Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাঁদপুরে স্বজনরাই আ.লীগ নেত্রী-অধ্যক্ষ ফেন্সির খুনি

 টাকার যোগান কে দিয়েছে  এক ঘাতকের দেশ ত্যাগ  গ্রেফতার মেডিক্যাল ছাত্র রাকিবুল

বিএম হান্নান চাঁদপুর থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০১৮, ১২:০২ এএম

 চাঁদপুরের কলেজ অধ্যক্ষ ও মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী শাহিন সুলতানা ফেন্সি হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। দুই ঘাতকের একজনকে গ্রেফতারের পর রহস্যের জট খুলেছে। ওই ঘাতক আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ঘাতক টাকার বিনিময়ে ফেন্সিকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে। অপর ঘাতক দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। দুই ঘাতকই ফেন্সির স্বামী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রীর চাচাতো ভাই।
পুলিশের সূত্র জানায়, ফেন্সি হত্যাকারী দুইজনই হচ্ছে আত্মীয়। গ্রেফতারকৃত ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র রাকিবুল হাসান টাকার বিনিময়ে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে। ফেন্সিকে হত্যা করার জন্য আগেই ঘাতকদের হাতে টাকা কে দিয়েছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে চাঁদপুর জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মো. মিজানুর রহমান জানান, হত্যা মামলার তদন্ত খুব নিবিড়ভাবে করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে অনেককেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সহসাই ভালো কিছু জানানো যাবে।
গত মঙ্গলবার চাঁদপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের একজন বিচারকের উপস্থিতিতে রকিবুল হাসান ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। পুলিশের সূত্র জানায়, এই দুই আসামি মামলার এজহারভুক্ত না হলেও প্রধান আসামি ফেন্সির স্বামী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী জুলেখা, জহিরের ভাই-বোনকে আটকের পর রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে তারাই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আরও কয়েকজনের নাম প্রকাশ করে।
গত সোমবার মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা একটি বিশেষ দল নিয়ে রাজধানী থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহায়তায় জহিরুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী জুলেখার চাচাতো ভাই রাকিবকে গ্রেফতার করেন। তার বাড়ি মতলব উত্তর উপজেলার ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়নের রাড়িকান্দি গ্রামে। গ্রেফতারের পর তাকে চাঁদপুরে নিয়ে আসার পর ফেন্সিকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে। সে সাথে জবানবন্দি দিতে সম্মত হলে মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
পুলিশ জানায়, মামলার প্রধান আসামি জহির তার স্ত্রী ফেন্সিকে খুনের কথা স্বীকার করেননি। তারপরও পরিকল্পিত হত্যাকান্ডে অংশ নেওয়া রাকিবুল হাসান জবানবন্দিতে বলেছে, ঘটনার সাথে সে ছাড়াও আরও এক যুবক সরাসরি জড়িত ছিল। তারা টাকার বিনিময়ে ফেন্সিকে হত্যা করেছে। ওই যুবকও জুলেখার আরেক চাচাতো ভাই।
ফেন্সিকে হত্যার পরই রাকিব ও তার অপর সহযোগী ঘটনার রাতেই চাঁদপুর থেকে লঞ্চে ঢাকায় ফিরে যায়। চাঁদপুর থেকে লঞ্চ ছাড়ার পর তারা ফেন্সিকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত জিনিসগুলো মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়। জবানবন্দিতে রাকিব আরও স্বীকার করেছে, তারা টাকার বিনিময়ে ভাড়াটে হিসেবে ফেন্সিকে হত্যা করেছে। হত্যাকান্ডের সময় রাকিব নিজে ফেন্সির পা দুটি চেপে ধরে আর অন্যরা মাথায় আঘাত করে।
উল্লেখ্য, গত ৪ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদগঞ্জ উপজেলার গল্লাক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শাহীন সুলতানা ফেন্সির রক্তাক্ত লাশ চাঁদপুর শহরের পাকা মসজিদ এলাকার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পরই পুলিশ ফেন্সির স্বামী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী জুলেখাকে আটক করে। আর চার জনের নাম উল্লেখ করে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ফেন্সির ভাই ফোরকান উদ্দিন খান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ