মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
‘ডেমোক্রোটাইজেশন’ নামের জার্নালে প্রকাশিত সা¤প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, গণতন্ত্রের বিপন্নতার মধ্যে বসবাস করছে বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ মানুষ। অর্ধশতাব্দীর তথ্যউপাত্তের ভিত্তিতে ১৮০টি দেশের ওপর ওই গবেষণা সম্পাদিত হয়েছে। গবেষণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে থাকলেও ওই দেশগুলোর মধ্যে ২৪টিতে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ২৬০ কোটি জনসংখ্যার সেই ২৪ দেশের মধ্যে রয়েছে ভারত, তুরস্ক, ব্রাজিল, পোল্যান্ড, রাশিয়া আর যুক্তরাষ্ট্র। গবেষকদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিশ্বজুড়ে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির এই বিপন্নতার মধ্যেও আফ্রিকা অঞ্চলের পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটেছে।
গবেষণাটি সম্পাদিত হয়েছে ‘গণতন্ত্রের নানা দিক’ (ভ্যারাইটিজ অব ডেমোক্রেসিস) নামের তথ্যবিবরণীর আলোকে। বিশ্বের ৩০০০ বিশেষজ্ঞ গত অর্ধশতাব্দীর লাখ লাখ তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ওই তথ্যবিবরণী তৈরি করেছেন। ওই গবেষণায় গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থার বিবেচনায় ১৮০টি দেশকে চারটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো, লিবারেল ডেমোক্রেসি (উদার গণতন্ত্র), ইলেক্টরাল ডেমোক্রেসি (নির্বাচনি গণতন্ত্র), ইলেক্টরাল অটোক্রেসি (নির্বাচনি স্বৈরতন্ত্র) এবং সবশেষ ক্লোজড অটোক্রেসি (রুদ্ধ স্বৈরতন্ত্র)।
যে দেশগুলোতে স্বাধীন-নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ব্যবস্থা কার্যকর, আইনের শাসনসহ মিডিয়া ও বিচারবিভাগের স্বাধীনতা বিদ্যমান সেই দেশগুলোকে উদার গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পর্যায়ভুক্ত করা হয়েছে। গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী বিশ্বের মাত্র ১৪ শতাংশ মানুষ এই শ্রেয়তর গণতান্ত্রিক প্রতিবেশে বসবাস করছে। নির্বাচনি গণতন্ত্র পর্যায়ভুক্ত করা হয়েছে সেই দেশগুলোকে, যেগুলোতে মুক্ত-স্বাধীন ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও শীর্ষ রাষ্ট্রনায়কের ভূমিকায় আইনের শাসন ও মিডিয়া ও বিচারবিভাগের স্বাধীনতার পরিসর সঙ্কুচিত। বিশ্ব জনসংখ্যার মাত্র অর্ধেক মানুষ উদার গণতন্ত্র ও নির্বাচনি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার আওতায় বসবাস করছে। গবেষণায় ইলেক্টরাল অটোক্রেসির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেই দেশগুলোকে যেগুলোতে একমুখী নির্বাচনি ব্যবস্থার অধীনে গণতন্ত্রের লেবাসে স্বৈরতন্ত্র জারি থাকে, নাগরিক স্বাধীনতার পরিসর সঙ্কুচিত হয়, সংবাদমাধ্যমে জারি থাকে ভয়াবহ সেন্সরশিপ।
ওই গবেষণায় দেখা গেছে, গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির অবনতিতে এগিয়ে রয়েছে পশ্চিম ও পূর্ব ইউরোপসহ যুক্তরাষ্ট্রে। ওইসব অঞ্চলে নির্বাহী ক্ষমতার বিপরীতে মানুষের সুরক্ষার পরিসর অনেক বেশি সঙ্কুচিত হয়েছে। গত এক দশকে ২০টি দেশ উদার গণতন্ত্র থেকে নির্বাচনি গণতন্ত্রের পর্যায়ে নেমে এসেছে। এদের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, লিথুনিয়া আর সেøাভাকিয়া রয়েছে। গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, ইসরাঈল, মরিশাস ও দক্ষিণ আাফ্রিকা গণতান্ত্রিক রীতিনীতির ব্যাপক অবনয়ন ঘটেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বিগত দশ বছরে বেশকিছু দেশে অর্থনৈতিকভাবে সম্পদশালীদের হাতে রাজনৈতিক ক্ষমতা নিরঙ্কুশ হয়েছে। ২০০ কোটি মানুষ সেইসব দেশে বাস করছেন। এই দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রও রয়েছে। ইডেনের গুটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও সংশ্লিষ্ট গবেষণাকর্মের প্রধান গবেষক আন্না লুহরম্যান জানিয়েছেন, ‘মিডিয়ার স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের মারাত্মক অবনতি হয়েছে’। তার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এই পরিস্থিতি ‘দুনিয়াজুড়েই নির্বাচনি ব্যবস্থা’র যথার্থতাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। সূত্র : ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।