বাড়িতেই ফাইনাল দেখবেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট কাতারে
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে কাতারে যাচ্ছেন না আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ। তিনি জানান, আজ
বরাবরের মতোই বাঁচা-মরার ম্যাচে জ্বলে ওঠেন মেসি। তার দারুণ গোলে শুরুর স্নায়ু চাপ কাটিয়ে ওঠে আর্জেন্টিনা। চোট পাওয়া আত্মবিশ্বাসে প্রলেপ পড়ে তার দারুণ ফুটবলে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। নাইজেরিয়াকে হারিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে টিকে থাকার স্বপ্ন বুননের প্রথম গোলটি এসেছে আর্জেন্টাইন অধিনায়কের পা থেকে। শেষ দিকে মার্কোস রোহের দুর্দান্ত আরেক গোলে ‘ডি’ গ্রæপের ম্যাচে ২-১ গোলে স্বস্তির জয়ে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করার পর প্রিয় শিষ্য লিওনেল মেসিকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন কোচ হোর্হে সাম্পাওলি।
সংবাদ সম্মেলনে অনেকবারই মেসির প্রসঙ্গ টেনে এনে আর্জেন্টাইন কোচ বলেন, ‘যখন লিও আমাকে জড়িয়ে ধরলো আমি ছিলাম খুব গর্বিত আর খুশি।... সে আমাকে ভালো করে জানে আর আমাদের দুজনের স্বপ্ন একই।’
গত আসরের গোল্ডেন বল জয়ী মেসির এবারের বিশ্বকাপ ভালো কাটছিল না। আইসল্যান্ডের বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে খুঁজেই পাওয়া যায়নি পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলারকে। অবশেষে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ছন্দে ফিরলেন তিনি। সতীর্থরা অধিনায়ককে সাহায্য করায় খুশি সাম্পাওলি, ‘যতবার মেসি খেলে সে দেখায়, সে চমৎকার একজন খেলোয়াড়। অন্যদের চেয়ে সেরা। তবে সতীর্থদের কাছ থেকে তার সাহায্যের দরকার আছে। তাহলেই সে তার সেরাটা খেলতে পারবে, যেমনটা আজকের বেশিরভাগ সময়ে খেলেছে। তার মানবিক দিকটা অসাধারণ। সে কাঁদে, সে কষ্ট পায়। আর্জেন্টিনা যখন জিতে তখন সে খুশি হয়।...অনেকে বলে লিও আর্জেন্টিনার হয়ে খেলাটা উপভোগ করে না। কিন্তু আমি একমত নই।’
তার প্রমাণ ঐদিন রাতেই দিয়ে দিয়েছেন মেসি। স্বস্তির জয় শেষে ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে গিয়ে জানিয়েছেন, চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা, ‘আমরা অনেক ভুগেছি। এটা খুব কঠিন একটি পরিস্থিতি ছিল। আমাদের সবার জন্য এটা অনেক বড় স্বস্তির ও মুক্তির। আমরা ভাবিনি যে, এতটা ভুগবো আমরা। এখন আমরা সামনে তাকিয়ে।’
সামনে বলতে যে নকআউট পর্ব সেটি বলে দিতে হয় না। যেখানে তাদের অপেক্ষায় তারকাসমৃদ্ধ দল ফ্রান্স। গ্রæপ পর্বে আইসল্যান্ডের সঙ্গে ড্রয়ের পর ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-০ গোলে হারে আর্জেন্টিনা। নাইজেরিয়াকে হারিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছে সবশেষ ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জেতা দলটি। আগামী শনিবার ফ্রান্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে খেলবে আর্জেন্টিনা। এই ম্যাচকে ঘিরেই এখন নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে আর্জেন্টিনা। অধিনায়ক মেসির কণ্ঠে শোনা গেল তারই সুর। ভাবনার কারন ফ্রান্সের গতিময় ফুটবল সেটি অকপটে স্বীকার করলেন ৫বারের বর্ষসেরা এই ফুটবলার, ‘আমরা ফ্রান্সের প্রতিটি ম্যাচ দেখেছি। আমরা এবারের বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচ দেখেছি। দক্ষ খেলোয়াড় সমৃদ্ধ খুব ভালো একটি দল ফ্রান্স। ওদের কয়েকজন গতিময় খেলোয়াড় আছে যারা সত্যিই ব্যবধান গড়ে দিতে পারে। আমি জানি, আমাদের কি করতে হবে। কোনো সন্দেহ নেই, এটা খুব কঠিন একটি ম্যাচ হবে।’
প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করে টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট ফ্রান্স। গ্রæপ পর্বের শেষ ম্যাচে ডেনমার্কের সঙ্গে ড্র করে ১৯৯৮ আসরের চ্যাম্পিয়নরা।
ফ্রান্স-আর্জেন্টিনা হেড টু হেড
# এ পর্যন্ত বিশ্বকাপ আসরে দুইবার ফ্রান্সের মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা। আর দুটি ম্যাচেই জিতেছিল আলবিসেলেস্তারা। ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপে ১-০ গোলে এবং ১৯৭৮ সালে ২-১ গোলের ব্যবধানে জিতেছিল আর্জেন্টিনা।
# তবে বিশ্বকাপ আসর ছাড়াও ৯ বার প্রীতি ম্যাচ খেলেছে ফ্রান্স-আর্জেন্টিনা। ৯ ম্যাচে ৪টি জয়, ৩টি ড্র এবং ২ ম্যাচে হেরেছিল আলবিসেলেস্তারা।
# আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে প্রীতি ম্যাচে ২-০ গোলের জয় পেয়েছিল ফ্রান্স। আর সবশেষ ২০০৯ সালের ফেব্রæয়ারিতে প্রীতি ম্যাচে ফরাসিদের মুখোমুখি হয়ে ২-০ গোলে জিতে নিয়েছে আর্জেন্টিনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।