন রকম সবজি জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়ে যায়। এ বøকে দায়ীতে¦ থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জ্ঞান রঞ্জণ নাথ বলেন, চলতি মৌসুমে প্রবল বর্ষণে কৃষকদের সদ্য রোপন করা আঊশ ধানের চারাও সবজি ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে।পানি নিস্কাশনের সু-ব্যবস্থা না থাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় এইসব নির্মাঞ্চলের শত শত একর জমির আঊশ ধান ও সবজি ক্ষেত বেশির ভাগই নষ্ট হয়ে পড়েছে। তবে পানি সরে গেলে আউশ ধান কিছুটা রক্ষা পেতে পারে এবং কৃষকদের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমানও জানা যাবে। বিশেষ করে মুরাদপুর বসরত নগর ¯øুইচ গেইট অনেক দিন পর্যন্ত অকেজো হয়ে অছে।তাই এলাকার দুঃখ এ ¯øুইচ গেইট। এদিকে ১নং সৈয়দপুর শেখের হাট ব্রিকফিল গ্রামের কৃষক মোঃ খাইরুজ্জামান বলেন তার নিজের ও তার এলাকার কৃষক আউশ ধান ও ঢেঁরশ,বর্বটিসহ বিভিন্ন রকম সবজি আবাদ করেন। কিন্তু একটানা ভাড়ী বর্ষনের কারণে বেশির ভাগ সবজি পানিরে নিচে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষক ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। ৬নং বাঁশবাড়ীয়া এলাকার এক মেম্বার মোঃ রাশেদ জানান তিনি জঙ্গল বাঁশবাড়ীয়া পাহাড়ী এলাকার পাদদেশে প্রায় ২একর জমিতে অন্যান্য বছরের মত এবছরও পেপে রোপন করেছেন। কিন্তু পাহাড়ী ঢলের পানিতে নিমর্জ্জিত হয়ে পুরোটাই জমির পেপে’র চারা নষ্টহয়ে গেছে। তিনি বলেন এসব পেপের চারা বড় হলে এখান থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকার পেপে উৎপাদন করা যেত। এভাবে অসংখ্য কৃষক পরিবার তাদের ব্যাপক ক্ষতির কথা বিভিন্ন মাধ্যমে সাংবাদিকদের জানান। ৪নং মুরাদপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহেদ হোসেন নিজামী(বাবু’র) কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে জানান মৌসুমে রেকর্ড পরিমান ভারী বর্ষণে আশপাশের ইউনিয়নের পানি ও পাহাড়ী ঢলের পানি বৃদ্ধিপেয়ে তার এলাকা দিয়ে প্রবাহীত হচ্ছে। এতেকরে গ্রাম্যসড়ক,কৃষকদের জমির ফসল ও পুকুরের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডে বসবাসরত অসংখ্য মানুষের বসত ঘরেও ঢলের পানি ঢুকে মানুষের জীবন যাত্রা অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে। এতে তার ইউনিয়নে সব মিলিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন এঅঞ্চলের প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভর। এমন মৌসুমে কৃষক জমিতে আউশ ধানের আবাদ করে থাকেন। কিন্তু ঢলের পানিতে তা তলিয়ে গেছে। এতে করে কৃষক পরিবার সারা বছর অপেক্ষা করে ধান রোপন করে একটু লাভের কথা ভাবেন তা আর হয়ে উঠেনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।