Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘অমোচনীয় ক্ষত’, ‘অমার্জনীয় ক্ষমা’

জার্মান সংবাদপত্রে লো’র দলকে তুলোধোনা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০১৮, ৯:৫৯ পিএম

বিশ্বচ্যাম্পিয়নের শিরোপা ধরে রাখবে দল- এ বিশ্বাস নিয়েই তো রাশিয়ায় পা রেখেছিলেন জার্মান ফুটবল ভক্তরা। কিন্তু এ কী হয়ে গেল? সব অঙ্কই যে গুলিয়ে গেল। প্রথম ম্যাচ থেকেই বেরঙিন ছিল জার্মানি। মেক্সিকো ম্যাচে হার থেকেও শিক্ষা নেওয়া যায়নি। ইনজুরি টাইমের গোলে সুইডেনকে কোনক্রমে হারানো। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া যে একেবারে ঝামা ঘষে দিয়ে গেল। ৮০ বছরে এরকম তো হয়নি। বিশ্বকাপে প্রথমবার গ্রæপ পর্ব থেকে ছিটকে গেল হিটলারের দেশ। যে ইতিহাস আবার তৈরি হল স্ট্যালিনের দেশে।
১৯৯৮ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ২০০২ বিশ্বকাপে প্রথমরাউন্ডের বৈতরণী পেরুতে পারেনি। ২০০৬ এর শিরোপাধারী ইতালি ছিটকে গেল ২০১০ সালের গ্রæপপর্ব থেকেই। স্পেনেরও একই দশা। ২০১০ এর বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ২০১৪ বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডের বাঁধা টপকাতে পারেনি। তালিকায় এবার যোগ হল জার্মানি। যে পরিসংখ্যান জার্মান ভক্তদের যন্ত্রণা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পরেই গ্যালারিতে থাকা জার্মান সমর্থকরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এখনও চলছে কাটা-ছেড়া। পোস্টমর্টেমের পর বোঝা যাবে কলঙ্কিত হারের কারণ। তবে তার আগেই অবসরের গুঞ্জন দলটিকে দীর্ঘ এক যুগ ধরে দিশা দেখানো কোচ জোয়াকিম লোর। তাতে কি আর থেমে থাকে সমালোচনা! দেশিটির সংবাদমাধ্য মগুলোতে এরই মধ্যে তুলোধুনার শিকার হতে হয়েছে জার্মানদের। গতকাল প্রকাশিত সবক’টি জার্মান পত্রিকাতেই এই হার ঠাঁই করে নিয়েছে প্রধান শিরোনামে।
জার্মানির এক বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, ‘বিদায়! এর থেকে ভাল কিছু আমরা আশা করতে পারিনা।’ পত্রিকার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘জার্মানির ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কলঙ্ক। ০-২ হেরে গ্রæপপর্ব থেকেই বিদায়।’ প্রায় সকল পত্রিকাতেই এটিকে ‘ঐতিহাসিক বিদায়’ বা ‘ঐতিহাসিক ব্যর্থতা’ বলে আখ্যা দিয়েছে। তবে এর মাঝে আলাদা করে বিশ্ব মিডিয়ার নজর কেড়েছে আরেকটি শিরোনাম। দের পাগেসপিজেল তাদের প্রধান শিরোনামে কোচ জোয়াকিম লোর একটি হতাশ ছবি দিয়ে লিখেছে ‘আউট!’। প্রায় একই রকম শিরোনাম দিয়েছে ডাই ওয়েল্ট’ও, ‘ওভার এন্ড আউট’! সেটা কাকে বা কাদের বলা হচ্ছে, আলাদা করে বলবার প্রয়োজন পড়ে না। বিস্তারিত সংবাদে ওয়েল্ট লিখেছে, ‘কাজানের এই ক্ষত অমোচনীয়’ বলে। এটিকে অমার্জনীয় ক্ষমা হিসেবেও দেখেছে সংবাদমাধ্যমগুলো।
তবে সবচেয়ে আলোড়িত শিরোনাম করেছে জনপ্রিয় দৈনিক বিল্ড। মাত্র দুটি শব্দ ‘ওহনে ওর্তে!’ (নো ওয়ার্ডস বা বলার কিছু নেই!) পাশে ম্যাচের স্কোর লাই ‘০-২’ লিখে যেন গোটা জাতির হতাশাই প্রকাশ করলো তারা। এই একই শিরোনাম ২০১৪ বিশ্বকপে ব্রাজিলকে ৭-১ গোলের হারের দিনও করেছিল পত্রিকাটি। পার্থক্য শুধু সেদিনের টনি ক্রুসের বুনো উল্লাসের ছবিটি বদলে ঠাঁই নিয়েছে তারই একটি হতাশার চিত্র। কিছুটা ভিন্ন মাত্র দিয়েছে আরো দুটি শিরোনাম
গোটা দেশ ভেঙে পড়েছে। জার্মানির এক ফুটবল ভক্ত বলেছেন, ‘শুরু থেকেই কোনকিছু ঠিক ছিল না। প্রথম ম্যাচে হারতে হল। দ্বিতীয় ম্যাচে কোনওক্রমে জয়। আর কথা বলার জায়গায় নেই।’ আর একজন বলেছেন, ‘দলটা লড়তেই পারেনি।’ জার্মানির অপর এক সংবাদপত্রে লেখা হয়েছে, ‘নেই কোনও পরিকল্পনা। কোনও আবেগ।’ টনি ক্রুসের ভাই যদিও সান্ত¦না খোঁজার চেষ্টা করেছেন এই বলে, ‘এটাই ফুটবল।’ তবে সেই স্বস্তি পেতে কতটা কাঠখড় পোড়াতে হয় সেটি জার্মানদের চাইতে আর কে-ই-বা ভালো জানে!



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বকাপ

২৩ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ