Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আষাঢ়ী বর্ষণের সাথে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ার আর উজানের ঢলে দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল জনপদ ও ফসলী জমি প্লাবনের কবলে

বরিশাল বুরো | প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০২২, ৬:০৮ পিএম

আষাঢ়ী বর্ষণের সাথে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ার আর উজানের সাগরমুখি ঢলে দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল জনপদ সহ ফসলী জমি এখনো প্লাবনের কবলে। এখনো ভোলার তজুমদ্দিনে মেঘনা এবং ঝালকাঠী ও বরগুনার পাথরঘাটার বিষখালী নদীর পানি বিপদ সীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ভোলার তেতুলিয়া ও দৌলতখানে মেঘনা, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের বুড়িশ^র, বরগুনা সদরে বিষখালী এবং পিরোজপুরের বলেশ^র নদীর পানিও বিপদ সীমার কাছে প্রবাহিত হচ্ছে। সাগর কিছুটা উত্তাল রয়েছে। বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের সব নদী বন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেতের আওতায় রাখা হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে মাঝারী বর্ষন অব্যাহত রয়েছে। সোমবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরিশালে ৮৩ মিলিমিটার, ভোলাতে ৯০ মিলিমিটার, ঝালকাঠীতে ৬৭ মিলিমিটার, পিরোজপুরে ৪৭ মিলিমিটার পটুয়াখালীতে ১২ মিলিমিটার ও বরগুনাতে ৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। প্রবল বর্ষনে বরিশাল মহানগরীর বেশীরভাগ রাস্তাঘাট সহ বসতি এলাকায়ও পানি আটকে যাচ্ছে। ফলে এনগরীর অনেক এলাকার মানুষেরই দূর্ভোগ এখন সব বর্ণনার বাইরে।
অতি সাম্প্রতিক পূর্ণিমায় ভর করে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের সাথে গত কয়েক দিনের বর্ষনে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার ওপরে ও প্রায় সমান্তরাল প্রবাহিত হওয়ায় উত্তর ও পূর্বÑউত্তরের বণ্যার পানি বঙ্গোপসাগর কাঙ্খিত মাত্রায় গ্রহন করছে না। অথচ উজানের পানির ৭০ ভাগই দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদী দিয়ে বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত হবার কথা।
আষাঢ়ের শুরুতেই উজানের ঢলের সাথে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের প্লাবনে দক্ষিনাঞ্চলের বিপুল ফসলী জমি সহ একের পর এক জনপদও প্লাবিত হচ্ছে। ফলে এ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার মানুষের দূর্ভোগের কোন সীমা নেই। অনেক এলাকায় দিনে দুবার জোয়ারের সময় প্লাবিত হয়ে ভাটার সময় পানি নেমে যাচ্ছে।
তবে সবচেয়ে বড় ঝুকি সৃষ্টি হচ্ছে এ অঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমনের বীজতলা নিয়ে। আসন্ন ‘খরিপ-২’ মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৭ লাখ হেক্টর জমিতে ১৫ লাখ টনের মত আমন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারন করেছে কৃষি মন্ত্রনলয়। এলক্ষে কৃষকরা বীজতলা তৈরী শুরু করলেও সাগরের জোয়ার আর উজানের ঢলে কৃষকের কপালে দুঃশ্চিন্তার ভাজ ক্রমশ গভীর হচ্ছে। সাথে গত ৩ দিনের বর্ষণ পরিস্থিতির অবনতি আরো তড়ান্বিত করছে।
এদিকে নদ নদীগুলোতে জোয়ারের সাথে উজানের ঢলের পানি বৃদ্ধির ফলে ভোলাÑলক্ষ্মীপুরের ইলিশাঘাট সহ দক্ষিণাঞ্চলের বেশীরভাগ ফেরিঘাটই জোয়ারের সময় প্লাবিত হচ্ছে। ফলে দিন-রাতের বেশীরভাগ সময়ই যানবাহন পারাপার প্রায় বন্ধ থাকছে। জোয়ারে সাগর থেকে বাড়তি পানি উপক’লভাগে চলে আসায় গত সপ্তাহ যুড়েই দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল এলাকা প্লাবনের শিকার হচ্ছে। সাথে বঙ্গোপসাগর উজানের ঢলের পানি গ্রহন না করায় দক্ষিণাঞ্চলে পানির উচ্চতা বাড়ছে। সাগর উজানের পানি গ্রহন না করায় উত্তর ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের বণ্যা পরিস্থিতির উন্নতিও বিলম্বিত হচ্ছে বলে মনে করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল মহল।
আবাহাওয়া বিভাগ থেকে মৌসুমী বায়ু দক্ষিণাঞ্চল সহ সারা দেশে সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় থাকার কথা জনিয়ে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চল এবং উপক’লীয় এলাকায় হলকা থেকে মাঝারী বর্ষনের সাথে কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভবনার কথাও বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ